করগ্রাহক। কিন্তু রাজ্যের যথার্থ অধিকারী প্রজা। দায়িত্ব প্রজারই অধিক। রাজ্য রক্ষার দায়িত্ব প্রজার—বাসিন্দা মাত্রেরই। যদি রাজ্য মধ্যে মানুষ থাকে, হৃদয়ে বল থাকে, স্বদেশ বলিয়া জ্ঞান থাকে, পরাধীন শব্দের যথার্থ অর্থবোধ থাকে, জন্মভূমির মূল্যের পরিমাণ জ্ঞান থাকে, একতা-বন্ধনে আস্থা থাকে, ধর্ম্মবিদ্বেষে মনে মনে পরস্পর বৈরীভার না থাকে, জাতিভেদ-হিংসা, ঈর্ষা এবং ঘৃণার ছায়া না থাকে, অমূল্য সময়ের প্রতি সর্ব্বদা লক্ষ্য থাকে, আলস্যে অবহেলা এবং শৈথিল্যে বিরোধী যদি কেহ থাকে, বিদ্যার চর্চ্চা থাকে, আর সর্ব্বোপরি ঈশ্বরে ভক্তি থাকে, তবে যুগ যুগান্তরে হউক, শতাব্দী পরেই হউক, সহস্রাধিক বর্ষ গতেই হউক, কোন কালেই হউক, অন্ধকারাচ্ছন্ন পরাধীনতা-গগনে স্বাধীনতা-সূর্য্যের পুনরুদয় আশা একবার করিলেও করা যাইতে পারে। কিন্তু দামেস্ক-রাজ্যে সে আশা—আশা-মরীচিকা। দামেস্ক বীরশূন্য! দামেস্ক চিন্তাশীল দেশহিতৈষী মহোদয়গণের অনুগ্রহ হইতে বঞ্চিত। সে উপকরণে গঠিত কোন মস্তক আছে কি না, তাহাতেই বিশেষ সন্দেহও হইবে কি না,— তাহাতেও নানা সন্দেহ।”
“যে দিন রমণী-মুখচন্দ্রিমার সামান্য আভায় ধরণীপতির মস্তক ঘুরিয়াছে, মহীপাল এজিদের মহাশক্তিসম্পন্ন মজ্জা, পরকর-শোভিত মর্দ্দিত কমলদলের মুমুর্ষু অবস্থার ঈষৎ আভায় গলিয়া বিপরীত ভাব ধারণ করিয়াছে, সেই দিনই নিরাশার সঞ্চার হইয়া স্বাধীনতাধনে বঞ্চিত হওয়ার সূত্রপাত ঘটিয়াছে। রাজার আচার, রাজার ব্যবহার,—প্রজার আদর্শ এবং শিক্ষার স্থল। যে রাজচক্ষু কোমলপ্রাণা কামিনীর কমলাক্ষির কোমল তেজ সহ্য করিতে অক্ষম, সে চক্ষু মোহাম্মদ হানিফার সুতীক্ষ্ণ তরবারির জ্বলন্ত তেজ সহ্য করিতে কখনই সক্ষম হইবে না। সে অসীম বলশালী মহাবীরের অস্ত্রাঘাত কি রূপজ মোহে ঘূর্ণিত মস্তক সহ্য করতে পারে?—কখনই নহে। আর আর আশা কি?—কামিনী-কটাক্ষশরে জর্জ্জরিত হৃদয়ের আশ্বাসের জন্য রাজনীতি উপেক্ষা করিয়া অকারণ রণবাদ্য বাজাইতে যে মন্ত্রী মন্ত্রণা দেয়, সে মন্ত্রী গাজী রহ্মানের মন্ত্রণা ভেদ করিয়া কৃতকার্য্য হইতে কোন কালেও