বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y9ሪbዎ বীরবলের হালখাতা প্ৰকাশ করলে দর্শকমণ্ডলীকে শুধু রাগাতেই পারি। দ্বিজেন্দ্রবাবু এই কথাটি মনে য়াখলে লোককে হাসাতে গিয়ে রাগাতেন না । VO) দ্বিজেন্দ্রবাবু বলেছেন যে, নাটকাকারে প্যারডি কোনো ভাষাতেই নেই। যা কোনো দেশে কোনো ভাষাতেই ইতিপূর্বে রচিত হয় নি, তাই স্বষ্টি করতে গিয়ে তিনি একটি অদ্ভুত পদার্থের সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বামিত্রের তপোবল আমাদের কারো নেই ; সুতরাং বিশ্বামিত্রও যখন নূতন সৃষ্টি করতে গিয়ে অকৃতকাৰ্য হয়েছিলেন, তখন আমরা যে হব, এ তো নিশ্চিত । মানুযে মুখ ভ্যাংচালে দর্শকমাত্ৰই হেসে থাকে। কেন যে সে কাজ করে, তার বিচার অনাবশুক ; কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এই যে, ওরূপ মুখভঙ্গি দেখলে মানুষের হাসি পায়। প্যারডি হচ্ছে সাহিত্যে মুখ-ভ্যাংচানো। প্যারডি নিয়ে যে নাটক হয় না, তার কারণ দু ঘণ্টা ধরে লোকে একটানা মুখ ভেংচে যেতে পারে না ; আর যদিও কেউ পারে তো, দর্শকের পক্ষে তা অসহ্য হয়ে ওঠে। হঠাৎ এক মুহুর্তের জন্য দেখা দেয় বলেই, এবং তার কোনো মানেমোদ নেই বলেই, মানুষের মুখ-ভ্যাংচানি দেখে হাসি পায়। সুতরাং ভ্যাংচানির মধ্যে দর্শন বিজ্ঞান সুনীতি সুরুচি প্ৰভৃতি ভীষণ জিনিস সব পুরে দিতে গেলে ব্যাপারটা মানুষের পক্ষে রুচিকর হয় না। ঐ রূপ করাতে ভ্যাংচানির শুধু ধর্মনিষ্টই হয়। শিক্ষাপ্ৰদ ভ্যাংচানির স্বষ্টি করতে গিয়ে দ্বিজেন্দ্রবাবু রসজ্ঞানের পরিচয় দেন নি। যদি প্যারডির মধ্যে কোনোরূপ দৰ্শন থাকে তো সে 丐颈币【1 8 দ্বিজেন্দ্রবাবু তার ‘আনন্দ-বিদায়ে’র ভূমিকায় প্ৰকারান্তরে স্বীকারই করেছেন যে, লোক হাসানো নয়, লোকশিক্ষা দেওয়াই তঁর মনোগত অভিপ্ৰায় ; প্ৰহসন শুধু অছিলামাত্র। বেত হাতে গুরুমশাইগিরি করা, এ যুগের সাহিত্যে কোনো লোকের পক্ষেই শোভা পায় না। “পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কতাম। ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভব।ামি যুগে যুগে ॥’- এ কথা শুধু অবতীর্ণ ভগবানের মুখেই সাজে, সামান্য মানবের মুখে সাজে না । লেখকেরা যদি নিজেদের এক-একটি ক্ষুদ্র অবতারস্বরূপ মনে করেন, কিংবা যদি তঁরা সকলে কেষ্টবিষ্ট হয়ে ওঠেন, তা হলে পৃথিবীর সাধুদেরও পরিত্রাণ হবে না, এবং দুষ্টদের ও শাসন হবে না ; লাভের মধ্যে লেখকেরা পরস্পর শুধু কলমের খোঁচাখুঁচি করবেন। দ্বিজেন্দ্ৰবাবুর ইচ্ছাও যে তাই হয়। এবং তিনি ঐ রূপ খোঁচাখুঁচি