বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

 বৌদ্ধশীলগুলি আলোচনা করিলে, আমরা এইগুলির মধ্যে বুদ্ধদেবের একটি আশ্চর্য্য প্রতিভার পরিচয় পাই। নীতিশাস্ত্রের যে দিকটা মানুষের বাহ্য আচার ব্যবহার নিয়মিত করে, তাঁহার প্রবর্ত্তিত শীলগুলি সে দিকটা উপেক্ষা করে নাই, অথচ নীতিশাস্ত্রের যে দিকটা মানবের মনকে কল্যাণের পথে লইয়া যায়, সেই দিকটার উপর তিনি প্রখর দৃষ্টি রাখিয়াছেন। ইহলোক ও পরলোকের সুখকামনায় যাগ যজ্ঞ বাহ্যক্রিয়া-কলাপকে বুদ্ধদেব সুদৃঢ়কণ্ঠে একান্তনিষ্ফল বলিয়া ঘোষণা করিয়াছেন; ইন্দ্রিয়বিজয় ও চরিত্রসংশোধন করিয়া, দয়াদাক্ষিণামৈত্রীমূলক কল্যাণব্রত-সাধনকেই তিনি শ্রেয়োলাভের একমাত্র পন্থা বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছেন। সুপরিচালিত চিত্ত দ্বারাই আমরা শ্রেয়োলাভের আশা করিতে পারি, বাহ্য অনুষ্ঠানের দ্বারা নহে। এইজন্যই বুদ্ধদেব বলিয়াছেনঃ—

ন তং মাতাপিতা কয়িরা অঞে্‌ঞ বাপি চ ঞাতকা।
সম্মাপণিহিতং চিত্তং সেয্যসো তং ততো করে॥

সম্যক্‌পরিচালিত চিত্ত মানুষের যেরূপ শ্রেয়ঃ করিয়া থাকে, মাতা পিতা কিংবা অন্য কোনো আত্মীয় তেমন পারেন না।

 বৌদ্ধনীতি বিশ্বাসীর আচরণ, কার্য্য ও ভাবনা এই তিনকেই সুখকর ও কল্যাণকর করিয়া তোলে। সাধু বৌদ্ধ কদাচ নিশ্চেষ্ট থাকিবেন না, সমগ্র মানবজাতির কল্যাণসাধনে আপনাকে তিনি নিরন্তর নিযুক্ত রাখিবেন। সাধু বৌদ্ধ আপনার চিত্তকেও কদাচ অনাবৃত রাখিবেন না, মঙ্গল ভাবনা দ্বারা তিনি তাঁহার চিত্তকে আচ্ছাদিত করিয়া রাখিবেন। বুদ্ধ বলেনঃ—

৮৪