পাতা:বেণের মেয়ে - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ তাহাদের কাছে ফুল লইয়া ঠাকুরদেবতাদের দিতে পারি ; কিন্তু এই বৌদ্ধদেশে একটা বড়ই বিপদ দেখিতেছি। এখানকার মালীরা মালঞ্চে শুধু যে ফুলগাছ পোতে, তা নয়, মুরগীও পোষে, আর মুরগীর ডিমণ্ডলাকে ফলের সঙ্গে ফুল বলিয়া বিক্রয় করে। বৌদ্ধদের পুস্পপাত্রে যেমন সারচন্দনের বাটি, রক্তচন্দনের বাটি থাকে, তেমনই মুরগী-ফুলেরও একটি বাটি থাকে । এ ফুল ও অন্য ফুলের সঙ্গে তাহারা ঠাকুরের উপর চড়ায় এবং অনেক সময় ডিম ভাঙ্গিয়া ভিতরকার তরল পদাৰ্থ ঠাকুরের মাথায় ঢালিয়া দেয়। এই সকল নালীদের আমরা অনাচরণীয় বলিয়া মনে করিব। উহাদের সহিত আমাদের কোন সম্পর্কই থাকিবে না। রাঢ়ে ব্ৰাহ্মণদের যে সকল গ্রাম দেওয়া আছে, সেখানে আমরা মালীদের মুরগী পুষিতে দিই না,-মুরগীর ডিম ছুইতেই দিই না । আমরা তাঙ্গাদের জল ব্যবহার করি, তাতাদের ফুল দেবতাদের অৰ্পণ করি । তাহারা বিবাহের টোপর ও ময়ুর তৈয়ার করে ; ফুলের, শোলার ও তালপাতার গহনা তৈয়ার করে ; ব্রাহ্মণীরা ও ব্রাহ্মণকন্যারা সেই গহনা পরিয়া থাকে । সেকালে যে সকল নাপিত বৈদিক-ক্রিয়াকাণ্ডে ক্ষোরী কিরিত, বিবাহের সময় তাহারা নানা কাজ করিত । সে জাতি আর বাঙ্গলায় দেখিতে পাওয়া যায় না। রাঢ়দেশের জঙ্গলে একদল ক্ষৌৱী-করা লোক আছে, তাহাদের দ্বারাই বাঙ্গালী বৌদ্ধের কাজ চালাইয়া লইয়া থাকে। ভিক্ষুরা চেষ্টা করে নিজে নিজে কামাইতে, কিন্তু সব সময়ে পারিয়া উঠে না। এই নাপিতেরা তাহদেরও ক্ষৌরী করিয়া পাকে । কিন্তু এক বিষম সমস্যা আছে —এই নাপিতেরা সকলেই কাকের মাংস খায়। সুতরাং উহাদের স্পর্শ করিতে নাই, জল আচরণ করিতে নাই, উচ্চাদের তাতে কোন কাজ লওয়া ব্ৰাহ্মণের উচিত নয় ; সুতরাং, নাপিত আনাইতে হইয়াছে। এই Y SY