পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ०२८ ] হইয়৷ ধৰ্ম্মরূপ মাতৃক্রোড় আশ্রয় করেন। সে সময়ে বুদ্ধিশক্তি তাদৃশ ফুরিত ও পরিমাজ্জিত না হওয়ায়, তিনি কল্পনাবলে সকল বিষয়ের কাল্পনিক তত্ত্ব উদ্ভাবন করতঃ নিজ দুৰ্ব্বল মনের প্রবোধ দেন। প্রকৃতিজগতে যে স্থলে তিনি কিছু অসাধারণত্ব দেখেন, সেই স্থলেই তিনি প্রথমে প্রাণিত্ব, পরে দানবত্ব, তৎপরে দেবত্ব কল্পনা করেন। বায়ু, মেঘ, আকাশ, পৃথিবী, নক্ষত্র, চন্দ্র, স্বৰ্য্য, অগ্নি, সর্প, বৃক্ষ, মহানদী প্রভৃতি যে সমস্ত প্রাকৃতিক দৃপ্ত র্তাহার দুৰ্ব্বল অশিক্ষিত মনে ভীতি ও বিস্ময় উৎপাদন করে, উহাদের প্রকৃত কারণতত্ত্ব বুঝিতে না পারিয়া স্বীয় অসম্পূর্ণ জ্ঞানানুসারে তিনি উহাদিগকে দানব বা দেবতা জ্ঞান করেন এবং নিজ জীবনের মুখ দুঃখের নিয়ন্ত জ্ঞানে উহাদের প্রীতিবদ্ধনার্থ তিনি কতকগুলি মন্ত্রোচ্চারণ বা যজ্ঞাদির অনুষ্ঠান করেন। এই প্রকারে জড়োপাসনা বা জড় পদার্থের পূজা জগতে প্ৰবৰ্ত্তিত হয় । পরে জ্ঞানানুশীলনের সঙ্গে মানবমন উন্নতির পথে কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইলে, তিনি অসভ্যোচিত জড়োপাসনায় তৃপ্তিবোধ না করিয়া ধৰ্ম্মপথে আরও এক পদ অগ্রসর হন। পূৰ্ব্বে তিনি যে প্রাকৃতিক দৃশ্যপটলে কল্পনাবলে দৈবশক্তির বিকাশ উপলব্ধি করেন, এখন সেই বিশ্বাসে আরও বদ্ধমূল হইয়। শক্তির উগ্র ও সৌম্য ভাব দর্শনে দেবতারও উগ্র ও সৌম্য মূৰ্ত্তি কল্পনা করেন এবং পাদ্য ও অর্ঘ্যদানে তাহার পুজা করিতে শিক্ষা করেন। এ অবস্থায় হৃদয়ের উৎকৃষ্ঠাপকৃষ্ট মনোবৃত্তিগুলি দেববর্গে আরোপিত করিয়া তিনি উহাদের আলোকসামান্ত সাংসারিক লীলা পুরাণাদি গ্রন্থে বর্ণন করেন এবং নিজ মনের উন্নতি সাধনের প্রার্থী হন। এ অবস্থায় তিনি লোকবিশেষের লোকাতিগ গুণ দর্শনে মুগ্ধ হইয়া তাহাঁকে দেবতাঞ্জানে পূজা করেন এবং নিজ জীবনের আদর্শপুরুষ জ্ঞান করেন। এই প্রকারে জগতে পৌত্তলিকতা প্রবর্তিত হয়। তৎপরে কালসহকারে জ্ঞানের অশেষ উন্নতিসাধন হইলে, তাহার বুদ্ধি শক্তি পূর্ণভাবে বিকশিত হয়। তখন তিনি আরাধ্য দেবতাদিগের সদসৎ গুণ দর্শনে পৌত্তলিকতায় বীতশ্রদ্ধ হন। তখন তিনি প্রকৃতি জগতের ঘটনাবলি সন্দর্শনে ভীত ও চমকিত না হইয়া সোৎসাহে উহাদের কারণপরম্পরার অমুসন্ধানে প্রবৃত্ত হন এবং মনোবিজ্ঞান অনুশীলন করিতে করিতে যখন