পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ५२१ ] আর একটা বিষয়ের কিঞ্চিৎ সমালোচনা করা উচিত। প্রাচীনকালে সমগ্র মানবজাতি অসভ্যাবস্থায় পতিত ছিল কি না ? পাশ্চাত্য পণ্ডিতদিগের সিদ্ধাস্ত এই যে, পুরাকালে চীন, ভারতবর্ষ, মিসর, ক্যাণ্ডিয়া, এসিরিয়া, ব্যাবিলন, পারস্ত, গ্রীশ, রোম প্রভৃতি জনপদবর্গ সভ্যতাসোপানে আরূঢ় হয় এবং উহাদের পূৰ্ব্বে মানবজাতি অসভ্যাবস্থায় অবস্থিত ছিল। ঋকবেদাদি জগতের প্রাচীন গ্রন্থপাঠ করিয়া তাহারা সিদ্ধান্ত করেন যে, আর্য্যজাতি যখন তাহদের আদিম নিবাসস্থল হইতে বহির্গত হন, তখন র্তাহারা তৎকালোচিত সভ্যতাসোপানে আরূঢ় থাকেন। এই আর্য্যজাতির পূৰ্ব্বে কোন্‌ জাতি জগতে সভ্যতা লাভ কুরে, তাহার কোন নিদর্শন এখনও ইতিহাস প্রাপ্ত হয় নাই। প্রত্নতত্ত্ব এখনও নিতান্ত অসম্পূর্ণ। অতএব পাশ্চাত্য পণ্ডিতদিগের সিদ্ধান্ত যে অখণ্ডনীয়, তাহাই বা আমরা কি প্রকারে বিশ্বাস করিতে পারি ? বিজ্ঞানজগতে আজ যে মত প্রবল হয়, অৰ্দ্ধশতাব্দী বাদ আবার সেই মতের বিস্তর খণ্ডন হইয়া যায় ; সে স্থলে বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত যে একেবারে অভ্রান্ত, তাহা মনে করা আমাদের উচিত নয়। লক্ষ লক্ষ বৎসর হইতে চলিল, মানবজাতি জগতে আবিভূতি হইয়াছে ; তন্মধ্যে বিগত তিন मश्वं বৎসর কেবল জাতিবিশেষ দেশবিশেষে সভ্যতাসোপানে আরূঢ় হয়, আর এতকাল সমগ্র মানব জাতি অজ্ঞানান্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল, এ কথাই বা আমরা কি প্রকারে বিশ্বাস করিতে পারি ? পাশ্চাত্যপণ্ডিতগণ কেবল পঞ্চ সহস্ৰ বৎসরের ঐতিহাসিক প্রমাণাদি সংগ্রহ করেন; তৎপূৰ্ব্বে পৃথিবীর অবস্থা কিরূপ ছিল, তাহ তাহারা আদে অবগত নন। সে স্থলে তাঁহাদেরই কথা গ্রাহ, আর ধৰ্ম্মশাস্ত্রের কথা অগ্রাহ, তাহাই বা আমরা কি প্রকারে বলিতে পারি? ধৰ্ম্মশাস্ত্র স্পষ্ট নির্দেশ করে, যুগভেদে মানবের শারীরিক ও মানসিক অবনতির সহিত তাহার সভ্যতারও অবনতি ঘটিতেছে। পুৰ্ব্ব পুৰ্ব্ব যুগে দীর্ঘকায় মমুপুত্ৰগণ বা দানব ও দৈত্যগণ তদানীন্তন পৃথিবীতে যে কিরূপ সভ্যতা প্রাপ্ত হন, তাহার কোন স্থায়ী চিহ্ন এখন নাই ; তাহারা যে মহাদেশে আবিভূত হন, তাহ এখন জলধিগর্ভে। মহাভারতে লিখিত আছে, ময়দানব মহারাজ যুধিষ্ঠিরের জন্ত রাজস্বয় যজ্ঞের অত্যস্তৃত সৃভাগৃহ নিৰ্ম্মাণ করেন এবং রামায়ণে লিখিত আছে, রামচন্দ্র বানরদ্বার। সাগর বন্ধন করান।