পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ s२४ ] এ সকল কি শাস্ত্রের অলীক উপকথা, না ইহাদের ভিতর কোন বৈজ্ঞানিক সত্য নিহিত আছে ? ইহাতে কি বুঝা যায় না, পুৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব যুগের দীর্ঘকায় মমুপুত্রগণ স্থপতিবিদ্যায় অসাধারণ নিপুণ ছিলেন ? মিসরদেশের অত্যস্তৃত পিরামিডগুলি যে সকল বৃহৎ বৃহৎ প্রস্তরে নিৰ্ম্মিত, তাহা মিসরদেশে পাওয়া যায় না, তাহ দুরদেশ হইতে আনীত হয় ; অনেকের বিশ্বাস, ইহারাও আধুনিক খৰ্ব্বকায় মানব কর্তৃক রচিত নয়। যাহা হউক, কলিযুগে বিগত পঞ্চসহস্ৰ বৎসর মানবসমাজের কৃত্রিম সভ্যতা যে বৰ্দ্ধনশীল, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই ; কিন্তু ইতিহাস পাঠে সত্য ত্রেতা দ্বাপর যুগের সভ্যতার বিষয় আমরা কিছুই অবগত হই না। মানবের জাতীয় ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব এ বিষয়ে এখন সম্পূর্ণ নীরব । কেহ কেহ বলেন, যে পাশ্চাত্য জগৎ এতকাল ঘোরান্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল ও অল্পদিন মাত্র জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত হইয়াছে, তুত্রত্য পণ্ডিতগণ স্বতঃসিদ্ধান্ত করেন যে, পুরাকালে সমগ্র জগৎ অজ্ঞানান্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল এবং জগতে সভ্যতার ক্রমোন্নতি সংঘটিত হইতেছে ; আর যে প্রাচ্যজগৎ পুরাকালে অত্যুন্নত ছিল ও এখন অবনত হইয়াছে, তত্ৰত্য পণ্ডিতগণ স্বতঃসিদ্ধান্ত করেন, জগতে সভ্যতার ক্রমাবনতি দেখা যায়। যাহা হউক, পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের মত সত্য, না প্রাচ্য পণ্ডিতগণের মত সত্য, তাহা কালে মীমাংসিত হইবে। ইতিপূৰ্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে, যুগভেদে মানবের আধ্যাত্মিকতা হ্রাস পাওয়াতে তাহার আধিভৌতিকত্ব ক্রমশঃ বৰ্দ্ধনশীল হয় এবং সেই সঙ্গে অশেষ পাপতাপ সংসারে প্রবিষ্ট হয়। এই প্রকারে তাহার ধৰ্ম্মভাব ক্রমশঃ অপগত হইয়াছে। ধৰ্ম্মসম্বন্ধে এখন পৃথিবীর যেরূপ অবস্থা, তাহাতে শাস্ত্রোক্ত কলিযুগ বর্ণনের সহিত ইহার অক্ষরে অক্ষরে মিলন দেখা যায়। এখন জনসাধারণ যেরূপ অধৰ্ম্মপরায়ণ, ধূর্ব, শঠ ও মিথ্যাবাদী, তাহাতে স্পষ্ট বোধ হয়, কলিযুগ বৰ্দ্ধনের মঙ্গে অধৰ্ম্ম সংসারে এইরূপ বৰ্দ্ধনশীল। অতএব হিন্দুধৰ্ম্মের, কথা যে আদৌ "ামূলষ্ট নয়, তাহাতে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। তবে বিজ্ঞানোক্ত ধৰ্ম্মের উন্নতি কোথায় ? মানবের জাতীয় ইতিহাস অনুসন্ধান করিলে, ৰুঝিতে পারা যায়, এই কলিযুগে তাহার জ্ঞানশক্তি যেরূপ ক্রমবিকশিত হয়, ধৰ্ম্মবিষয়ক মতামতও সেইরূপ কালসইকারে পরিবর্ধিত ও ক্রমোন্নত হয়। কিন্তু ইহাতে তাহার প্রকৃত ধৰ্ম্মভাব উন্নত হয় নাই বরং ইহা অারও অবনত হইয়াছে।