পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৭৩ ] এখন দেখা যাউক, জীবাত্মার পুনর্জন্মগ্রহণ কতদূর সম্ভব ? এ সংসারে সকলই চক্রাকারে বা মওলাকারে পরিভ্রমণশীল। জীবনের স্থখহুঃখ বল, দিবারাত্রি বল, বড়ঋতু বল, চন্দ্রস্থৰ্য্যগ্রহনক্ষত্ৰগণ বল, সকলই চক্রবৎ পরিভ্ৰমণ করে । দিনের পর রাত্রি, রাত্রির পর পুনরায় দিন আইসে। যে বারিবিন্দু আজ সমুদ্রে মিলিত, কলা স্থৰ্য্যরশ্মি কর্তৃক শোষিত হইয়৷ ইহা আকাশে মেঘরূপে বৰ্ত্তমান হয় ; পুনরায় ইহা সলিলাবস্থায় পতিত হইয়া সমুদ্রে প্রবেশ করে। যে ধুমকেতু আজ আকাশে উদিত, তাহ কিছুকালের জন্য অদৃপ্ত হইয়া পুনরায় আকাশে দেখ দেয় । যে সৌরশক্তি অব্যক্তাবস্থায় অtঞ্জ উদ্ভিজ্জদেহে নিহিত, কল্য উহা জীবদেহে ব্যক্তাবস্থায় প্রকটিত হয় এবং পুনরায় দেহনাশে স্থৰ্য্যরশ্মিতে মিলিত হয় । সেইরূপ যে জীবাত্ম। আজ দেহবদ্ধ হইয়া সংসাবে অবতীর্ণ, দেহুনাশে অল্পাধিক কালের পর পুনরায় তাহা দেহবদ্ধ হইতে বাধ্য হয় । বাসনা দ্বার কৰ্ম্মবন্ধে জড়িত হইয়া জীবাত্মা ইহলোকে বা অন্তান্ত লোকে বিচরণ করে। যে লোকে ইহা যে দেহ ধারণ করে,তাহা ইহার কৰ্ম্মদেহ মাত্র ; কেবল কৰ্ম্মফল ভোগ করিবার জন্তই ইহার সেই দেহ ধারণ । যেমন জপমালাব এক একটা গুটিক স্বত্র দ্বারা আবদ্ধ, সেইরূপ এক জীবাত্মাই ভিন্ন ভিন্ন লোকে বা জন্মে বিভিন্ন আমিত্বজ্ঞানবিশিষ্ট হইলেও কৰ্ম্মবন্ধরূপ এক দুশেছন্ত স্বত্রদ্বারা নিবদ্ধ। এই কৰ্ম্ম বন্ধনবশতঃ ইহার এত জন্মপরিগ্রহ, এত সুখদুঃখলাভ, এত উন্নতি ও অবনতি। ভ্রান্ত খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম যtহাই বলুক না কেন, নির্দিষ্ট সংখ্যক জীবাত্মাই যে কৰ্ম্মফলবশতঃ ইহসংসারে বা অন্তান্ত লোকে পুনঃপুনঃ জন্মপরিগ্রহ করে এবং ইহার কৰ্ম্মফল যে অধ্যাত্মবিজ্ঞানের অবিনাশী সত্য, তদবিষয়ে অণুমাত্র সন্দেহ নাই। கு যেমন মানবগণ দিবাভাগে নানাকৰ্ম্মে ব্যাপৃত ও নিশাগমে বিশ্রামসুখভোগে রত হয়, পুনরায় প্রভাত হইলে তাহারা আবার নানাকৰ্ম্মে ব্যাপৃত হয় ; সেইরূপ যে জীবাত্মা দেহুনিবদ্ধ হইয়া ইহসংসারে প্রাক্তনকৰ্ম্মফল ভোগ করে, সেই জীবাত্মা মৃত্যুর পর অল্পাধিক কাল দেবলোকে বিশ্রামস্থখ ভোগ করতঃ ইহজন্মকৃত কৰ্ম্মফল ভোগের জন্ত পুনরায় জন্মগ্রহণ করিতে বাধ্য হয়। গীতায় শ্ৰীকৃষ্ণ বলেন,— ‘তে তংভুক্ত স্বৰ্গলোকং বিশালং ক্ষীণে পুণ্যে মৰ্ত্তলোকং বিশন্তি ।