পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এইরূপ নানাপ্রকার যুক্তি প্রদর্শন পুৰ্ব্বক বিজ্ঞান স্পষ্ট উপদেশ দেয় যে, যথার্থতঃ তোমার ধৰ্ম্মও নাই, অধৰ্ম্মও নাই, বিবেক একটা কথার কথা মাত্র এবং তোমার আছে কেবল একমাত্র সমাজ । এই সমাজ বশতঃই তোমার বাবতীয় ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মজ্ঞান বা হি তহিতজ্ঞান এবং এই সমাজ বশতঃই তোমার হৃদয়ে তোমার পূজ্যতম বিবেক সমুৎপন্ন ও ফুরিত হইয়াছে। আরও দেখ, এক শিক্ষার তারতম্য বশতঃ বিবেকের কত তারতম্য উপস্থিত হয় ! যে হিন্দু এখন গোহত্যায় মহাপাপ জ্ঞান করেন, তাহারই প্রপিতামহগণ গোমেধ যজ্ঞে গোবধ করিতে শ্লাঘা বোধ করিতেন । যে গ্রীশান এখন ঈশ্বর আরাধনা করিয়া সৰ্ব্বাস্ত;করণে তৃপ্ত হন, তাহারই প্রপিতামহগণ একেশ্বরবাদ প্রচারের জন্ত সক্রেটিসকে হত্যা করিতে কুষ্ঠিত হন নাই। অতএব তথাকথিত ঈশ্বরের প্রতিনিধি বিবেকও পরিবর্তনশীল । এই প্রকারে বিজ্ঞান বিবেক সম্বন্ধে নানা নাস্তিক মত প্রচার করে এবং সেই সঙ্গে উহার গৌরব লাঘব করিতে চেষ্টা পায় । এখন জিজ্ঞাস্ত, বিজ্ঞানের । এ সকল কথা আমাদের শ্রবণীয় কি না ? এই পৰ্য্যন্ত বলা যাইতে পারে, যেমন ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আমাদের প্রকৃতিসিদ্ধ হউক বা বাল্যকালাঞ্জিত সংস্কারবশতঃই হউক, এতদ্ব্যতীত আমাদের সংসার অচল, আমাদের অদ্য কোন প্রকার গতি নাই ; সেইরূপ বিবেক আমাদের প্রকৃতিসিদ্ধ হউক বা বাল্যকালার্জিত সংস্কার হউক, ইহার অনুশাসন ব্যতীত আমাদের সংসার অচল ; ইহাই কেবল একমাত্র আমাদের কর্তব্যাকৰ্ত্তব্যনিরূপক এবং ইহারই আদেশ চিরদিন সমভাবে পালনীয়। ধৰ্ম্মশাস্ত্র বল, বিবেক বল, বৈজ্ঞানিক হিতবাদ বল, পাপপুণ্য বিচারে বা কৰ্ত্তব্যাকর্তব্যনিরূপণে ইহার আপাত দর্শনে বিভিন্ন মার্গ হইলেও, বস্তুতঃ ইহার একই মার্গ। ধৰ্ম্মশাস্ত্র ও বিবেকের মুলে বিজ্ঞানসন্মত সামাজিক মঙ্গল'মঙ্গল পূর্ণভাবে নিহিত আছে। প্রভেদের মধ্যে এই যে,বিবেক ব্যক্তিগত কৰ্ত্তব্যকৰ্ত্তব্যনিরূপক, মোর ধৰ্ম্মশাস্ত্র জাতিগত ও ব্যক্তিগত কৰ্ত্তব্যাকৰ্ত্তব্যনির পক। ষে স্থলে বিবেক ব্যক্তিবিশেষকে হিতাহিত বিচারে চালিত করে, সে স্থলে ধৰ্ম্মশাস্ত্র সমাজস্থ যাবতীয় লোকের বিবেককে এক ছাচে ঢালিত বসুর এবং সকলকে হিতাহিত বিচারে সমভাবে চালিত করে। যেমন সমাজের প্রধান