পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায়। মায়াবাদ । অধ্যায়ুবিজ্ঞানের এই শ্রেষ্ঠ মতটি হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈনধৰ্ম্ম কর্তৃক জগতে প্রচারিত। সেদিনকার খ্ৰীষ্ট ও মুসলমানধৰ্ম্ম এ মতটা হৃদয়ঙ্গম করিতে অক্ষম। গ্ৰীশদেশে মহাত্মা প্লেটো ও নিজপুস্তকে এই শ্রেষ্ঠ মত প্রচার করেন । আধুনিক জড়বাদী, স্থলদশী বিজ্ঞান এই মত আদৌ গ্রাহ্য করে না ; কারণ ইহার মতে তোমার অস্তিত্বের ন্তায় এই প্রত্যক্ষ পরিদৃশ্যমান জগতের অস্তিত্ব সকলের নিকট সত্য, মহাসত্য এবং কদাচ মিথ্যাজ্ঞানসন্থত হইতে পারে না । বেদান্তের মায়াবাদের প্রকৃত তাৎপৰ্য্য অতীব দুরূহ। অনেক পণ্ডিত মায়াবাদ ব্যাখ্যান কালে দৃষ্টান্ত দেন, যেমন অন্ধকারে রজুদর্শনে সর্পভ্রম হয়, তৎপরে রজ্জ্বজ্ঞান হইলে অলীক সর্পজ্ঞান মন হইতে দূরীভূত হয়, সেইরূপ ংসারে পরমার্থ জ্ঞান হইলে সংসারের যাবতীয় মায়াঙ্কান মন হইতে দূরীভূত হয় ; তখন সংসারের কোন ভেদাভেদজ্ঞান থাকে না এবং সকলই ব্ৰহ্মময় বলিয়। বোধ হয়। র্তাহীদের মতে, ইহাই মায়াবাদের প্রকৃত তাৎপর্য্য । কিন্তু জৈন ও বৌদ্ধপণ্ডিতগণ ইহার যেরূপ ব্যাখ্যা করেন, তাহাই অধিক যুক্তিসঙ্গত। যাহা হউক, এস্থলে মায়াবাদের প্রকৃত তত্ত্ব উদঘাটন করা কর্তব্য । শাস্ত্রে মায়াশবা দুই প্রকার অর্থে ব্যবহৃত। ইহার প্রথম অর্থে অতিরিক্ত মোহ বুঝায় ; যেমন দেহ, পুত্র, কলাত্রাদি সংসারের ক্ষণভঙ্গুর বিষয়ে মানব-মন স্বভাবতঃ মায়ায় মুগ্ধ। এ মায়াবন্ধন ছেদন করা ইহার পক্ষে অনেক সময় দুঃসাধ্য বটে, কিন্তু সংসারে বৈরাগ্য তপস্থিত হইলে, ইহা অপেক্ষাকৃত সহজ সেইরূপ সংসারের যাবতীয় অনিত্য মিথ্যাজ্ঞান লাভ করতঃ পরব্রহ্মকে ভুলিয়৷ গিয়া সকল বিষয়ে আমার আমার যে মিথ্যাজ্ঞান মনে উদয় হয়, তাহাও ইহার মায়াঙ্গান। শাস্ত্রোক্ত পরমহংসমার্গ অবলম্বন করিলে এ মায়াজ্ঞান দূরীভূত হইতে পারে। -