পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬১ ] নাই অন্তও নাই, ইহ সর্বময়। পৃথিবী যেমন গোলাকার, ইহার প্রারম্ভও নাই, অন্তও নাই ; ব্ৰহ্মাণ্ডও সেইরূপ গোলাকার, ইহারও প্রারম্ভ নাই, অন্তও নাই । স্বষ্টিসম্বন্ধে অধিকাংশ লোকের মনে একটা কুসংস্কার বদ্ধমূল। তাহারা ভাবেন, স্বষ্টির পূৰ্ব্বে কিছুই থাকে না। স্বষ্টির প্রাক্কালে ঈশ্বর ভৌতিক পদার্থগুলি ও ভৌতিক শক্তি গুলি স্বজন করেন এবং কতকগুলি প্রাকৃতিক নিয়ম স্থাপন করেন ; ইহাতেই বিশ্ব প্রপঞ্চ স্বল্প ও উদ্ভূত। সেইরূপ বোধ হয় প্রলয়ের প্রারম্ভে ভৌতিক পদার্থ গুলি ও ভৌতিক শক্তিগুলি নষ্ট হইবে এবং এক আধার ব্যতীত আর কিছুই বিদ্যমান থাকিবে না । বস্তুতঃ স্বষ্টিপ্রক্রিয়াট এমন সহজ নয় ; আর চিরদিনই স্থষ্টিস্থিতিসংহার সমভাবে চালিত। যে ক্রমৰিবৰ্ত্তন দ্বারা এ জগৎ স্বঃ, পরিবর্তিত ও রূপাস্তরিত, সে বিবর্তনের বিরাম নাই, বিচ্ছেদ নাই ; উহা চিরদিন সমভাবে চালিত। এখন যে সকল ভৌতিক পদার্থ ও ভৌতিক শক্তি দেখা যায়, উহারাও মন্বন্তরে মন্বন্তরে পরিবৰ্ত্তিত। এজন্ত স্বষ্টিপ্রক্রিয়া চিরদিন আমাদের নিকট এত রহস্যময় । অধ্যাত্মবিজ্ঞানের মতে ব্ৰহ্মই বিশ্বের আদি ও অন্ত। তিনিই ইহার রচয়িত, তিনিই ইহার - উপাদানকারণ এবং তিনিই ইহার আধার। যে চিৎশক্তিযোগে বিশ্ব রচিত, ব্ৰহ্মই সেই চিৎশক্তির সমষ্টি। যে সকল উপাদানযোগে বিশ্ব রচিত, ব্ৰহ্মই সেই সকল উপাদানের সমষ্টি। যে অনন্ত, অসীম আধারে বা স্থলে বিশ্ব রচিত, ব্ৰহ্মই সেই আধারের সমষ্টি । যিনি মায়া যোগে বৰ্দ্ধিত হইয়া বিশ্বপ্রপঞ্চে পরিণত, তিনিই ব্রহ্ম। “একোহং বহু স্যাম” তিনি অগ্ৰে এক থাকেন, পরে বহু হন । শাস্ত্রকারের উল্লেখ করেন, যেমন উর্ণনাভ স্বীয় জাল স্বাভ্যস্তর হইতে নিঃসরণ করে এবং পুনরায় উহাকে স্বাভ্যন্তরে সঙ্কুচিত করে ; সেই রূপ পরব্রহ্ম স্থষ্টিকালে বিশ্ব প্রপঞ্চকে স্বাভ্যন্তর হইতে প্রকটত করেন এবং প্রলয়কালে উহাকে স্বাভ্যন্তরে লীন করিয়া লন। এস্থলে উর্ণনাভ ও তদীয় জালে পার্থক্য আছে, কিন্তু বিশ্ব ও ব্রহ্মে কিছুমাত্র পার্থক্য নাই ; একই ব্ৰহ্ম বৰ্দ্ধিত হইয়া বিশ্বে পরিণত । ব্ৰহ্মই আবার বিশ্বের অন্ত। প্রলয়কালে বিশ্বরচয়িতা সেই ব্রহ্মের চিৎশক্তি