পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম বুদ্ধদেব সে কথার কি জবাব দিলেন, আমরা পরে তাহা বিবেচনা করিব । বুদ্ধদেবের মৃত্যুর অন্ততঃ পাঁচ ছয় শত বৎসরের পর, কনিষ্ক রাজার গুরু অশ্বঘোষ সাধারণ লোকের মধ্যে ধৰ্ম্ম প্রচার করিরার জন্য একখানি কাব্য রচনা করেন। তিনি নিজেই বলিয়াছেন, যেমন তিক্ত ঔষধ খাওয়াইবার জন্য কবিরাজেরা মধু দিয়া মাড়িয়া খাওয়ায়, সেইরূপ আমি এই কঠিন বৌদ্ধধৰ্ম্মের মতগুলি কাব্যের আকারে লিখিয়া লোকের মধ্যে প্রচার করিতেছি। তিনি নিৰ্বাণ সম্বন্ধে যাহা বলেন, সেটা বুদ্ধের কথার রিপোর্ট নহে, তাহার নিজেরই কথা । তিনি বৌদ্ধধৰ্ম্মের একজন প্ৰধান প্রচারক, প্ৰধান গুরু এবং প্ৰধান কৰ্ত্তা ছিলেন । তাহার কথা আমাদের মন দিয়া শুনা উচিত। তিনি বলিয়াছেন :- দীপো যথা নিবৃতিমন্ত্যুপেতো নৈবাবনিং গচ্ছতি নান্তরিক্ষম। দিশং ন কাঞ্চিৎ বিদিশং ন কাঞ্চিৎ স্নেহক্ষয়াৎ কেবলমেতি শান্তিম। এবং কৃতী নিবৃতিমন্ত্যুপেতো নৈবাবনিং গচ্ছতি নান্তরিক্ষম। দিশং ন কাঞ্চিদ্বিদিশং ন কাঞ্চিৎ ক্লেশক্ষয়াৎ কেবলমেতি শান্তিম। “প্ৰদীপ যেমন নিৰ্বাণ হওয়ার পর পৃথিবীতে যায় না, আকাশেও যায় না, কোন দিগ বিদিকেও যায় না ; তৈলেরও শেষ, প্ৰদীপটীরও শেষ ; সাধক ও তেমনই ভাবে, নিৰ্ব্বাণ হওয়ার পর, পৃথিবীতেও যান না, আকাশেও যান না, কোন দিগ বিদিকেও যান না । তঁহার সকল ক্লেশ ফুরাইয়া গেল। র্তাহারও সব ফুরাইয়া গেল, সব শান্ত হইল।” এখানে কথা হইতেছে। “উপৈতি শান্তিম '-'সব শেষ হইয়া গেল” --ইহার অর্থ কি নিহিল ? ইহারু অর্থ কি আত্মার বিনাশ ? অস্তিত্বের লোপ ? অশ্বঘোষিও নির্বাণের পর আর কিছু থাকিল কি না, কিছুই বলিলেন না। এই দুইটি কবিতার পরই তিনি অন্য কথা পাড়িলেন