পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
তৃতীয় উপদেশ।

 মনুষ্য অপূর্ণ বস্তু —অতি ক্ষুদ্র জীব। মনুষ্য এক বারেই নিষ্পাপ হইবে, এমন কখনই সম্ভব হয় না। ঈশ্বরই এক মাত্র শুদ্ধ অপাপবিদ্ধ। কিন্তু ঈশ্বর মনুষ্যকে যে প্রকার বল দিয়াছেন, যে প্রকার কর্ত্তৃত্ব ভার দিয়াছেন, তাহাতে তাহার কিছুরই অনির্ব্বৃতি নাই। যাহাতে ধর্ম্মের পথে মনুষ্য উন্নতমস্তক থাকিতে পারে, তিনি তাহাকে এমত অতুল শক্তি দিয়াছেন। যাহাতে সে আপন প্রবৃত্তি ও অবস্থার সহিত সংগ্রাম করিয়া পুণ্যপদবীতে আরোহণ করিতে পারে, তিনি তাহাকে এমত অতুল শক্তি প্রদান করিয়াছেন। যাহাতে পশুভাব মনুষ্যের উপরে প্রভুত্ব না পায়—যাহাতে তাহার মহদ্ভাব সকল উন্নত ও স্ফূর্ত্তি যুক্ত হয়, তিনি এ প্রকার নানা উপায় বিধান করিয়াছেন। আবার তিনি মধুস্বরূপ ধর্ম্ম দিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, তিনি আপনাকে আমাদের নিকটে প্রকাশ রাখিয়া আমাদের আত্মাকে সহস্রগুণ বলে সবল করিয়াছেন। পাপ হইতে মুক্ত হইলে ঈশ্বরের পবিত্র সহবাস উপার্জন করা যায়, আবার ঈশ্বরের সহবাস লাভ করিলে আত্মা পবিত্র হয় এবং পাপের আসক্তিও তেমনি ক্ষীণ হইতে থাকে। পাপ। হইতে মুক্ত হওয়া প্রথমে আমাদের যত্নাধীন, পরে আমরা ঈশ্বরের প্রসাদ ও আশ্রয় পাইলে পাপ আরো দূরে পলায়ন করে। কিন্তু একে আমরা দুর্ব্বল, তাহাতে আবার অন্তরের কত শত্রু এবং বাহিরের কত শত্রু আমাদিগকে আক্রমণ করিতেছে, কায়মনোবাক্যে চেষ্টা ব্যতীত মনের পবিত্রতা ও আত্মার পবিত্রতা সম্পাদন করিতে কখনই