পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের বাঙালী У о о তারপর, ঠিক একশত বৎসর শেষ হবার সময়ে দিবাকান্তি এক রাজকুমার শিকারের উদ্দেশ্যে সেই নিবিড় জঙ্গলে প্ৰবেশ করলেন। বনের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে তিনি সেই ভুলে-যাওয়া জীর্ণ প্রাসাদ দেখতে পেলেন। কৌতুহলপরবশ হ’য়ে তিনি প্রাসাদের ভিতর প্রবেশ করলেন। তিনি য’ দেখলেন, তাতে বিস্ময়ের তার অবধি রইল না । মানুষ, জীব, জন্তু সকলেই নিজ নিজ কাজ করতে করতে ঘূমিয়ে পড়েছে। প্ৰাণের স্পন্দন নাই, অথচ কেউ তারা মরেনি। বিস্ময়বিমুগ্ধ রাজকুমার কক্ষ থেকে কক্ষান্তরে যেতে যেতে শেষে রাজকুমারীর শয়নকক্ষে প্ৰবেশ করলেন । এ কি ? এমন রূপ তো কোন রক্ত-মাংসবিশিষ্ট জীবের কখনও হয় না ! এ কি কোন মায়ার খেলা, না কোন পরী ছলনা ক’রে শুয়ে আছেন ? রাজকুমারের মনে প্রেমের জোয়ার নামল। আত্মহারা হ’য়ে তিনি রাজকুমারীকে সোণার কাঠির দ্বারা স্পর্শ করলেন। নিমেষের মধ্যে রাজকুমারীর ঘুম ভেঙ্গে গেল। সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত রাজপুরী জেগে উঠল। রাজা চাকর-বাকিরদের ডাক দিলেন। রাণী রাজকুমারীর সন্ধানে বের হলেন । দাসী বাসন মাজা সুরু ক’রে দিল । বাবুচ্চি খানা প্ৰস্তুত করবার কাজে মেতে গেল । ছোকরা চাকরিটা কুকুরকে তাড়া করতে লাগল। বিড়াল ইঁদুরের পেছনে দৌড়তে লাগল। ইতুির পালাতে লাগল। জীবনের কোলাহলে রাজপুরী আবার মুখর হ’য়ে উঠল। ভারতবর্ষের অবস্থা ও সেই ঘুমন্ত রাজকুমারীরই মত। দুষ্ট কৃটিচক্ৰী কাল পরীর মোহরূপ অভিশাপে ভারত-রাজকুমারী আজ গভীর নিদ্রায় মগ্ন । তবে দিব্য প্ৰেমময়ী পরী বর দিয়েছেন, রাজকুমারী মরবেন না, ভাগ্যনির্দিষ্ট রাজকুমারের সচেতন সোণার কাঠির ছোয়ায় আবার জেগে৷ উঠবেন। সেদিন সঙ্গে সঙ্গে এই বিশাল পুরীর সকলেই জেগে উঠবে। জীবনের কোলাহলে ভারতের আকাশবাতাস পুনরায় মুখরিত হ’বে।