পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অপেরা গীতাভিনয়-যাত্ৰা রচনা করিয়া সর্বাপেক্ষা খ্যাতিলাভ করিয়াছিলেন মতিলাল রায়। মতিলালের রচনার মধ্যে পাঁচালি ও কথকতার মিশ্রণ দেখা গিয়াছিল। অবশ্য তাঁহার রচনায় প্রাঞ্জলতা ও সাবলীলতার অভাব ছিল। তাঁহার গদ্যরচনা কৃত্রিম ও আড়ষ্ট। তঁাহার রচিত পালাগুলির মধ্যে সীতাহরণ’, ‘ভরতাগমন’, ‘দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ’, ‘পাণ্ডব নির্বাসন’, ‘নিমাইসন্ন্যাস’, ‘ভীষ্মের শরশয্যা’, ‘রামরাজা’, ‘কর্ণবধ’, ‘ব্রজলীলা' প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য। মতিলালের পরে তাহার দল চালাইয়াছিলেন তাঁহার পুত্র ধর্মদাস। ইনিও কয়েকখানি গীতাভিনয় রচনা করিয়াছিলেন, যথা, কবচ-সংহার’, ‘শ্রীকৃষ্ণের গুরুদক্ষিণা প্রভৃতি। পরবর্তী গীতাভিনয় রচয়িতাদের মধ্যে দ্বারকানাথ। সরকার, ঈশ্বরচন্দ্র সরকার, শশিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রজনাথ দে প্রভৃতির নাম করা যাইতে পারে। গীতাভিনয় রচনায় অন্যতম পথিকৃৎ হইলেন প্রসিদ্ধ। নাট্যকার মনােমমাহন বসু। মনােমােহনের নাটকগুলি মঞ্চে অভিনীত নাটক এবং গীতাভিনয় উভয় রূপেই সার্থক হইয়া উঠিয়াছিল। তিনি তাহার অনেকগুলি নাটককে অতিরিক্ত সংগীত সংযােজনা করিয়া গীতাভিনয়ে রূপান্তরিত করিয়াছিলেন। দৃষ্টান্তস্বরূপ ‘হরিশ্চন্দ্র’, ‘পার্থপরাজয়’, ‘যদুবংশ ধ্বংস’, ‘রাসলীলা’ প্রভৃতির নাম করা যাইতে পারে। পরবর্তী কালে গ্র্যাণ্ড অপেরা, অপেরা কমিক, অপেরা বুথ প্রভৃতির অনুকরণে নানা শ্রেণীর গীতিনাট্য রচিত হইয়াছিল। নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, রামরতন সান্যাল প্রভৃতি এই ধরনের গীতিনাট্য প্রবর্তন করিয়াছিলেন। পরে অতুলকৃষ্ণ মিত্র, রাধানাথ মিত্র, কুঞ্জবিহারী বসু, বৈকুণ্ঠনাথ বসু প্রভৃতি অনেকেই গীতিনাট্য রচনা করিয়াছিলেন। প্রসিদ্ধ নাট্যকারদের মধ্যে রাজকৃষ্ণ রায়ের পৌরাণিক বিষয় অবলম্বনে রচিত নৃত্যবহুল নাটকগুলি অপেরা জাতীয় রচনার উৎকৃষ্ট নিদর্শনস্বরূপ উল্লেখ করা যাইতে পারে। | আধুনিক কালে অপেরা নাটক প্রায় বিলুপ্ত হইয়া আসিয়াছে। আধুনিক যাত্রাদলগুলি অনেক ক্ষেত্রে অপেরা নামটি গ্রহণ করে বটে, কিন্তু যাত্রার মধ্যেও সংগীতপ্রাধান্য বর্তমানে অনেক কমিয়া আসিয়াছে এবং যাত্রাভিনয়ও। সংলাপ-প্রধান ও নাটকীয় ঘাত-প্রতিঘাতপূর্ণ হইয়া পড়িয়াছে।

ঐ ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বঙ্গীয় নাট্যশালার ইতিহাস, কলিকাতা, ১৩৫৩ বঙ্গাব্দ ; সুকুমার সেন, বাঙ্গালা

________________

অবতার সাহিত্যের ইতিহাস, ২য় খণ্ড, কলিকাতা, ১৩৫৬ বঙ্গাব্দ। অজিতকুমার ঘােষ অল্পয্য দীক্ষিত ( ১৫২০-১৫৯২ খ্ৰী ) দাক্ষিণাত্যের ভেলােরের নায়কগণের, বিশেষ করিয়া নায়ক চিন্ন বােন্মর আশ্রিত নানাশাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন প্রসিদ্ধ পণ্ডিত এবং শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা। ইনি বেঙ্কটনাথ বা বেদান্ত-দেশিক রচিত প্রসিদ্ধ ‘যাদবাভদয়’ কাব্যের টীকা রচনা করিয়াছিলেন। | ‘চিত্রমীমাংসা এবং লক্ষণাবলী’ নামক সাহিত্যালােচনা বিষয়ক দুইখানি পুস্তক তাহার রচিত। কবি জয়দেবের ‘চন্দ্রালােক’ কাব্যের ব্যাখ্যান হিসাবে ‘কুবলয়ানন্দ’ নামে তাহার গ্রন্থখানি বিস্তারিত ব্যাখ্যান বা টীকা হইলেও ভাষার গুণপনায় ইহা অলংকারশাস্ত্রের স্বতন্ত্র গ্রন্থের পর্যায়ে উন্নীত হইয়াছে। ইহা ব্যতীত তাহার রচিত অনেক দার্শনিক ও ভক্তিমূলক গ্রন্থ আছে। u K. A. Nilakanta Sastri, A History of South India, London, 1958 ; Sushil Kumar De, History of Sanskrit Poetics, Calcutta, 1960. অপ্পর তামিল দেশবাসী প্রসিদ্ধ শৈব সাধক ও শৈব নায়নার সম্প্রদায়ের অন্যতম পূজ্য গুরু। (নায়নার দ্র) খ্ৰীষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষার্ধে ইনি বর্তমান ছিলেন। এই সময়ে দাক্ষিণাত্যে জৈন ধর্মের বিশেষ প্রভাব ছিল। অপ্পর | তাহা খর্ব করিয়া শৈব ধর্মের বিস্তারকার্যে বিশেষ সহায়তা করেন। 5 K. A. Nilakanta Sastri, A History of South India, London, 1958.

অবচেতন মনঃসমীক্ষা দ্র অবজারভেটারি মানমন্দির দ্র অবতার পৃথিবীর পাপভার অবতারণ বা অপহরণের জন্য দেব-দেবীরা মাঝে মাঝে বিভিন্ন মূর্তিতে বা অবতাররূপে অবতীর্ণ হন। শ্রীমদ্ভগবদগীতা ( ৪৭-৮) ও দেবী| মাহাত্মে (১১৫৪-৫ ) বিষ্ণু ও জগজ্জননীর এইরূপ আবির্ভাবের প্রতিশ্রুতি আছে। অবতার দ্বিবিধ—অংশাবতার ও পূর্ণাবতার। বিষ্ণুর অবতারই বেশি পরিচিত। নানা গ্রন্থে অবতারের নানা সংখ্যা দেখিতে পাওয়া যায়। মহাভারতের শান্তিপর্বে ( ৩৩৯৭২-১০৪)
৭৬