পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অবিদ্যা | অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি স্বাতন্ত্র্যবাদ বিদ্বজ্জনের নানা লেখায় সুস্পষ্ট রূপ পরিগ্রহ করিয়াছিল। একমাত্র অর্থশাস্ত্রেই এই বিশিষ্ট ভাবধারার কোনও পূর্ণাঙ্গ আলােচনা তখনও সম্ভবপর হয় নাই। এই কাজ সুসম্পন্ন করিলেন অ্যাডাম স্মিথ। তাহার মতে ব্যক্তিগত প্রয়াস ধননাৎপাদনের সর্বোত্তম পন্থা। গােড়ার দিকে শস্য-আইনে লাভবান জমিদারশ্রেণী এই মতের তীব্র বিরােধিতা করিয়াছিল এবং ১৮৩২ খ্রীষ্টাব্দের সংস্কার আইনে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর রাজনৈতিক প্রতিপত্তিলাভের পূর্ব পর্যন্ত শস্যআইনকে নাকচ করা প্রায় অসম্ভব হইয়াই দাড়াইয়াছিল। অবশেষে শিল্পবিপ্লবের সংঘাতে স্মিথের মতামত সুপ্রতিষ্ঠা লাভ করিতে সমর্থ হইল। | অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে পর পর কয়েকটি যান্ত্রিক আবিষ্কারের ফলে ইংল্যাণ্ডের শিল্পক্ষেত্রে এক বিরাট বিপ্লবের সৃষ্টি হইল। পরবর্তী শতাব্দীর সমাজ সম্পকিত উদার মনােভাব এবং স্বাধীন বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার সহজ বিকাশ। ব্যতীত এই সমস্ত যুগান্তকারী আবিষ্কার সম্ভবপর হইত না। স্বাধীন চিন্তাধারার উন্মেষ এবং স্বচ্ছন্দ আর্থিক ক্রিয়াকলাপের গুণাগুণ সম্পর্কে মানুষের মনে তখন আর কোনও দ্বিধাবােধের স্থান ছিল না। বস্তুতঃপক্ষে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে স্বাতন্ত্র্যবাদ এতটা শক্তিশালী মতবাদে পরিণত হইয়াছে যে, সর্ব প্রকারের রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপই নিন্দনীয় বলিয়া গন্য হইয়াছে। u G. M. Trevelyan, English Social History; H. M. Robertson, Aspects of the Rise of Economic Individualism ; H. Levy, Economic Liberalism; R. H. Tawney, Religion and the Rise of Capitalism. প্রবুদ্ধনাথ রায়। অবিদ্যা বেদান্ত দ্র অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য (১৮৮২-১৯৬২ খ্র) চব্বিশ পরগনা। জেলার আড়বালিয়া গ্রামের এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে ৫ এপ্রিল ১৮৮২ খ্রীষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। স্বগ্রামে শিক্ষালাভ করিয়া তিনি ১৯০১ খ্ৰীষ্টাব্দে এন্টান্স পরীক্ষায়। উত্তীর্ণ হন এবং উচ্চশিক্ষার জন্য কলিকাতায় আসেন।

| ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটান ইষ্টিটিউশনে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ ) ফাস্ট আর্টস্ -এর ছাত্র থাকার সময়েই তিনি বিখ্যাত বিপ্লববাদী যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবাধীনে আসেন (১৯০২) এবং বিপ্লবী রাজনৈতিক জীবন বাছিয়া লন।

________________

১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বঙ্গভঙ্গের পর অবিনাশ চন্দ্র অরবিন্দ ঘােষের সহকর্মী হিসাবে বাংলার রাজনীতিক্ষেত্রে ক্রমশঃ আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯০৬ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসে বিপ্লবপন্থী যুগান্তর পত্রিকা প্রকাশিত হয়। অবিনাশচন্দ্র প্রথমাবধি যুগান্তরের ম্যানেজার বা ব্যবস্থাপক হিসাবে কাজ করিতে থাকেন, সম্পাদক হন ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত। এই সময়ে তিনি মুক্তি কোন্ পথে’, ‘বর্তমান রণনীতি’ প্রভৃতি পুস্তিকা ও গ্রন্থ প্রকাশ করিয়া দেশের যুবমনে রাজনৈতিক চেতনাসঞ্চারে সাহায্য করেন। ১৯০৮ খ্রষ্টাব্দে মুরারিপুকুরের বাগানবাড়িতে পুলিশ বােমার কারখানা আবিষ্কার করে ; অতঃপর ঐ বৎসরের ২ মে গ্রে স্ত্রীটের নবশক্তি কার্যালয় হইতে অবিনাশচন্দ্র অরবিন্দের সহিত একই সঙ্গে গ্রেফতার হন। আলিপুর যড়যন্ত্র মামলায় অরবিন্দ, বারীন্দ্রনাথ, উল্লাসকর, উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতির সহিত অবিনাশচন্দ্রও অভিযুক্ত হন। ১৯০৯ খ্রীষ্টাব্দের মে মাসে আলিপুর জেলা জজ তাহাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরে হাইকোর্ট তাহার দণ্ডাদেশ হ্রাস করিয়া সাত বৎসরের জন্য দ্বীপান্তরের আদেশ দেন। ১৯০৯ খ্ৰীষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে অবিনাশচন্দ্র অন্যান্য বিপ্লবীদের সহিত আন্দামানে প্রেরিত হন। ছয় বৎসর পরে ভারতভূমিতে আনীত হইলে ও মাদ্রাজ বােম্বাই ও মন্টগমারি ( পাঞ্জাব ) জেলে তাহাকে আবদ্ধ রাখা হয়। অবশেষে ১৯১৫ খ্রীষ্টাব্দের মে মাসে তিনি কারামুক্ত হন। ১৯২০ খ্রীষ্টাব্দে অবিনাশচন্দ্র নারায়ণ’ পত্রিকা পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন। এই সময়ে তিনি বারীন্দ্রনাথ ঘােষের ‘বিজলী’ ও ‘আত্মশক্তি' পত্রিকার সহিতও সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯২৪ হইতে ১৯৪১ খ্ৰীষ্টাব্দ পর্যন্ত অবিনাশচন্দ্র Calcutta Municipal jazette পত্রিকার দপ্তরে কাজ করেন। ১৯৬২ খ্রীষ্টাব্দের ১০ মে কলিকাতার উপকণ্ঠে সি থিতে নিজভবনে তাহার মৃত্যু হয়। নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়

অব্দ বৎসর ; কালবোধার্থে বর্ষনিৰ্ণায়ক সংখ্যা। যেমন শকাব্দ বঙ্গাব্দ খ্রীষ্টাব্দ ইত্যাদি। দীর্ঘ কালান্তরের দুইটি ঘটনার অন্তর্গত সময় নির্ণয়ে বা ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের পারম্পর্য এবং উহাদের সঠিক কাল নিরূপণের উদ্দেশ্যেই অব্দ গণনার প্রচলন হইয়াছে। যে কোনও ক্রমবর্ধমান অখণ্ডিত অব্দ দ্বারাই এই প্রয়ােজন সিদ্ধ হইতে পারে। মানবজাতির সভ্যতার উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে কালজ্ঞানের | বিকাশ হয়, তখন হইতেই কোনও না কোনও প্রকার
৮৮