পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
অপরাস্ত
অপেরা

সাহায্যে আসামীর বিরুদ্ধে অকাট্য প্রমাণ সংগ্রহ করা যায়। বর্তমান কালের মত বিজ্ঞানসম্মতভাবে না হইলেও অপরাধ-বিজ্ঞানের এই বিভাগটি সম্বন্ধে প্রাচীন ভারতেও চর্চা হইয়াছিল।

অপরাক্ত ভারতের একটি প্রাচীন জাতি ও জনপদের নাম। বর্তমানে কোঙ্কন নামে পরিচিত দাক্ষিণাত্যের পশ্চিমভাগে সহাদ্রি ও সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত প্রদেশই প্রধানতঃ অপরাস্ত বলিয়া গৃহীত হয়। পুরাণ, রঘুবংশ, বৌদ্ধগ্রন্থ ও কৌটিলীয় অর্থশাস্ত্র প্রভৃতিতে ইহার উল্লেখ আছে। সম্ভবতঃ ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তেও অপরান্ত নামে আর একটি দেশ ছিল।

অপাের্ক কোঙ্কন দেশের অধিপতি শিলাহাররাজ প্রথম অপরাদিত্য অপরার্ক নামেও পরিচিত ছিলেন। ইনি খ্রষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে প্রাদুভূত হইয়াছিলেন। যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতির টীকা রচনা করিয়া ইনি খ্যাত হন। ইহা বিজ্ঞানেশ্বরত মিতাক্ষরার ন্যায় মূলানুগ টীকা নহে, অপরার্কের স্বাধীন চিন্তা দ্বারা উদ্ভাসিত যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতির বিস্তৃত ব্যাখ্যা। তিনি সর্বজ্ঞ-র ন্যায়সারেরও টাকা রচনা করিয়াছিলেন। 5 K. A. Nilakanta Sastri, A History of South India, London, 1958.

অপরেশচন্দ্র মুখােপাধ্যায় (১৮৭৫-১৯৩৪ খ্ৰী) একাধারে নট, নাট্যকার এবং সাধারণ রঙ্গালয়ের পরিচালক। পাকপ্রণালী ইত্যাদি গ্রন্থের লেখক বিপ্রদাস মুখােপাধ্যায়ের পুত্র অপরেশচন্দ্র বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ শ্রেণীতে পঠনকালে মাত্র পনর বৎসর বয়সে শখের থিয়েটারের আখরায় যাতায়াত আরম্ভ করেন এবং স্টার থিয়েটারের সুবিখ্যাত অভিনেতা অমৃতলাল মিত্রের নিকট প্রথমে অভিনয় শিক্ষা করেন। কলিকাতা ও মফস্বলের নানাস্থানে প্রায় দশ বৎসর কাল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সহিত তিনি শখের অভিনয় করেন। গিরিশচন্দ্র ঘােষ ও অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফির সহিত উদীয়মান নট হিসাবে এবং নাট্যশিক্ষার ব্যাপারে তাহার গুরু-শিষ্য সম্বন্ধ ছিল। ১৩১১ বঙ্গাব্দে তিনি মিনার্ভা থিয়েটারে পেশাদার অভিনেতারূপে যােগদান করেন। নট হিসাবে উচ্চ খ্যাতি অর্জন না করিলেও তাঁহার: বাচনভঙ্গী ও সুস্পষ্ট উচ্চারণ তাহার অভিনয়কে হৃদয়গ্রাহী
করিত। ঐ বৎসরেরই ফান মাসে তিনি কিছুকালের জন্য মিনার্ভা থিয়েটারের পরিচালকের পদে অধিষ্ঠিত হন। কয়েক বৎসর পরে তিনি নব-সংগঠিত স্টার থিয়েটারে নট, নাট্যকার এবং পরিচালকরূপে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এইখানেই তাঁহার কর্মজীবন শেষ হয়। গিরিশচন্দ্রের মৃত্যুর কিছু পরে অপরেশচন্দ্র পর্যায়ক্রমে নাটক লিখিতে আরম্ভ করেন। তাহার ‘কর্ণার্জন’ নাটক বিশেষ জনপ্রিয় হইয়াছিল এবং ২০০ রজনীর অধিক অভিনীত হইয়াছিল। তিনি ‘রঙ্গিলা' (১৯১৪), ‘আহুতি’ (১৯১৫), রামানুজ’ (১৯১৬), ‘উর্বশী (১৯১৯), কর্ণার্জন’ (১৯২৩), ‘মন্ত্রশক্তি’ (১৯৩০), ‘মা’ (১৯৩৪) প্রভৃতি ২৮ খানি নাটক, একখানি উপন্যাস এবং ‘রঙ্গালয়ে ত্রিশ বৎসর’ নামে নিজ নটজীবনের আংশিক কাহিনীর রচয়িতা। নাটক | রচনায় তিনি গিরিশচন্দ্রের দ্বারা প্রভাবিত হইয়াছিলেন।
এবােধকুমার দাস

অপালা ব্ৰহ্মবাদিনী। চর্মরােগের জন্য দেহ সম্পূর্ণ নির্লোম হওয়ায় ইনি স্বামীপরিত্যক্তা হন। পিতা অত্রির মাথায় টাক ছিল এবং তাহার শস্যক্ষেত্ৰ অনুর্বর ছিল। ইন্দ্রের নিকট অপালার প্রার্থনা ছিল আমাদের পিতার উষর ক্ষেত্র, আমার এই শরীর ও আমার পিতার মস্তক এই সকলকে লােমযুক্ত কর। সেই ইন্দ্র বহুবার আমাদিগকে সামর্থযুক্ত করুন, আমাদিগের সংখ্যা বর্ধিত করুন, তিনি আমাদিগকে বহুবার ধনবান করুন। পতি পরিত্যক্ত হইয়া এখানে আসিয়াছি, আমরা ইন্দ্রের সহিত সংগত হইব।

সােমচর্বণরতা অপালার দস্তঘর্ষণজনিত শব্দকে অভিষব প্রস্তােখিত ধ্বনি মনে করিয়া ইন্দ্র তথায় উপস্থিত হন এবং অপালার মুখ হইতে সােমরস পান করিয়া পরিতৃপ্ত হইয়া বরপ্রদান করেন। ফলে অপালা সূর্যের ন্যায়। উজ্জলবর্ণা হইয়াছিলেন এবং তাহার অন্যান্য আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হইয়াছিল।

ব্ৰহ্মবাদিনী অপালা ঋগবেদের অষ্টম মণ্ডলের ৯১ সূক্তের ঋষি।

অপেরা সংগীত-প্রধান নাটক। অন্যান্য নাটকে সংগীত থাকিতে পারে, কিন্তু সংগীত সেখানে পীড়াদায়ক নাটকীয় ঘটনার পর মানসিক স্বস্তি ও সমতা বিধান করিবার জন্য, কোনও গৃঢ়, ভাব প্রকাশ করিবার জন্য অথবা দর্শকদিগকে নিছক আনন্দদান করিবার জন্যই সন্নিবেশিত হয়। কিন্তু অপেরায় সমগ্র নাট্যঘটনাটি
৭৪