পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪২
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

থাকিলে ইহা সম্ভব নহে। যাহাদের চিত্ত সর্বদা রাগদ্বেষসংশ্লিষ্ট তাহারা চিত্রের বস্তুকে ধ্যানের দ্বারা দীর্ঘকাল দৃঢ়ভাবে ধরিয়া রাখিতে পারেন না এবং সেইজন্য তাঁহারা উৎকৃষ্ট শিল্পী হইতে পারেন না। কিন্তু এই সমস্ত গুণ থাকিলেও যদি প্রজ্ঞা না থাকে তবে বিবিধ ভাব ও রসাদির যথার্থ সন্নিবেশ করিয়া শিল্পী তাঁহার চিত্রকে প্রকাশসম্পন্ন ও বীর্য্যবৎ করিয়া তুলিতে পারেন না। চিত্রের মধ্যে চিত্রেয় বস্তুর নানা নিগূঢ় তাৎপর্য্য ফুটাইয়া তুলিতে হইলেও চৈত্রিক প্রজ্ঞা একান্ত আবশ্যক। প্রত্যুৎপন্নমতিত্বকে এই প্রজ্ঞা হইতে শাস্ত্রকারেরা পৃথক বলিয়া অনালোচিত ও অচিন্তিত কোন সমস্যার উদয় হইলে তাহা হইতে নিজেকে নিম্মুক্ত করিয়া চিত্রী আপনার প্রতিবন্ধক দূর করিতে পারেন।

 প্রসঙ্গান্তরে কাব্যশিল্প সম্বন্ধে বলিতে গিয়া কাব্যমীমাংসায় রাজশেখর কয়েকটি কথা বলিয়াছেন, তাহা বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলিয়াছেন যে বুদ্ধি দুই প্রকার, স্বাভাবিক ও আহার্য্য। আহার্যবুদ্ধি আবার তিন প্রকার, স্মৃতি, মতি ও প্রজ্ঞা। অতিক্রান্ত বিষয়ের স্মরণাত্মিকা বুদ্ধি, স্মৃতি, বর্তমান কালের মননকে বলে মতি আর অনাগতকে যাহা জানায় তাহাকে বলে প্রজ্ঞা (অনাগতস্য প্রজ্ঞাতৃ প্রজ্ঞেতি}। অহরহঃ সদ্গুরুর উপাসনাদ্বারা বুদ্ধি ক্রমশঃ উৎকর্ষ লাভ করে। সদ্গুরুর উপাসনাই বুদ্ধিবিকাশের কামধেনু। এই বৃত্তিগুলির ক্রিয়াসম্বন্ধে বলিতে গিয়া তিনি বলিয়াছেন যে প্রজ্ঞাজ্যোতির দ্বারা প্রথমতঃ