পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা । তার ছবি বাহির হইয়াছে—চারি ধারে মোটা কালো 'বর্ডার’ মধ্যে একটা করুণ মৰ্ম্মস্পর্শ সনেট । নীহারের ব্যথিত প্রাণ বহরমপুর যাইবার জন্ত আবার অস্থির হইয়া উঠিল ! প্রভাত বাধা দিল । আরো চারি মাস কাটিয়া গেল—ইহার মধ্যে "মলয়াতে” মীহারিকার শোকে অনেকগুলি কবিতা প্রকাশিত হইয়াছে ! সেই সঙ্গে সম্পাদকেব ব্যঙ্গরসাত্মক কয়েকট ক্ষুদ্র গল্পও আছে । নীগব একটু আশ্চৰ্য্য হইয় প্রভাতকে একদিন বলিল—“আচ্ছা ! তার যদি মন খারাপ তা হলে এমন হাসির লেখা বেরুচে কেমন কবে ?” প্রভাত হাসিয়া বলিল—“ঐটি পুরুষদের বিশেষ তো লেখক জাতের বাহাদুৰী ! — আরো এরকম কাণ্ড আমি দেখেছি ।” নীহারিক বলিল, “তবে কি পুরুষেব হাসীও মিছে কাদাও মিছে ?—” “ভদ্রের রোদবিষ্টি কি মিছে ?” “মিছে নয় বটে কিন্তু কোন কাজের ও নয়—সে জলে মাটিও তেমন ভেজেন, সে রোদে কাপড়ও শুখোয় না ! (8) আশ্বিন মাস। ছুটির আগেই "মলয়া’ বাহির হইবার কথ। নীহারিক ভাবিতেছিল, এবার পূজার সংখ্যার ছদ্মাবরণে প্রিয়তমের ব্যথিত প্রাণের আর একটু ভাৰতরঙ্গ পাইব —ন জানি পুজার ‘মলা’র ছত্ৰে ছত্রে বর্ণে বর্ণে র্তার কত ব্যথা কত মৰ্ম্মপীড়া কত অশ্রুক্তি ভালপাসা নিহিত আছে ! — সত্যই আমি নিষ্ঠুর —বড় নিষ্ঠুর—একজনের প্রাণের ব্যথা নিয়ে আমোদ কৌতুক ! বহুবারম্ভ । Se 9g এমন সময় প্রভাত পিছন হইতে বলিগ— “নীহার ! নাঃ ! মুকুমারটা শেষে ফেল-ই হ’ল।” কথাটা বলিয়া অশ্বিনের "মলয়া’খানা তার সম্মুখে ফেলিয়া সে চলিয়া গেল ! *মুকুমার ফেল!”—নাগরিকবে ংট। পাশের মত হইয় গেল। সে কম্পিত হৃদয়ে, "মলয়ার’ পাতা খুলিয়া দেখিল মুকুমারের নব-পরিণীত স্ত্রীর ছবি—এমন সুন্দর অথচ এমন কুৎসিত বুঝি নীহাবিক। জীবনে কিছু দেখে নাই ! আবার ছবির তলে চারি লাইন কবিতা— “ক্ষমা কর তুমি দেবী !—অতীত প্রতিমা ! তুমিই এসেছ ফিরে নব প্রতিমায় ধুইয়া স্বর্ণদীনরে মৃত্যুর কালিম, এই জ্ঞানে স্থtiপয়াছি এ চারুবালায় !” নীহারিকার চক্ষু ফাটিয়া যেন মাগু:নর হন্ধ বাহির হইতে লাগিল ! নীহারিকার মৃত্যুসংবাদ তার স্বামীকে ব্যথা দেয় নাই – কবিতার উপাদান যোগাইয়াছে মাত্র !— যে নারী স্বামীর স্মৃতি হৃদয়ে আমরণ জাগাইয়া রাখে, সেই স্বামী স্ত্রীর চিতার আগুণ না জুড়াইতেই আবার ঘটকের দ্বারস্থ হয় – নীহারিক যতই ভাবিতে লাগিল, ততই যেন তার বুকটা ফাটিয়া যাইবার উপক্রম করিল ! এমন সময় পশ্চাৎ হইতে পরিচিত কণ্ঠে কে বলিল—“এ কি ! নীহার তুমি বেঁচে !” - নীহার চম্‌কাইয়া উঠিল—দেখিল,— তার স্বামী ! মুকুমার হাসিয়া বলিল “সতীনের হাতে স্বামীটিকে দিয়ে বুঝি স্বর্গে মন্‌ টি কূল না ? এখন সতীনটিকে আদর করে ডেকে আনো ! গাড়ীতে বসে আছে।” মুখের