পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Note বলিয়াছেন যে যদি তুমি তোমার অৰ্দ্ধেক পরমায়ু ত্যাগ করিতে সন্মত থাক, তাহা হইলে সেই কাল পর্য্যন্ত এই রমণীকে জীবিত রাখা যাইতে পারে।” কুরু—“আমি আমার নিজের অৰ্দ্ধেক জীবন ত্যাগ করিতে সন্মত হইলাম।” এই কথা শুনিবামাত্র দেবদূত যমরাজের নিকট যাইয়া ঋষি-কস্তাকে পুনৰ্জ্জীবিত করিবার আদেশ লইয়া আদিলেন। দেবদূত ফিরিবামাত্র ঋষিকস্তা নিদ্রোথি তার স্তায় ভূমি হইতে উথিত হইলেন,—সকলে বিস্মিত ও পুলকিত হইয়া উঠিল । পরে উভয়ে বিবাহিত হইয়া পরমমুখে কালাতিপাত করিতে লাগিলেন। এই আখ্যানের মধ্যে আমরা বিবাহের পূৰ্ব্বে যুবক যুবতীর প্রেমের প্রাচীন আদর্শটিকে পরিস্ফুট দেখিতে পাই,এবং অসাধারণ অবস্থার মধ্যে ব্রাহ্মণযুবার আস্তরিক প্রেমের কঠোর পরীক্ষা দেখিতে পাই । আমাদের প্রাচীন সাহিত্যের মধ্যে মনুষ্যপ্রকৃতির বিশেষত্বগুলি এরূপভাবে চিত্রিত হইয়াছে যে তাহার মধ্যে প্রেমের সম্বন্ধ ব্যতিরেকেও বিবাহ ব্যাপারের অনেক দৃষ্টান্ত দেখিতে পাই। এখনকার দ্যায় মহাভারতের কালেও সাধারণের বিশ্বাস ছিল যে বংশরক্ষার জষ্ঠ পুৰ্ব্বপুরুষগণের যন্ত্রণার সীমা থাকে না। এই বিশ্বাসের বশবর্তী হইয়া আমরা অগ্নিতেজ তপস্বী জরৎকারুকে বিবাহবন্ধনে বদ্ধ হইতে দেখিতে পাই । জরৎকারু কঠোর ব্রহ্মচৰ্য্য ও তপস্তার দ্বারা দেবপিত ব্ৰহ্মাকে পর্য্যস্ত তুষ্ট করিয়াছিলেন। আমরণ কুমার থাকিবেন বলিয়াই ভারতী । অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ তাহার প্রতিজ্ঞ ছিল । কিন্তু তাহার আর ছয়টি ভ্রাতাও কুমার অবস্থায় প্রাণত্যাগ করাতে পিতৃদেবগণ বংশলোপ হইবার ভয়ে দারুণ বিলাপ করিতে আরম্ভ করিলেন । জরৎ এক অতল কুপের মধ্য হইতে র্তাহীদের ক্রনদনধ্বনি শুনিতে পাইয়। তাহাদের শোকের কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন । পিতৃদেবগণ র্তাহাকে চিনিতে ন পারিয়া উত্তর করিলেন “হে অপরিচিত, আমাদের ইচ্ছা তুমি জরৎকারু নামক চিরকুমার-ব্ৰতী অভাগাকে খুজিয়া বাহির করিয়া বল যে আমাদিগের উদ্ধারের জন্ত তাহার বিবাহ করিয়া বংশরক্ষা করা আবশু ক ৷” জরৎ বলিলেন—“আমিই সেই অভাগ । আপনাদের যাহা কিছু বক্তব্য, আমাকে বলিতে পারেন ।” “আমরা জানি যে তুমি কঠোর তপস্তার দ্বারা সাধনমার্গে বিশেষ উন্নতি লাভ করিয়াছ, কিন্তু তুমি অপুত্ৰক বলিয়া আমাদিগের উদ্ধারের আর আশা নাই । সুতরাং তোমাকে বিবাহ করিতেই হইবে।” “আমি আজ পর্য্যন্ত বিবাহে মনোযোগী হই নাই । কিন্তু যখন আপনার ইচ্ছা প্রকাশ করিতেছেন তখন আমি বিবাহ করিতে সন্মত আছি, কিন্তু একটা সৰ্ত্ত আছে ” “কি সৰ্ত্ত ?” “আমি সাধারণভাবে বিবাহ করিতে পারিব না ইহা স্থির, সে আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি যাহাকে লেশমাত্রও ভালবাসি না, তাহার সছিত প্রেমের ছলনা করিতে পারিব না। তবে ভিক্ষা করিতে