পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧૭૭ কষ্ট করে থাকলে হতে না ? টাকাকড়ি তেমন কিছুতে আমাদের সঙ্গে নেই, এই দেখনা—মোটে সতের টাকা পাচ আন। তিন পয়সা আর বাকি আছে—” এই বলিয়া সে হেমেন্দ্রের নিকট হইতে প্রাপ্ত মনিব্যাগ খুলিয়া তাহাকে দেখাইল। আকস্মিক একট। লজ্জার আঘাতে হেম আরক্ত হইয়া উঠিল । কিন্তু সে লজ্জার আবরণ অার টানিয়া রাখিতে পারিতেছিল না ; জীর্ণ ক স্থার মত তাহার একদিকে টানিতে গেলে অপর দিকের নগ্নতা প্রকাশ করিয়া ফেলিয়া লজ্জা বদ্ধিত করিতেছিল মাত্র । আহতগৰ্ব্ব হেমেন্দ্র মন্ত্রনিরুদ্ধ বীৰ্য্যহীন সপের মত মনের মধ্যে গুমরিতে লাগিল। জীবনে যে বিনা সংগ্রামে পুর্ণজয়ী হইয়া নিজেকে কমলাসনার বরপুত্র বলিয়া চিনিয়াছিল এখনি তাহার সেই প্রচণ্ড অহঙ্কারে এমনি করিয়া আঘাত দান,– একি বিধাতার বিড়ম্বন ! তালা ভাঙ্গিয়াই বাড়িতে প্রবেশ করা হইল । যোগেশ শান্তিকে পাশের একটা ঘর দেখাইয়া দিয়া কহিল "আপনি ওই ঘরে গিয়ে থাটের উপর একটু শুয়ে নিন, বড়ই ক্লাস্ত হয়েছেন, আমি এখনি সব জোগাড় করে ফেললুম বলে ।” শাস্তি নিঃশবে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিল। মানব-বর্জিত গৃহ ধুলা ও ঝুলে ভরিয়া গিয়াছে, ক্ষুদ্র প্রাঙ্গণে কৃষ্ণকলি ও ডেঙ্গোশাকের সঙ্গে বিস্তর বুনোগাছ জন্মিয়াছে, একপাশে তুলসীহীনমঞ্চ ভাঙ্গিয়া পড়িতেছিল, যোগেশ সামনের ঘরের শিকল খুলিবামাত্র দুইটা চামচিকে পার্থী ভাঙ্গ জানলা দিয়া উড়িয়া গেল। ঘরের ঠিক সামনেই থানিকটা স্থান পার্থীর পালকাদিতে डांब्रडौ । পৌধ, ১৩১৭ অপরিস্কৃত থাকিয়া গৃহস্বামীর পক্ষি প্রিয়তার সাক্ষ্য দিতেছিল। ঘরের মধ্যে একখানি তক্তপোধ ও বড় একটা কাঠের সিন্দুকমাত্র পড়িয়া আছে। একটা কুলুঙ্গীতে দু একটা মুণ্ড ভাঙ্গ মাটির পুতুল ও ঘরের মেঝেয় খানকতক ছেড়া কাগজ, ভাঙ্গ হাড়ি ও আবর্জনার রাশি। হেমেন্দ্র ঘরে ঢুকিয়াই দুইপদ পিছাইয়া আসিল, ঘরের ভারাক্রান্ত বদ্ধ বায়ু মুহূর্তেই তাছাকে হাফাইয়া তুলিয়া, ছিল। যোগেশ জানালাগুলা খুলিয়া দিয়া কেঁাচার কাপড়ে তক্তাপোষের ধূলা ঝাড়িয়া একটা অংশকে ব্যবহারোপযোগী করিয়া স্তম্ভিত হেমেন্দ্রের দিকে ফিরিয়া বলিল, "আমুন ছোটবাবু আপনি এইখানে বসে বিশ্রাম করুন আমি একটা লোক ও কিছু খাবার চেষ্টায় যাই ।” হেম চোঁ কাটের নিকট হইতে খুব সাবধানে কেঁচোটা ওটাইয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া ভৗতভাবে বলিয়া উঠিল “এযে ভয়ানক ড্যাম্প । নিশ্চয়ই আমার ডিপ্‌ৰিরিয়া হয়ে মহতে হবে দেখচি।” যোগেশ আবার মনে মনে একটু হাসিল, কিন্তু বাহিরে সে সহানুভূতি দেখাইতে কোন ক্রটি করিল না, বলিল “কি করবেন বলুন বিধির বিড়ম্বন একেই বলে, যাহোক এখন ছুদিন কষ্ট সহ করুন আবার আমাদের দিন ও ফিরে আসবে। তখন সব দুঃখ মেটাবে, যে আপনাকে এতটা কষ্ট দিলে তার কি কখনও ভাল হবে মনে করেছেন ? কখন না, ভগবান আছেন তিনিই বিচার করবেন, দেখুন না কেমন মাগীর জাল ফাসাই।” হেমেঙ্গ আবেগের সহিত যোগেশকে আলিঙ্গন করিয়া গদগদ কণ্ঠে কহিয়া উঠিল “ভাগ্যে তোমার