পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧૦ প্রেরিত হন। এই যুদ্ধে সন্মানলাভ করিয়া তিনি সামরিক বিভাগ ত্যাগ করিলেন। সামরিক বিভাগ, বিলাসিত ও ক্রীড়াকৌতুক র্তাহাকে শাস্তি দিতে পারিল না। এই বিস্তৃত পৃথিবী তাহার নিকট এক বিরাট দুঃখ ও শোকে পরিপূর্ণ কারাগার বলিয়া প্রতীয়মান হইল এবং নিজের জীবন অত্যন্ত বিষময় হইয়া উঠিল । একদিন তিনি বৃক্ষতলে বসিয়া নিজের জীবনের কথা ভাবিতে ভাবিতে দেখিলেন, তাহার বিলাসমন্দিরের আলোক অন্ধকারে পরিণত হইয়াছে। নিজের চিত্তকে শাস্ত করিবার জন্ত তিনি নুতন পথে যাত্রা করিয়া এক সহানুভূতির, ভক্তির এবং ধৰ্ম্মের অমৃত উৎস নিঃস্থত হইতে দেখিলেন। প্রজা সাধারণের নিরাশ্রয়তা ও ক্লেশের কথা ভাবিয়া তাহার প্রাণ র্কাদিয়া উঠিল । মানুষ মানুষের উপর এইরূপ ব্যবহার করিতে পারে তাহা তাহার চিস্তার অতীত ছিল । একদিন ইংলণ্ডের এক প্রকৃতির উপাসক কবির হৃদয়ও এইরূপে র্কাদিয়া বলিয়া উঠিয়াছিল— To her fair works did Nature link The human soul that through me ran ; And much it gricved my heart to think What man has made of man. অর্থাৎ প্রকৃতি তাহার সুন্দর হুষ্টির মধ্যে মানবের আত্মাকে যুক্ত করিয়া দিয়াছে ; সেই আত্মার আমি অধিকারী । তাই মানুষের প্রতি মামুষের অত্যাচারের কথা ভাবিলে জামার প্রাণটা বেদনায় ক্লিষ্ট হইয় উঠে। ভারতী । পৌষ, ১৩১৭ সেইদিন হইতে র্তাহার বোধ হইল এই ঈশ্বরের রাজ্যে সকল বিষয়ে মানবমাত্রেরই তুল্য অধিকার । যিনি ইহাকে বিনাশ করিতে যাইবেন তাহাকে মহাপাপে লিপ্ত হইতে হইবে । তিনি দেখিলেম পদতলের তৃণাগ্র হইতে আরম্ভ করিয়া সুদূর নক্ষত্রলোক পর্যন্ত এক আনন্দরূপের স্নেহে ও সহানুভূতিতে মানবসমাজ পরিব্যাপ্ত হইতেছে। সেইদিন হইতে তিনি প্রকৃত খৃষ্টীয় জীবন যাপন করিতে প্রতিজ্ঞ করিলেন এবং যাহার জীবনে স্নেহ ও ভালবাসা প্রাপ্ত হয় নাই, মানবের প্রতি ৰাহীদের অত্যন্ত আবশুক সেই সকল ভাগ্যহীন ও প্রীতি-বঞ্চিত মনুষকে ভালবাসা ও স্নেহ করাই টলষ্টয়ের জীবনের প্রধান উদেগু হইয়া উঠিল । সেইদিন হইতে তিনি নিজের বিস্তৃত ভূসম্পত্তি প্রজাদিগের মধ্যে ভাগ করিয়া দিলেন এবং তাঁহাদের শিক্ষার জন্ত অনেক বিদ্যালয় স্থাপন করিলেন । নিজের বিলাসিতাকে বিসর্জন দিয়া তিনি সাধারণ কৃষকের দ্যায় জীবনের শেষ পর্য্যস্ত কৃষকদের সহিত মাঠে কাৰ্য্য করিয়াছিলেন। পুস্তক লিখিয়া তিনি যে লক্ষ লক্ষ মুদ্র পাইতেন তাহ অকাতরে পরের সুখের জন্ত বিতরণ করিতেন। শেষ জীবনে টলষ্টয় সম্পূর্ণ নিরামিষাশী হইয়াছিলেন। তিনি যে কেবল সাধারণ লোকের উন্নতির জন্তই জীবন উৎসর্গ করিয়াছিলেন তাহা নহে ; সাহিত্য গগনেও তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। র্তাহার পুস্তক সকল রুষিয় সাহিত্যে সম্পূর্ণ এক নবযুগ আনয়ন করিয়াছে। যে স্রোতস্বতী ক্ষীণধারায় প্রবাহিত হইতেছিল, তাহ। এখন সূতল পথ পাইয়া বিপুলকার