পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, নবম সংখ্যা। বটে, কিন্তু কোন সম্পূর্ণ উত্তর দিতে পারিলেন না। মানুষ যুদ্ধের নামে যে ভীষণ স্বেচ্ছাকৃত হত্যাসাধন করিয়া থাকে, সেইটাই টলষ্টয়ের অভিজ্ঞতায় এ পৃথিবীর হীনতম অসৎ ব্যাপার। কিন্তু তিনি দেখিলেন যে এই সকল ধৰ্ম্মযাজক যে কেবল যুদ্ধ নিবারণে সচেষ্ট নহেন তাহা নহে, অনেকেই ইহার পক্ষে সমর্থনেব জন্ত বিশেষ উৎসাহী। কেবল তাহাই নহে, প্রেম ও ধৰ্ম্মের নামে তাহারা বিভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীকে অশেষ প্রকারে নির্যাতন করিতেও কুষ্ঠিত হয় না। এক ধৰ্ম্মের মধ্যেও এক সম্প্রদায় অপর সম্প্রদায়ের ঘোর বিরোধী এবং পরস্পরের অনিষ্টসাধনে সততই সচেষ্ট । তিনি এই ধৰ্ম্মযাজকগণের মতানুসারে আপনাকে বুঝাইতে চেষ্টা করিলেন, কিন্তু র্তাহার অন্তৰ্য্যামী সে কথায় কর্ণপাতও করিলেন না। পরে তিনি প্রাচ্যদেশের বিভিন্ন ধৰ্ম্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করিলেন । কিন্তু অবশেযে বাইবেলের মধ্যেই তিনি তাহার মহাপ্রশ্নের সর্বাপেক্ষা সরল ও সুন্দর উত্তর দেখিতে পাইলেন। জন্ম, মৃত্যু, জীব ও জগদীশ্বর সম্বন্ধে মত জগতের সকল ধৰ্ম্মগ্রন্থেই প্রায় এক, কিন্তু তিনি র্তাহার নিজেদের ধৰ্ম্মগ্রন্থেই জীবনের সত্যকে উজ্জল ভাবে উপলব্ধি করিলেন। যাহা হউক টলষ্টয় অবশেষে জীবনের অর্থ ও উদ্দেশু সম্বন্ধে যে উত্তর পাইলেন তাহা এই, — যাহ! সৎ তাহাকে উপলব্ধি করিবার এক শক্তি আমার মধ্যেই নিহিত আছে, এবং আমি সেই শক্তির সহিতই যুক্ত রহিয়াছি ; আমার বিচার ও বিবেক সেই শক্তি হইতেই কাউণ্ট লিও টলষ্টয় । Պեյ Չ উদ্ভূত। এই শক্তির ইচ্ছা সম্পন্ন করাই আমার এ অস্তিত্বের উদ্দেশু, অর্থাৎ মঙ্গল সাধনই আমার ধৰ্ম্ম । যীশুখ্ৰীষ্টের যে প্রসিদ্ধ দ্বাদশটি আজ্ঞা বা উপদেশ আছে, তাহার মধ্যেই টলষ্টয় আমাদের জীবনের সকল নীতি পাইয়াছিলেন। র্তাহার মতে যীশুর নিম্নলিখিত পাচটি উপদেশ পালন করিলেই, এমন কি পালন করিতে চেষ্টা করিলেও আমাদের মানবসমাজের জীবনের গতি পরিবৰ্ত্তিত হইয়া যায় ঃ– (১) কদাচ ক্রোধ করিবে না ; (২) কদাচ ইন্দ্রিয়পরায়ণ হইবে না ; (৩) বিবেক ভিন্ন অপর কাহারও বগুতস্বীকার করিবে না ; (৪) তোমার অনিষ্ট করিবে না ; ; (৫) শত্রু মিত্র সকলকেই ভালবাসিবে। টলষ্টয় বলিতেন অমঙ্গলকে নষ্ট করিয়া মঙ্গলের প্রতিষ্ঠা করিবার দুইটি উপায় আছে। প্রথম পথটি জগতের শ্রেষ্ঠ পুরুষের চিরদিনই অবলম্বন করিয়াছেন । এই পথ অবলম্বন করিতে হইলে, প্রথমে সকল বস্তুর অস্তনিহিত সত্য অনুসন্ধান করা আবগুক পরে সতেজে সেই সত্য প্রকাশ করা আবশুক এবং জীবনে সেই সত্য পালন করিতে চেষ্টা করা আবশুক । উদ্ভিদরাজ্যে বৃষ্টিধারী ও স্বৰ্য্যকিরণের দ্যায় লোকের জীবন প্রভাব জনসমাজের মধ্যে নীরবে ব্যাপ্ত হইয়া ক্রিয়া করিতে থাকে। এই প্রভাবের স্রোত দেশে দেশে, যুগে যুগে প্রবাহিত হইতে থাকে । দ্বিতীয় পথের লোকেরা অপরের কত্তব্য সম্বন্ধে একটা ধারণা স্থির করিয়া পরে মতের বিরুদ্ধবাদিদের