পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪শ বর্ষ, দশম সংখ্যা । আমাদের নানা প্রকার ব্যবহারে আসতে হয়েছে। আজি আমাদের ৰেখানে চরিত্রেব দীনতা, জ্ঞানের সঙ্কীর্ণতা, হৃদয়ের সঙ্কোচ, যেখানে যুক্তিহীন অfচারের দ্বারা আমাদেব শক্তিপ্রয়োগের পথ পদে পদে বাধাগ্রস্ত হয়ে উঠ চে, যেখানেই লোকব্যবহারে ও দেবতার উপাসনায় মানুষের সঙ্গে মানুষেব দুর্ভেদ্যব্যবধানে আমাদের শতথগু কবে দিচ্চে, সেইখানেই আমাদের আঘাতের পর আঘাত, লজ্জার পর লজ্জা পেতে হচ্চে, সেইখনেই অকৃতার্থতা বারম্বীর অfমীদেব সমস্ত চেষ্টাকে ধূলিসাৎ কবে দিচ্চে এবং সেই খানেই প্রবলবেগে চলনশীল মানবস্রোতের অভিঘাত সহ্য করতে না পেবে আমরা মূৰ্ছিত হয়ে পড়ে যাচ্চি—এই রকম সময়েই যে সকল মহাপুরুষ আমাদের দেশে মঙ্গলের জয়ধ্বজ বহন কবে আবিভূত হবেন তাদের ব্রতই হবে জীবনের সাধনার ও সিদ্ধির মধ্যে সত্যের সেই বৃহৎ সামঞ্জস্যকে সমুজ্জল করে তোলা যাতে করে এখানকার জনসমাজের সেই সাংঘাতিক বিশ্লিষ্টতা দুব হবে, যে বিশ্লিষ্টতা এদেশে অস্তরের সঙ্গে বাহিরের, আচারের সঙ্গে ধৰ্ম্মের, জ্ঞানের সঙ্গে ভক্তির, বিচারশক্তির সঙ্গে বিশ্বাসের, মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রবল বিচ্ছেদ ঘটিয়ে আমাদের মনুষ্যত্বকে শতজীর্ণ করে ফেলচে । ধনীগৃহের প্রচুর বিলাসের আয়োজনের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে এবং অচৈারনিষ্ঠ সমাজের কুলক্রমাগত প্রথার মধ্যে পরিবেষ্টিত হয়ে মহর্ষি নিজের বিচ্ছেদকাতর আত্মার মধ্যে এই সামঞ্জস্ত-অমৃতের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন ; নিজের জীবনে সামঞ্জস্ত । bre :) চিরদিন সমস্ত লাভক্ষতি সমস্ত সুখদুঃখের মধ্যে এই সামঞ্জস্তের সাধনাকে গ্রহণ করেছিলেন এবং বাহিরে সমস্ত বাধাবিরোধের মধ্যে শাস্তমূ শিবমদ্বৈতম্ এই সামঞ্জস্তের মন্ত্রটি অকুষ্ঠিত কণ্ঠে প্রচার করেছিলেন। তার জীবনের অবসান পৰ্য্যস্ত এই দেখা গেছে যে তার চিত্ত কোনো বিষয়েই নিশ্চেষ্ট ছিল না, ঘরে বাইরে, শয়নে আসনে, আহারে ব্যবহারে, আচাবে অনুষ্ঠানে, কিছুতেই তার লেশমাত্র শৈথিলা বা অমনোযোগ ছিলনা। কি গৃহকৰ্ম্মে, কি বিষয় কৰ্ম্মে, কি সামাজিক ব্যাপারে, কি ধৰ্ম্মানুষ্ঠানে সুনিয়মিত ব্যবস্থার স্বলন তিনি কোনো কারণেই অল্পমাত্র ও স্বীকার করতেন না ; সমস্ত ব্যাপারকেই তিনি ধ্যানের মধ্যে সমগ্ৰ ভাবে দেখতেন এবং একেবারে সৰ্ব্বাঙ্গীণ ভাবে সম্পন্ন করতেন—তুচ্ছ থেকে বৃহং পৰ্য্যন্ত যাহাকিছুর সঙ্গে তার যোগ ছিল তার কোনো অংশেই তিনি নিয়মের ব্যভিচার বা সৌন্দর্য্যের বিকৃতি সহ করতে পারতেন ' না । ভাষায় বা ভাবে বা ব্যবহারে কিছুমাত্র ওজন নষ্ট হলে তৎক্ষণাৎ তাকে আঘাত করত। তার মধ্যে যে দৃষ্টি, যে ইচ্ছ, যে আধ্যাত্মিক শক্তি ছিল তা ছোটবড় এবং আন্তরিক বাহিক কিছুকেই বাদ দিত না, সমস্তকেই ভাবের মধ্যে মিলিয়ে, নিয়মের মধ্যে বেঁধে, কাজের মধ্যে সম্পন্ন করে তুলে তবে স্থির হতে পারত। তার জীবনের অবসানপৰ্য্যন্ত দেখা গেছে তার ব্রহ্মসাধনা প্রাকৃত্তিক ও মানবিক কোনো বিষয়কেই অবজ্ঞা করে নি-সৰ্ব্বত্রই তার ঔংস্থক্য অক্ষুণ্ণ ছিল। বাল্যকালে আমি যখন তার সঙ্গে ড্যালহৌণী পৰ্ব্বতে একবার গিয়েছিলুম, তখন দেখেছিলুম