পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br&● এতগুলা লোকের সাধ আহলাদ মিটাবার ভার যার উপর সে লোকটা কিন্তু ঘরোয় বিবাদে মাটি হতে চোল্লো । সে যখনই বই হাতে কোরে বসে, তখনি তার মনটা আকাশপথে ছুটে যায়, তার প্রাণটা পথে ঘাটে হাটে বাজারে লোকজনের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। সুরেশ বেচার স্মৃতি শক্তির সাহায্যে কোন রকমে পরীক্ষা অরণ্য পার হচ্চিল কিন্তু বাইরের জগৎ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কোরে তাকে এমন বিপথে নিয়ে ফেললে যে সে কিছুতেই আর নিজেকে উদ্ধার কোরতে পারলে না । সুরেশের ফেল হওয়াতে বাড়ীতে শোকের ঝড় বহে গেল । কৰ্ত্ত দিন কতক ধোরে নিবিষ্ট চিত্তে রামায়ণ মহাভারত পড়তে লাগলেন। গিল্পী অৰ্দ্ধেক দিন রান্নাঘবেই কাটাতেন। ভাত রান্না খাওয়া হোয়ে গেলেও খোলা চড়িয়ে বসে থাকতেন। মুড়ি ভেজে মুড়ির চাল কোরে নিজের মনকে শাস্ত কোরতেন। ঘটক ঠাকরুণ বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আর এক বাড়ীতে গিয়ে উঠলেন। সুরেশের বন্ধুবান্ধবের কেউ মৌখিক কেউ বা আন্তরিক সহানুভূতি দেখালে। সুধাংশুর মা—যার ছেলে তিনবার ধোরে এফ এ ফেল হচ্চিল—আঙল মটকাতে মটকাতে বল্লেন, “ঐ দেখ, অত অহঙ্কার কি আর সহ হয় ! দর্পহারী মধুসুদন ত আছেন! সুধাংশু আর সুরেশ একসঙ্গে এফ এ পরীক্ষা দেয় । সুধাংশু ফেল হয়, সুরেশ পাশ হয়ে যায়। সুরেশের মা ছেলের পাশ হওয়ার সন্দেশ ৰলে সুধাংশুর মার কাছে এক থালা গোল্লা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সুধাংশুর মায়ের সে ভারতী । মাঘ, ১৩১৭ গোল্লা আজও পর্য্যস্ত জীর্ণ হয় নি। পাড়বেড়ানী উমামুন্দরী যখন সুধাংশুর মার কাছে দৈনিক গেজেট নিয়ে এল, তখন সুধাংগুর মা তাকে হাসতে হাসতে বল্লেন, ওলো সুরেশের মাকে বলিস,– ছেলের বিয়ের সন্দেশটা যেন পাই । সুরেশ মার্ক আনিয়ে দেখলে সে মোটের উপর আট নম্বরের জন্ত ফেল হয়েচে । তবু সে ফেল ! সে অঙ্গের পাসের সঙ্গে নিজের ফেলের তুলনা কোরে তার সঙ্গে নিজের মোটে এক বিঘৎ তফাৎ মনে কোরে নিজেকে সান্তন দিচ্ছিল কিন্তু সে অতি শীঘ্রই টের পেলে যে এই এক বিঘৎ জায়গাতে সমস্ত পৃথিবীট। তার মান অপমান ঐশ্বৰ্য্য দারিদ্র্য সুখ দুঃখ প্রভেদ নিয়ে এসে দাড়াল। সন্মান ঐশ্বৰ্য্য মুখ তার চোখের সামনে ঘুবতে লাগল fকন্তু সে তাদের কাছ থেকে যেন একটা জীবন পিছিয়ে পড়ল। ব্রজলালের মা যখন নগদ তিন হাজার টাকা, এক প্রস্থ রূপার বাসন এবং সোণা দিয়ে মোড় বধুটিকে বরণ কোরে ঘরে তুললেন তখন রামের মা, শুtমের মা, হরির মা, সকলেই সমস্বরে বল্লেন, আহা, তা হবে না কেন, ! ছেলেও যে তেমনি, তিনটে পাস ! যথাসময়ে উমাসুন্দরীর মারফৎ ব্রজলালের মার সৌভাগ্যের কথা সুরেশের মার কাছে পৌছাল । সুধাংশুর মা উমাসুন্দরীকে গয়নার ফর্দ লিখে দিয়েছিলেন। এই ধর সিথেয় সি তি, কানে মাকড়া, নাকে নথ, বাজু, সাতনর, চিক, চন্দ্রহার, বাল, অনন্ত । এক একথান গহনা এক একট: কাটার মত মুরেশের মার বুকে বিধে গেল । অল্প দিনের মধ্যে সুরেশের পিতাও