পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দশম সংখ্যা । রোগশয্যায় অtশ্রয় নিলে না । তার স্বাস্থ্য আগে থেকেই ভেঙ্গে ছিল, পুত্রটি ফেল হওয়ায় তিনি মনে যে আঘাত পেলেন তাতে শরীর আরো বিগড়িয়ে গেল । সুস্থ শরীরে পেনসনের অল্প টাকায় এক রকম চলে যেত। এখন রোগের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বড় টানাটানি পড়ল। সংসারে দারিদ্র্যের ছায়া দেখা দিলে । তার উপর ব্রজলালের ডেপুটী হওয়ার খবর নিয়ে এ পাড়ার মাসী, ও পাড়ার পিসী, নতুন পাড়ার জ্যেঠা সুরেশের মার কাছে এসে সুরেশের ফেল হওয়ার জন্তে কর্তার অসুখের জন্তে আর সংসারে টানাটানি পড়ার জন্তে বিলক্ষণ রসান দিয়ে গেলেন । কৰ্ত্তার বিছানার কাছে বসে আধখান ঘোমটা খুলে দিয়ে ব্রজলালের মার মুখ ঐশ্বর্য্যের সঙ্গে সুরেশের মার দুঃখ দারিদ্র্যের তুলন। কেরতে লাগলেন । মাসী বল্লেন, আহ। ব্রজলাল বড় ভাল ছেলে গো । পিসী বল্লেন, উপযুক্ত ছেলে, বিয়ে পাস কোরেচে, তবে ত ডেপুটী হয়েছে। জেঠী বল্লেন, তাতেই ত তাদের ংসারে মুখ ঐশ্বৰ্য্য উথলে উঠেছে । শুনে সুরেশের মা গোপনে চোখের জল মুছলেন, মরেশের বাবা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে সুরেশ যে দিকে বসেছিল, সে দিক থেকে অদ্যদিকে চোখ ফেরালেন । তার পর সুরেশের বাবা মারা গেলেন । মুরেশের উপর সংসারের ভার পড়ল। সে অনেক কষ্টে অনেক উমেদারী কোরে কোন জমিদারের কাছারিতে কুড়ি টাকা বেতনে একটা চাকরী ধোগাড় কোরলে । এতদিন পরে সে আট নম্বরের প্রভেদ বুঝতে পারলে । সে ফেলা হয়েছে—তার মানে সে কর্তব্য পরীক্ষার্থী। bべ> পালন করে নি। ছাত্রজীবনের যা সৰ্ব্বোচ্চ পাপ সে তাই অর্জন কোরেচে। জগতের বিচার ঠিকই হয়েচে । অকৃতকার্য্যতার দ ও জগৎ এই রকমেই দিয়ে থাকে । তার ব্ৰহ্মচারী হেয়ে তপস্ত করা উচিত ছিল । সমস্ত ইন্দ্রিয় সংযত কোরে সাধন করা উচিত ছিল, সমস্ত অস্তর্জগৎকে অধ্যয়নের কাজে নিযুক্ত করা উচিত ছিল—সে তা পারে নি, তাই তার দাম আজ কুড়ি টাকা। ব্রজলাল পেরেছিল, তাই তার দাম আজ দুশো টাকা । সুরেশ ঠিক কোরণে, সে এবার তপস্তা কোরবে। সে সকালে আর বিকালে কাছারীর কাজ করে, দুপুর বেল কলেজে যায়। রাশি রাশি বেকন দেকার্ট মিলের টীক দিয়ে হৃদয়কে চাপা দিয়ে রাখলে, ইংরেজ কবিগণের পার্থিব উন্নতিবিষয়ক শত শত নীতি বচন দ্বারা প্রাণটাকে আন্ঠে পুষ্ঠে বেধে রাখলে ৷ এক বৎসর এইভাবে সংযম কোরে পরীক্ষণ যজ্ঞে দাক্ষিত হল । কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে ফিরে এসেই সে রোগে পড়ল । যে উত্তেইন ভিতরকার মাছুষটাকে চাপা দিয়ে তার উপর বুদ্ধির সঙ্গীন চড়িয়ে দাড়িয়ে ছিল, সে উত্তেজনা সরে পড়ধামাত্র ভিতরকার মানুষটা সুরেশকে দণ্ড দেবার জন্য উদ্ধত হোয়ে উঠল । বুকের ভিতর দুৰ্ব্বলতা, মাথার ভিতর দুর্বলতা, প্রাণের ভিতর দুৰ্ব্বলতা — সুরেশ ভাল কোরে হাত পা মেলতেও কষ্ট বোধ করতে লাগল। সে বেশ বুছতে পারলে তার জীবনের দিন শেধ হয়ে এসেছে । এক দিন রাত্রে বড় বাড়াবাড়ি হল । ডাক্তার কাছে বসে আছেন । সুবেশের ম৷