পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ఆసి ছাড়িতে ইচ্ছা করে না,—তার পর অশ্ৰুজল রোধ করিয়া সহসা অগুৰ্হিত হইল !

ললিতর্গ ত্যাগ করিয়া সন্ন্যাসী বাহির হইল,—সমস্ত অঙ্গে নিদারুণ বেদনা ! সাত দিন ও রাত্রির পরিশ্রমের জন্ত শরীরটা বড়ই অসুস্থ বোধ হইতেছিল—তবু আর একদণ্ড থাকিবে না । স্মৃতি আবার তাহার ভাগ্যে সত্যরূপ ফিরিয়া আসিয়াছে এবং বন্ধন আরও দৃঢ় হইয়াছে—সুতরাং অtর না ! ললিতৰ্গ৷ হইতে সে বেশী দুব হইবে না, এক ক্রোশের মধ্যেই,—ততদুব গিয়া আর চলিতে পাবিল না, একটা গাছের তলায় সন্ন্যাসী বসিয়া পড়িল । কেন,এমন হইল ? আপনাব দেহের দিকে চাহিয়া সন্ন্যাসী দেখিল, বসন্ত-গুটিকায় সমস্ত দেহ ভরিয়া গিয়াছে ! চোখ বুজিয়া সন্ন্যাসী ভাবিল, “আঃ—এই ত ভাল ! আমার মত অভাগাব মৃত্যু লোকালয়ে শোভা পেত না, তাই ভগবান মনুষ্যের সম্পর্ক থেকে দূরে এইখেনে আমাকে এনে ফেলেছেন । এখানকার মুক্ত বাতাস, গভীর স্তব্ধতা, এই ত সন্ন্যাসীর মৃত্যুর উপযোগী !” গাছের একটা শিকড়ে মাথা রাখিয়া সন্ন্যাসী শয়ন করিল। নিদ্রার মধ্যে,চেতনা-হীনতার মধ্যে একটি মাত্র মুখ ভাসিয়া উঠে, সে মন্দার ! সেই একমাসের ছোট মেয়ে মন্দার, তাহার স্নেহময়ী জননীর ক্রোড়-শায়িত মন্দার, আটবৎসর পূৰ্ব্বেকার লতাপাতাঘের আনন্দ ও প্রেমোজ্জল গৃহের মন্দার ! ভারতী । কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ У о কতদিন এমন ভাবে কাটিয়াছিল স্থির নাই। যে দিন সন্ন্যাসী চোখ খুলিল, সেদিন তাহার মুখে মৃত্যুর ছায়া স্বনিবিড় হইয়া আসিয়াছিল । একটা গরুর গাড়ী যাইতেছিল, গাড়োয়ান সন্ন্যাসীকে দেখিয়া নামিয়া আসিল । ভাল করিয়া দেখিয়া চিনিল, ললিতগার সেই সন্ন্যাসী যে তাহার প্লীহা অারাম করিয়াছিল। হাতজোড় করিয়া সে কছিল, “ঠাকুর আপনার এ দশা কেন ? আপনার জন্তে আমি কি করতে পারি ?” সন্ন্যাসী কহিল, “দয়া করে যদি একটি কাজ কবে । তোমাব ঐ গাড়ীতে আমাকে একটু জায়গা দিয়ে ললিতগীর বিপিনবাবুর বাড়ীতে পৌছে দাও—একবার মন্দাকে দেখতে ইচ্ছে হয়েছে ।” সন্ধ্যার কিছু পূৰ্ব্বে গাড়ী আসিয়া দাড়াইল । অতি ধীরে ধীরে গাড়ী হইতে নাময় সন্ন্যাসী বোয়াকে উপবেশন করিল। ভাল আওয়াজ বাহিব হয় না,—কম্পিতকণ্ঠে সন্ন্যাসী ডাকিল, “মন্দা--- ও মন্দা—” শুনিয়া মন্দার ঠাকুম মুখ বাড়াইলেন, *ওম৷ সন্ন্যাসী ঠাকুর যে ! বসন্ত হয়েছে দেখছি—এমন অবস্থায় এথেনে এলেন কেন, —ছেলেপুলের বাড়ী—” সন্ন্যাসী মৃদুস্বরে কহিল, "একবার মন্দাকে দেখতে এসেছি—” ঠাকুম মুর উচ্চ করিয়া বলিলেন, “ন, ন, সে কাহিল, এখন সে উঠতে পারবেন,— তাকে এখন দেখা হতে পারে ন—*