পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা । মারচে। কিন্তু আমাদের মনুষ্যত্বের তাতেও কুলিয়ে উঠলনা ;-- পশু পক্ষীর সঙ্গে সমান তয়ে প্রকৃতির ক্ষেত্রে তাকে যে কাজ করতে হচ্চে তাতেই সে চুপ করে থাকৃতে পারলে না,—কাজের ভিতর দিয়ে ইচ্ছা করেই সে সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে হয় । মানুষের মত কাজ কোনো জীবকে করতে হয় না । আপনার সমাজের মধ্যে একটি অতি বৃহৎ কাজের ক্ষেত্র তাকে নিজে তৈরি করতে হয়েছে ; এইখানে কতকাল থেকে সে কত ভাঙচে গড়চে, কত নিয়ম বাধচে কত নিয়ম ছিন্ন করে দিচ্চে, কত পাথর কাটচে কত পাথর গাথচে, কত ভাবচে কত খু জুচে কত কঁাচে ; এই ক্ষেত্রেই তার সকলের চেয়ে বড় বড় লড়াই লড়া হয়ে গেছে ; এইখনেই সে নব নব জীবন লাভ করেছে, এইখানেই তার মৃত্যু পরম গৌরবময় ; এইখানে সে দুঃখকে এড়াতে চায়নি নৃত্তন নূতন দুঃখকে স্বীকার করেছে ; এইখানেই মানুষ সেই মহত্তত্ত্বটি আবিষ্কার করেছে যে, উপস্থিত যা তার চারদিকেই আছে সেই পিঞ্জয়স্টার মধ্যেই মানুষ সম্পূর্ণ নয়, মানুষ আপনার বক্তমানের চেয়ে অনেক বড়, এই জন্তে কোনো একটা জায়গায় দাড়িয়ে থাকূলে তার আরাম হতে পারে কিন্তু তার চরিতার্থতা তাতে একেবারে বিনষ্ট হয়—সেই মহতী বিনষ্টিকে মানুষ সহ করতে পারে না—এই জন্তই, তার বর্তমানকে ভেদ করে বড় হবার জন্তই, এথনো সে যা হয়ে ওঠেনি তাই হতে পারবার জন্তেই, মানুষকে কেবলি বারবার দুঃখ পেতে হচ্চে ; সেই দুঃখের মধ্যেই মামুষের গৌরব ; এই কথা মনে রেখে মানুষ আপনার কৰ্ম্মক্ষেত্রকে কৰ্ম্মযোগ । blrt সঙ্কুচিত করে নি ; কেবলি তাকে প্রসারিত কবেই চলেছে ; অনেক সময় এতদুর পর্য্যন্ত গিয়ে পড়চে যে, কৰ্ম্মের সার্থকতাকে বিস্তৃত হয়ে যাচ্চে, কৰ্ম্মের স্রোতে বাহিত আবর্জনার দ্বার। প্রতিহত হয়ে মানবচিত্ত এক একটা কেন্দ্রের চারদিকে ভয়ঙ্কৰ আবৰ্ত্ত রচনা করচে, স্বার্থের আবৰ্ত্ত, সাম্রাজ্যেব আবৰ্ত্ত, ক্ষমতাভিমানের অবিত্ত ; কিন্তু তবু যতক্ষণ গতিবেগ আছে ততক্ষণ ভয় নেই, সঙ্কীর্ণতার বাধা সেই গতির মুখে ক্রমশই কেটে যায়, কাজের বেগই কাজের ভুলকে সংশোধন করে ; কারণ চিত্ত আচল জড়তার মধ্যে নিদ্রিত হয়ে পড়লেই তাঁর শক্র প্রবল হয়ে ওঠে, বিনাশের সঙ্গে আর সে লড়াই করে উঠতে পারে না। বেঁচে থেকে কৰ্ম্ম করতে হবে, কৰ্ম্ম করে বেঁচে থাকৃত্তে হবে এই অনুশাসন আমরা শুনেছি। কৰ্ম্ম করা এবং বাচ, এই দুয়ের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য যোগ আছে । প্রাণের লক্ষণই হচ্চে এই, ধে, আপনার ভিতরটাতেই তার আপনার সীমা নেই ; তাকে বাইরে আসতেই হবে। তার সত্য অস্তরে এবং বাহিরের যোগে । দেহকে বেঁচে থাকৃতে হয় বলেই বাইরের আলো, বাইরের বাতাস, বাইরের অন্নজলের সঙ্গে তাকে নানা যোগ রাখতে হয় । শুধু প্রাণশক্তিকে নেবার জন্তে নয় তাকে দান করবার জন্তেও বাইরেকে দরকার। এই দেখন কেন, শরীরকে ত নিজের ভিতরের কাজ যথেষ্টই করতে হয় ; এক নিমেষও তার হৃৎপিণ্ড থেমে থাকে না, তার মস্তিষ্ক তার পাকযন্ত্রের কাজের অস্ত নেই। তবু দেহটা নিজের ভিতরকার এই অসংখ্য প্রাণের