পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা । শব্দ শুনিয়া দুরত বোধ ও শব্বোৎপত্তির দিঙ নির্ণয় আমরা ক্রমশঃ অভ্যাস করি। এমন কি শব্দের উচ্চতা বা নীচতাব তারতম্য লইয়। আমরা যে দূরত্বের উপলব্ধি করি তাহাতে হরবোলা প্রভৃতি (ventriloquist) দ্বারা অনায়াসে প্রতারিত হই । তাহার। উদরাভ্যস্তর হইতে এরূপ ভাবে শব্দ করে যে তাহাতে মনে হয় যে বহু দুব হইতে অথবা ভিন্ন দিক হঠতে শব্দ আসিতেছে। এটি অভ্যাসের চুড়ান্ত চুষ্টান্ত । প্লচের দ্বারা আমরা যে উষ্ণতা বা শৈত্য অনুভব করিয়া থাকি তাই ও অভ্যাসবশতঃ আমাদের যথার্থ জ্ঞান উৎপাদনে অনেক সময় ব্যাঘাত জন্মায় । দক্ষিণ হস্তে বরফ ও বাম হস্তে গরম দুধের বাটি কিছুক্ষণ ধরিয়া রাখলে পরে দুই হস্ত এককালে একট। বাল্‌তাঁর জলে ডুবাইয়া দিলে, বাম হস্তে ঐ জল শীতল বোধ হইবে ও দক্ষিণ ইস্তে উষ্ণ বোধ হইবে । অথচ তাপমান যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় যে বালতীব জলের উত্তাপ সৰ্ব্বএ সমান । এই প্রকার অনুভূতির বিভিন্ন তার স্থল কারণ আমাদের অভ্যাস । দক্ষিণ হস্ত পূৰ্ব্ব হইতে বরফ সংযুক্ত আছে বলিয়া উহাতে উত্তাপগ্রহণক্ষমত। অশিয়াছে এবং বাম হস্তে উষ্ণ বস্তু ছিল বলিয়া উষ্ঠ উত্তপ্ত হইয়া রহিয়াছে। এ অবস্থায় বালতার জলে হস্তদ্বয় ডুবাইলে বাম হস্ত হইতে উত্তাপ শীতলতর জলে চলিয়া গেল এবং ঐ জলের উত্তাপ শীতলতর দক্ষিণ হস্তে আসিল । যে বস্তু আমাদের ত্বকু হইতে উত্তাপ দূরীভূত করে সেই বস্তুকে আমরা শীতল বলিয়া অনুভব করিবার অভ্যাস করিয়াছি। যে বস্তু হইতে ক্রমবিকাশে অভ্যাসের প্রভাব । @之@ উত্তাপ আসিয়া ত্বচে প্রবেশ করে সেই বস্তুকে আমরা উষ্ণ বলিয়া অনুভব করিতে অভ্যাস করিয়াছ । সুতরাং বালুতার জল সমতাপসম্পন্ন হইলে ও বাম হস্তে শীতল ও দক্ষিণ হস্তে উষ্ণ বোধ হইল। মাৰ্ব্বেল পাথরেব টেবিল শীতল বোধ হয়, কাষ্ঠ বা কাপড়মোড় টেবিল তত শীতল বোধ হয় না, অথচ থাম্মমিটর বলে উভয়ে সমান গরম। ইহাও আমাদেব ত্বচের বিশেষত্ব ও আমাদের অভ্যাস মুলক। মাৰ্ব্বেলের উত্তাপ পরিচালন ক্ষমত কাষ্ঠ বা কাপড় অপেক্ষা অনেক বেশি ; সুতরাং মাৰ্ব্বেল স্পশ করিলে ত্বচুস্থিত উত্তাপ শীঘ্রই স্থানান্তবে পরিচালিত হইয়া যায়, কা&েব দ্বারা তত শীঘ্র হয় না । আমাদের উত্তাপ শীঘ্রই হ্রাস প্রাপ্ত হয় বণিয়া মাৰ্ব্বেলকে কাষ্ঠ অপেক্ষ শীতল অনুভব করি । আমাদের অভ্য{সনিবন্ধন ইন্দ্রিয়ের সমস্ত ক্রিয় ও তৎপ্রযুক্ত জ্ঞান উৎপন্ন হইতেছে । অভ্যাস যে কতদূর আমাদের কার্যের জন্ত, দায়ী তাহার ঈয়ন্ত করা কঠিন । আমি যে অভ্যাস করিলাম তাহার দাগ আমার শরীরে এবং মনে চিরকাল রাইয়া যায় । অভ্যস্ত অনেক প্রক্রিয়া সময়াস্তরে কাল ও অবস্থা ভেদে পরিত্যাগ বা পরিবর্তন কর বড় ছুরই ব্যাপার । একটা গল্প মনে পড়িল । গোয়ালিয়র প্রদেশে গতবাস্কের জন্ত সুপ্রসিদ্ধ কোন এক পেশাদার গায়ক একটি মুকণ্ঠ বালককে গীত শিখাইত। বালক শুইয়৷ শুইয়। গত অভ্যাস করিত এবং শীঘ্রই মুগায়ক হইয়া উঠিল । একদিন ওস্তাদজী চেলা লইয়া রাজবাড়ী গান শুনাইতে গেলেন। ওমরাহগণ বালকের বিষয় জিজ্ঞাসা করাতে ওস্তাদঞ্জি ক্রমশঃ