পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা । হয় না । এই সব নিরক্ষর নিম্নশ্রেণীর লোক গুলি—বর্ণমালা যাহারা কখনো চোখে দেখে নাই, তাছাদের চক্ষের কাছে ব্যাস বাল্মীকি কবি কঙ্কণের স্বষ্টি পর্যায়ের পরে পর্য্যায়ে জীবন্ত হইয়া উঠিতেছে,—কত জ্ঞান, কত শিক্ষণ, কত ধৰ্ম্ম—কত প্রেম, ভক্তি, পাপ, পুণ্য —অনাদি কালের কত অনাদি কথা নিঝর ধাবার মত তাহদের প্রাণের ভিতর আসিয়া নামিতেছে, তাহাদের জীবনের গ্লানি দুঃখ হতাশ মনস্তাপ সব তাচারা ভুলিয়া যাইতেছে । রাম যখন পিতৃসত্য পালন করিতে বনে যাইতেছেন, সীতা যখন শ্রীরামের মনস্তুষ্টির জন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করিতেছেন, রুক্সাঙ্গদ যখন সত্য রক্ষার জন্ত বালক পু েএব শিরশ্চেদ করিতেছেন, সাবিত্রী যখন সত্যবানের শিয়বে আগত মৃত্যুকে তজ্জনী শাসনে ফিরাইয়া দিতেছেন—তখন তাহদের অন্ধকার হৃদয় গুলি একটি অপরূপ শিক্ষার আলোক উত্তাপে, বিস্ফারিত হইয়া উঠিতেছে, তাহদের প্রতি দিনকার ক্ষুদ্র আকাঙ্ক্ষ মুখ দুঃখ বাদ বিসম্বাদ তরঙ্গ-তাড়িত তৃণের মতন সবিয়া যাইতেছে, তাহাদের বিজ্ঞানময় সম্বিত লে আলোক-স্পশে শতদলের মত প্রফুটিত হইয়া উঠিতেছে, এই ক্ষণিকে ব হ্রস্ব প্রভাতটি চিরদিনের জন্ত তাহাদের হৃদয়ে একটা স্পন্দনের বেগকে জাগরিত করিয়া যাইতেছে। নীহারিক ঘনীভূত হইয়া যে পৃথিবীর আকার ধাৰণ করিয়াছে, অথবা স্বষ্টির কীট পতঙ্গ হইতে বহুপদ চতুষ্পদ প্রভৃতির ক্রম পর্য্যায়ে দ্বিপদ মন্থয্যের আবির্ভাব হইয়াছে—বিজ্ঞান অধ্যয়ন করিয়া তাহারা তাহা নাই বা শিখিল, তাহার দেখিতেছে তাছাদের চক্ষের সম্মুখে পৃথিবী স্বল্প হইতেছে, প্রাচীন ভারতের লোকশিক্ষা । おやか○ জল হইতে স্থল উদ্ভূত হইতেছে, অন্ধকার হইতে আলোক জন্ম লইতেছে—অভিব্যক্তির পৰ্য্যায় ক্রমে তাহাদের দেবতা মৎস্ত রূপ হইতে কুৰ্ম্মরূপে, কুৰ্ম্ম হইতে বরাহ রূপে, বরাহ হইতে অৰ্দ্ধনরাকার রূপে অদ্ধনরাকার হইতে খৰ্ব্ব বামন রূপে, বামনরূপ হইতে অবশেষে বিরাট-দেহ বৃষস্কন্ধ শাল প্রাংগু মহাভুজ মুঠাম নরাকারে প্রকাশিত হইতেছে ! সভ্যজগতকে বুঝাইতে গিয়া ডারুইন যে গবেষণা করিয়াছিলেন ( যদিও এখন ডারুইনের সেই মত সম্বন্ধে সংশয় প্রকাশিত হইতেছে ) —কলালক্ষ্মীর অঙ্গনে সঙ্গীতের সৌন্দৰ্য্যtলোকে তাহারা তাহাকে মূৰ্ত্তিম গু হইয়া উঠিতে দেখিতেছে! তাহাতে কোনো কঠেরতার লেশ নাই, পীড়নের অসহিষ্ণুতা নাই, শিক্ষার অত্যাচারের জগদ্দল পাষাণটিকে ঠেলিয়! ফেলিয়া কাব্য সাহিত্য, দশন ধৰ্ম্মশাস্ত্র একটি প্রবল নিঝর ধারার মত উৎসারিত হইয়া চলিয়াছে ! তাহার অমৃতের এই অনন্ত প্রস্রবণটিতে আপামর সাধারণ তৃষ্ণ নিবৃত্তি করিতেছে, তাহাদের জীবন যাত্রার তিমিরাবৃত পথগুলি এই অপরূপ দীপের শত-শিখা বৰ্ত্তিকার আলোকে ঝকৃমকৃ করিয়া উঠিতেছে! তাহাদের সম্মুখে তাহারা দেখিতেছে বিধাতার জগৎ-স্বষ্টির লীলাভিনয়--পাপপুণ্যের দণ্ডাভিনয়, মহৎ ও ক্ষুদ্রের কন্মাভিনয় ;– ভক্তিতে আনন্দে ও মহৎ ভাবের উদ্দীপনায় তাহাদের হৃদয় পুলকিত হইয়া উঠিতেছে, তাহদের চারিদিককার কার · প্রাচীর তাহীদের চোখের কাছ হইতে সরিয়া যাইতেছে ! এই নিম্ন শ্রেণীকে অশিক্ষিত বলিয়া শিক্ষিত্ত