পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సె)ట সরস্বতী অবস্থান কবিতেছেন । আমার শিলামূৰ্ত্তি র্তাহার নিকট রাখিয়া আইস। ব্রাহ্মণের নিদ্রা ভঙ্গ হইল। স্বপ্নের বিষয় চিন্তা করিয়া অভ্যন্ত বিচলিত হইলেন । ঠাকুর ঘরে প্রবেশ করিয়া ভক্তিভরে নারায়ণকে প্রণাম করিয়া বহু মিনতি করিলেন ও যদি কোন অপরাধ করিয়া থাকেন তজ্জন্ত নানারূপে ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন। পূজা কালীন তাহার বোধ হইতে লাগিল,—ঠাকুর ঘরে যেন কেহ বলিতেছেন—আমাকে এই স্থান হইতে সত্যদেবের নিকটে রাখিয়া আইস । পূজা সাঙ্গ করিয়া, ব্রাহ্মণ ভক্তিভাবে নারায়ণকে প্রণাম করিয়া কহিলেন— দেবতা, আমি তোমাকে কখনই ছাড়িয়া দিব না । তুমি যখন দয়া করিয়া আমার সহিত কথা কহিতেছ, তখন আমার অদৃষ্টে যাহাই থাকুক, আমি যতদিন বাচিব তোমাকে আমার গৃহে রাখিব । দুই তিন দিন এইরূপে অতিবাহিত হইল। ব্রীজ্ঞণ শালগ্রাম শিলা গৃহ হইতে বাহির করিলেন না। পরদিবস যখন তিনি গভীর পূজায় মগ্ন তখন শুনিলেন, কেহ যেন বলিতেছেন—যদি তুই আমার আজ্ঞা পালন না করিস, তাহা হইলে তোর সৰ্ব্বনাশ হইবে । ব্রাহ্মণ তৎক্ষণাৎ বলিলেন-- ঠাকুর, সৰ্ব্বনাশ হয়, হউক, আমি প্রাণ থাকিতে তোমাকে কখনই ছাড়িব না । পূজাকালীন ২৩ দিন পুনরায় তিনি এইরূপ স্বর শ্রবণ করিলেন, কিন্তু একথা কাহারও নিকট প্রকাশ করিলেন না । কয়েক দিন পরে তাহার পুত্রের পীড়া হইল ও সেই পীড়াতেই অল্পদিন মধ্যে তাহার জীবন শেষ হইল । ব্রাহ্মণ ইহার জন্য প্রস্তুত হইয়া ভারতী অগ্রহায়ণ, ১৩২০ ছিলেন । ভক্তের হৃদয় ইহাতে অণুমাত্র বিচলিত হইল না। তিনি যথাবিধি ঠাকুরের পূজা করিতে লাগিলেন। কয়েকদিন মধ্যে ব্রাহ্মণীর ও তৎপরে জামাতার মৃত্যু হইল। সংসারে তিনি ও একমাত্র বিধবা কন্ত দেবসেবায় কালাতিপাত করিতে লাগিলেন। ব্রাহ্মণ সুশিক্ষিত ছিলেন। তিনি কস্তাকে নানারূপ ধৰ্ম্মশিক্ষা দিয়াছিলেন । র্তাহারী উভয়ে বিশেষ ভক্তির সহিত দেবসেবা করিতে লাগিলেন। ক্রমে ব্রাহ্মণও ইহলোক ত্যাগ করিলেন । মৃত্যুকালে তিনি কস্তাকে বলিলেন—দেখিও মা আমি আজীবন দেবসেবা করিয়া আসিয়াছি, এখন যাইবার সময় তোমাকে বলিতেছি যে আমার গৃহ-দেবতা যেন তোমার জীবন থাকিতে কখনও গৃহ-ছাড়া না হন। তুমি বিধবা, নিজে দেবতার পূজা করিবে ও তাহার প্রসাদ গ্রহণ করিলে । কন্ত পিতার আজ্ঞা পালন করিতে লাগিলেন। একদা তুিনিও স্বপ্ন দেখিলেন যে ঠাকুর তাহাকে সত্যদেবের নিকট রাখিয়া আসিতে আদেশ করিতেছেন । নিদ্রাভঙ্গ হইলে তিনি ঠাকুরের ঘরে উপস্থিত হইয়া কৃতাঞ্জলিপুটে নিবেদন করিলেন--আমার পিতা আজীবন আমাকে তোমার সেবা করিতে আদেশ করিয়া গিয়াছেন। সুতরাং আমি কোন মতেই তোমাকে ত্যাগ করিতে পারিব না। কন্যা তাহার পিতার মৃত্যুর পূৰ্ব্বে স্বপ্ন বৃত্তান্ত অবগত হইয়াছিলেন। যাহাতে পূজার কোনরূপ ক্রটি না হয় এজন্ত তিনি বিশেষ সাবধান হইলেন । দেব-সেবা সুচারুরূপে নিৰ্ব্বস্থিত হইতে লাগিল ।