পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা সেই শব্দকেই ঐ বস্তুর নাম স্থানীয় করিয়া লয়। সে ঘড়িকে বলে টিক্ টক্‌, হংসকে বলে পাকু পাক, কুকুরকে বলে ঘেউঘেউ, ছাগলকে বলে ভ্যা ভ্যা ইত্যাদি । মানুষের সভ্যতাক্রমে যতই বাড়িতেছে, জীবন-সংগ্রামের ব্যাপার ততই জটিল হইয়া উঠিতেছে ; সুতরাং নিয়তই নুতন কথার স্বষ্টি হইতেছে। এইরূপে শব্দ হইতে কথার স্বষ্টি হয়। আদিম মানবও ঐরূপে শব্দ হইতে কথার স্বষ্টি করিয়াছিল। ঐ এক একটা শব্দের মধ্যে যে কতখানি ভাষা প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে তাহা ভাষাতত্ত্ববিৎ জানেন । এখন শত শত কথার জন্মের ইতিহাস লুপ্ত হইয়৷ গিয়াছে। আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে • সরাইকে “হি হি হাউস” বলে—অর্থাৎ হাসির ঘর অথবা আমোদের স্থান । অদ্যপি অনেক স্থলে দেখা যায় যে বহুবচন বুঝাইতে হইলে একই কথা দুইবার বলা হয় ; যথা— পুনঃ পুনঃ, বার বার শত শত, হাজার হাজার ইত্যাদি। বহুবচন বুঝাইবার এরূপ নিয়ম বোধ হয়, সংখ্যাবাচক শব্দ স্বষ্টিৰ পূৰ্ব্বে হইয়াছিল। বিশেষ্যের ন্তায় অনেক ক্রিয়াপদও ঐ একই নিয়মে শব্দ হইতে উৎপন্ন হইয়াছিল ; যথা, নাসিকার মধ্যে একপ্রকার অনুভূতি উপস্থিত হইলে আমরা ‘হঁ্যাচ করিয়া শব্দ করিয়া থাকি । সেইজন্ত ঐ কাৰ্য্যকে আমরা ইঁচি বলিয়া থাকি । ভাষার সব কথাই যে এইরূপে উৎপন্ন হইয়াছে, এমন নহে। শব্দ হইতে উৎপন্ন কথা বা নামগুলি ব্যতীত ভাষায় হাজার হাজার কথা বর্তমান আছে। যিনি ঘড়ি আবিষ্কার করিয়াছিলেন, তিনি উহাকে ‘টিক্‌ ৬ ভাষার উৎপত্তি እbo টিকৃ’ ন বলিয়া ঘড়ি বলিয়াছেন। এই সকল আধুনিক কথা মানুষের জ্ঞানের যুগে হইয়াছে। ইহাদের আবিষ্কৰ্ত্তার তাহদের পিতামহগণ অপেক্ষ আরও একটু তলাইয়৷ বুঝিতেন ও দেখিতেন। তাহ না হইলে যদি দুইটা বিভিন্ন বস্তু একই প্রকার শব্দ করিত, তাহা হইলেই গোল বাধিয়া যাইত। কিন্তু পুরাকালে শব্দজনিত কথা ভিন্ন অন্ত কথাগুলি কিরূপে স্বল্প হইয়াছিল, ইহা চিন্তার বিষয়। হয়ত ঐ কথা সমুহের মধ্যে অনেকগুলি শব্দোৎপন্নই বটে এবং এক্ষণে ঐ সকল কথার শব্দ-সম্পর্ক হারাইয়া গিয়াছে। অথবা ঐ সম্পর্ক তখন এরূপভাবে ঘুরাইয়া ধরা হইয়াছিল যে, এখন উহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। সভ্যতা যতই উন্নত হইতে লাগিল, পুরাতন কথাগুলিকে ততই নুতন কথার সহিত সংযুক্ত করিয়া কাটিয়া ছাটিয়া তাহাদিগকে নুতন আকার প্রদান করা হইল। তদ্ব্যতীত অনেকানেক কথা লোকে ইচ্ছামত স্বষ্টি করিয়াছে। এই কথা স্বষ্টি কোন বাধা নিয়মের অন্তর্গত নহে। দেখা যায় যে, এক এক দেশের ছেলেরা এক এক প্রকার খেলার জন্ত নানারূপ কথার স্থষ্টি করে। ঐ কথায় একটা ভাষা প্রকাশিত হয় বটে, কিন্তু উহাদের অর্থের সহিত ঐ কথাগুলির কোন ধাতুগত সম্বন্ধ নাই। যদি সকলেরই এইরূপ নুতন নুতন কথা স্বষ্টি করিবার অধিকার থাকে এবং যখন সময় সময় নুতন কথা প্রস্তুত করিবার আবগুক হয়, তখন মানুষ যে ইচ্ছামত কতকগুলা কথা ভাষার মধ্যে প্রবিষ্ট করাইয়া দিয়াছে, তাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। এই কারণেই ভাষাতত্ত্ববিদের এত