পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Glyky বিপদ—এই জন্তই তিনি নিয়ত খেই হারাইয়া ফেলেন । ভিন্ন ভিন্ন জাতীয় লোকের ভাষা কেন বিভিন্ন প্রকার হইয়াছে, পূৰ্ব্বোক্ত কথা অনুসারে তাহার কতকটা প্রমাণ দেওয়া যাইতে পারে। মনে কর, একটা লোক অদৃষ্টক্রমে কোন কারণে তাহার স্ত্রী ও শিশুসস্তানগুলির সহিত এক নির্জন বনে বাস করিতে বাধ্য হইয়াছিল। কিছুদিন পরে ঐ শিশুসন্তানের পিতৃমাতৃহীন হইল । তারপর তাহারা বনের ফলমূল সংগ্ৰহ করিয়া জীবন ধারণ করিতে লাগিল। পিতামাতার নিকট যে অল্পসংখ্যক কয়েকটা কথা শিখিয়াছিল, সে সময় তাহারা তাহীদের জীবনযাপন করিবার জন্ত কিছুদিন সেই কথা কয়ট ব্যবহার করিল। কিন্তু ক্রমে তাহারা যতই বড় হইতে লাগিল, ততই তাহদের নুতন কথার প্রয়োজন হইয়া পড়িল । তখন তাহার ইচ্ছামত নুতন কথার স্বষ্টি করিল। এই কয়টি শিশুর সংসার ক্রমে যখন বৃদ্ধি পাইয়া একটি জাতিতে পরিণত হইল, তখন আরও বেশী কথার প্রয়োজন হইল এবং আরও কতকগুলি কথার ইচ্ছামত স্বজন হইল। এইরূপে একটি নুতন ভাষা জন্মগ্রহণ করিল। ভাষার বিভিন্নতা আবার দেশের ভৌগোলিক অবস্থার উপর কতকটা নির্ভর করে। উদাহরণ স্বরূপ পূৰ্ব্বোক্ত গল্পটি ধরা যাইতে পারে। উক্ত শিশুগণ অরণ্যে বাস করিত । যদি তথায় আহারীয় দুষ্প্রাপ্য হুইত, অথবা তথাকার জলবায়ু তাহদের পক্ষে দুঃসহ হইত, তাহ হইলে শৈশবকালে পিতৃমাতৃবিচ্ছেদের পর তাহদের বাচিয় छांब्रडैौ পৌষ, ১৩২• থাকা এক প্রকার অসম্ভব হইত। তাহ হইলে সে স্থানে আর নুতন জাতি অথবা নুতন ভাষার স্বষ্টি হইত না। পরস্তু যদি ঐ স্থান সৰ্ব্বতোভাবে বাসের পক্ষে উপযুক্ত হইত এবং আহাৰ্য্য অনায়াস-লভ্য হইত, তাহা হইলে তথায় ঐক্লপে একটা নুতন ভাষার উৎপত্তি অবশুম্ভাবী। প্রাচীন ইউরোপে অtহাৰ্য্য যখন বর্তমান সময় অপেক্ষ অধিকতর দুষ্প্রাপ্য ছিল, তখন কোন বিশেষ সুবিধা নহিলে ঐক্কপ নিঃসহায় শিশু কয়টি বাচিয়া থাকিতে পারিত না । সেই জন্তই সমগ্র ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে মোটের উপর প্রায় কেবল চারি পাচ প্রকারের ভাষা বর্তমান । কিন্তু আমেরিকার কালিফোর্নিয় দেশের জলবায়ু অতি চমৎকার । সেখানে অৰ্দ্ধেক । বৎসর বৃষ্টি হয় না। তুষার কিম্বা বরফ তথায় নাই বলিলেই হয় । বৎসরের মধ্যে প্রায় দুই শত দিন আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। তথায় ফলফুল প্রচুর পরিমাণে জন্মাইয়৷ থাকে। অনুসন্ধান করিলে দেথা যায় যে সেখানে অন্ততঃ উনিশটি বিভিন্ন ভাষী জাতি বাস করে । তাই বলিতেছিলাম ভাষার ংখ্যার উপর দেশের ভৌগোলিক অবস্থার একটা মস্ত সম্পর্ক আছে। মানুষ তাহার চতুষ্পাশ্বস্থ বস্তুসমূহের সম্বন্ধে যতই বেশী জ্ঞানলাভ করিতে লাগিল, অন্তান্ত মনুষ্যের সহিত তাহার সম্বন্ধ যতই ঘনিষ্ঠতর হইতে লাগিল, তাহার জীবন যাত্র যতই জটিল হইয়া উঠিতে লাগিল, ততই সে নুতন কথা সংগ্ৰহ করিয়া ভাষাকে পরিপুষ্ট করিয়া তুলিতে আরম্ভ করিল। প্রত্যেক শিল্প, প্রত্যেক বিজ্ঞান, প্রত্যেক