পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা ছিল। মনে হইতেছিল তাহারা বুঝি জলের ভিতব সেই শোচনীয় ইতিহাসেব অমুসন্ধান পাইয়াছে। সমুদ্রের দিকে চাহিয়া ব্যথিত স্বরে কাপ্তেন কহিলেন, “জাহাজ খান খুব পুরণ বটে,—তবু সে আমাদেব অনেক দিনের মুখ দুঃখের সঙ্গী, রোদ-বৃষ্টি ঝড়ঝঞ্চায় অকুল সমুদ্রের আশ্রয় গৃহ ।” কাপ্তেনের ব্যথিত স্মৃতিকে চাপা দিবার অভিপ্রায়ে আমি কহিলাম “কি সুন্দব মনেমুগ্ধকর দৃশু—এখনকার এই সৌম্য শাস্ত গম্ভীৰ্য্যময় সমুদ্রের দিকে চেয়ে কে মনে করতে পাবে যে এই খানেই তিনটি অমূল্য মানবজীবন হারিয়ে গেছে ?” একটু আবেগের সহিত মেডোজ কহিলেন “ অহা বেচাবার ? যদি আমব চলে যাবাব পব তাদেব মৃত দেহ তীবে ভেসে আসে তাহলে মিঃ ওয়েষ্ট আপনি তাদেব দেহের উপযুক্ত সৎকার করবেন ত ?” কাপ্তেনের কথার উত্তর দিতে যাইব এমন সময় সহকারী সহস্তে চীৎকার স্বরে কহিলেন “যদি তাদের গোর দিতে চান একটু শীঘ্র শীঘ্র সে কাজটা সেরে ফেলবেন । ত না হলে তারা হয়ত আবার এদেশ ছেড়ে চলে যেতে পাবে। কাল আমি কি বলেছিলুম মনে আছে ত ? একবার ঐ ঢিবিটার দিকে চেয়ে দেখুন দেখি কি রকম মনে হয়—!” আমরা চাহিয়া দেখিলাম তীরে অনতিদূরে একটা কঠিন মৃত্তিক ও মুড়ীর স্তুপের উপব এক জন মানুষ দাড়াইয়া আছে। সহকাবীর বদ্ধদৃষ্টি সেই লোকটির প্রতিই সোধ-রহস্ত لاه لالا চুম্বকীকৃষ্ট লৌহের মত আকৃষ্ট হইয়াছিল। কাপ্তেন সেই দিকে চাহিয়া যুগপৎ হর্ষবিস্ময়ে চীৎকার করিয়া উঠিলেন “কি আশ্চৰ্য্য! তাইত—এ যে দেখ চি শনৎসুন নিজে ? চল আমরা ওঁর কাছে এগিয়ে যাই—” অত্যন্ত উত্তেজিত ভাবে দ্রুতপদে কাপ্তেনকে সেই দিকে অগ্রসব হইতে দেখিয়া আমরাও র্তাহার অনুসরণ করিলাম । স্ত,পারূঢ় ব্যক্তি নামিয়া ধীর মৃত্মন্দ গমনে আমাদের দিকেই অগ্রসর হইয়া আসিলেন। তাহাব মস্তক ঈষৎ অবনত, —ওষ্ঠে কোমল স্নিগ্ধ সহস্তে ভাব । জগতের কৰ্ম্ম কোলাহলে ব্যস্ত, আত্ম অহঙ্কারে পবিপূর্ণ মানব আমবা—আমাদের মাথা সেই সৌম্য শান্ত গাম্ভীর্য্যের নিকট যেন আপন হইতে নত হইয়া গেল । র্তাহার স্থির অকম্পিত কৃষ্ণতাব চক্ষুব চিন্তাপূর্ণ গম্ভীৰ্য্যময় দৃষ্টি দেখিয়া মনে হইল, তিনি যেন আমাদের শিক্ষাদাতা—আর আমরা যেন এক দল স্কুলের বালক—! আমাব জ্ঞানে আমি এমন মূৰ্ত্তি কখনও দেখি নাই ! এমনতর দিব্য কান্তি মানুষের যে থাকিতে পারে তাহা কখন চিন্তাও করি নাই ! প্রশস্ত ললাট, বিশাল বক্ষ, প্রাণস্পশী দৃষ্টি, দৃঢ়তাব্যঞ্জক মুখ ক্ষোদিত মূৰ্ত্তির মতই মনোজ্ঞ মনোহব ! সন্ত্রমে ভক্তিপূর্ণ বিস্ময়ে আমি অবাক হইয় তাহারই পানে চাহিয়া রহিলাম। স্থৈৰ্য্য এবং ক্ষমতাজ্ঞাপক একটি ভাব তাহার মুখে ব্যাপ্ত থাকিলেও বাহিরের প্রশাস্ততার তাহ বিরোধী নহে । তাহার জন্তু পৰ্য্যন্ত ঢাকা একটি গেরুয়া