পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৪৮ করিতে বলিতেছি কেননা অদ্য উপায় আর দেখি না, তবুও আশা করিতেছি বিচার-আলোচনার পথ সম্পূর্ণ রোধ হয় নাই, ইম্পিরিয়াল গভর্ণমেণ্টের দ্যায়বিচার-শক্তি এখনও নিঃশেষ হইয়া যায় নাই।” ভারতীয় সেক্রেটারি অব কাউনসিল পুনর্গঠন সম্বন্ধে সভাপতি বলিতেছেন, “আজি কালকার দিনে সভ্যদিগকে সাধারণে নিৰ্ব্বাচন করিয়া দিলেই সৰ্ব্বাপেক্ষ ভাল হয়। কাউনসিল সংস্কার কালে যাহাতে ভবিষ্যতে এক তৃতীয়াংশ ভারতীয় সভ্য হয়েন—এবং তাহারা যাহাতে রাজকৰ্ম্মচারী না হয়েন সে বিষয় লক্ষ্য রাখা আবশুক ।” স্থানীয় স্বায়ত্ত শাসন এবং প্রাথমিক শিক্ষা সম্বন্ধে পরিবর্তন যে বিশেষ আবশুক তাহ তিমি দেখাইয়াছেন । প্রাথমিক শিক্ষা সম্বন্ধে তিনি বলেন- “অশিক্ষিত কুসংস্কারগ্রস্ত জড়মূঢ় সাধারণকে উন্নতির পথে অগ্রসর করিবার একমাত্র মহামন্ত্র শিক্ষা, –তাহাদিগের নৈরাশু । দূরীকরণের, মানব নামের শ্রেষ্ঠতা অনুভূত করাইবার একমাত্র উপায় শিক্ষা, সাহিত্য দেশবার্তা, কৃষিউন্নতির নিয়মাবলি ও নূতন বিজ্ঞানাচুযায়ী কৃষিচেষ্টা বিস্তার করিবার একমাত্র উপায় শিক্ষা । দেশের প্রধান জন কয়েক শিক্ষিত হইলে জাতি গঠিত হয় না প্রত্যেক ব্যক্তিকে শিক্ষিত করা আবশ্বক, —বালক বালিকা, সমভাবে শিক্ষা লাভ করিলে তবে দেশের মুদিন ফিরিয়া আসিবে ।” সভাপতি বলিয়াছেন,—“উন্নতির পথে অগ্রসর হইতে হইলে শান্তির প্রয়োজন,— চারিদিকে পরিপূর্ণ শান্তির বিস্তার অতি ভারতী মাঘ, ১৩২৪ অবশুকীয় ; মুসলমান কবি হাফিজ বলিয়াছেন, — যদি উন্নতি তোমার অভিপ্রেত হয় তবে বিশ্বে সবলের সহিত শান্তি, প্রতির সম্বন্ধ স্থাপন কর। বিরোধী উচ্ছঙ্খলতায় কেবল মাত্র শক্তি ক্ষয় হইয়া যায়,—আমরা দুৰ্ব্বল হইয়া পড়ি ।” সভাপতি বলেন, “মহম্মদের ধৰ্ম্ম বিরোধ প্রচার করে না ; অন্ত ধৰ্ম্মের প্রতি বিরাগ তাহার যথার্থ মৰ্ম্মকথা নয়।--ভাল করিয়া বুঝিয়া দেখিলে সকলেই দেখিতে পাই বেন মহম্মদের ধৰ্ম্ম উদার নীতি এবং গণতন্ত্রের প্রসার প্রচার করিয়াছে । সঙ্কীর্ণ গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ হইয়া থাক তাহার উদ্দেশু নয়। তবে আসুন মুসলমান, হিন্দু পার্সি, খ্ৰীষ্টান আমরা সকলে ভ্রাতৃত্বের সখ্য বন্ধনে দৃঢ় হইয় অগ্রসর হই। হৃদয়ে বিশ্বাস জীবনে দেশপ্রতি আমাদের অটল থাকুক্‌ ৷ মুসলমান যদি এতদিন দূরে ছিল আজ সে নিকটে আসিয়াছে, হিন্দু ভ্রাতাগণ তাহাদিগকে সাদর সম্ভাষণে অভিনন্দন করিয়া লউন— তাহদের সহিত একত্র কাজ করিবার বাসনায় বিশ্বাস স্থাপন করুন ! ঐক্যের মাহেন্দ্রক্ষণ আমাদের নিকট মঙ্গল লইয়া সমাগত, তাহ যেন ব্যর্থ হইয়া না যায় ! এ ঐক্যের জন্ত আমাদিগকে ত্যাগ স্বীকার করিতে হইবে ; ক্ষুদ্র স্বাৰ্থ বলিদান দিতে হইবে, অনেক ছাড়িয়া হয় ত অল্প সঞ্চয় করিতে হইবে,-- তবুও এই সম্মিলনই দেশের মঙ্গলের চরম পস্থা। ক্ষুদ্রত বর্জন করিয়া, সম্পূর্ণতার আদর্শ বরণ করিয়! একত্রে, সখ্যে, তানন্দে, আমুন অমর অগ্রসর হই।”