পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

めた&o বৎসরের হাজার-করা স্ত্রীতে সস্তানের বার্ষিক জন্ম ২৫ • ; আর ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের হাজার-কর স্ত্রীতে জন্ম-সংখ্যা ৪৯ হইতে ৫ , পৰ্য্যস্ত ! আমাদের দেশের মৃত্যুসংখ্যায় শতকরা ৪৩ জন পাঁচ বৎসরের শিশু থাকে ; ১৫ জন পাচ হইতে চব্বিশ বৎসরের : ২৬ জন পচিশ হইতে ৫৪ বৎসরের ; অবশিষ্ট ১৬ জন তদূৰ্দ্ধ বৎসরের। এইরূপ মৃত্যু সংখ্যা অন্য কোনও জাতিতে দেখা যায় ন!। স্ত্রীদিগের অবস্থা আরও শোচনীয় ; ১• হইতে ৩৪ বৎসরের স্ত্রীদিগের মধ্যে স্থতিকাগৃহেই প্রতি বৎসর দেড় লক্ষ প্রস্থতি দেহত্যাগ করে।” প্রসিদ্ধ ডাক্তারদিগের মত এই যে, কন্যার বিবাহ যত অল্প বয়সে হয়, তত শীঘ্রই তাহার সন্তানোৎপাদনশক্তি চলিয়া যায় । সুতরাং দেখা যাইতেছে বাল্যবিবাহের মধ্যে কবিত্ব ও সেণ্টিমেন্টের প্রাচুর্য্য থাকিলেও প্রকৃত পক্ষে তাহী ক্ষতিকর। সেইজস্য হিন্দুশাস্ত্রে বাল্যবিবাহের আদর্শ কিরূপ প্রতিপাদিত হইয়াছে, গ্রন্থকার তাঁহারই আলোচনা করিয়াছেন। আলোচনা বিশদ ও নিরপেক্ষ হইয়াছে। যুক্তি ও সত্যের উপর তাহ। বু প্রতিষ্ঠিত। প্রাচীন ঋষিদিগের মতাদি ঘটনাবিপৰ্য্যয়ে কিরূপে বিকৃত অবস্থায় আমাদের হস্তগত হইয়াছে, তাহাও তিনি নিপুণভাবে প্রদর্শন করিয়াছেন। গ্রন্থকার ঠিকই বলিয়াছেন, “আমাদের দেশে অনুষ্টভ, ত্ৰিষ্টভ, জগতীচ্ছদের পরিচ্ছদ পরিয়া কত অনাচার লোকসমাজে সদাচাবরূপে পূজা আদায় করিতেছে, কত দানব ভদ্রবেশে দেবতার ভোগ অপহরণ করিয়! লইতেছে * * * কেবল টীকাকার বা অন্তের উদ্ধৃত শ্লোকাদির উপর নির্ভর করিয়া মূল গ্রন্থের অধ্যয়ন না করিলে দুই একটি বিচ্ছিন্ন বচন হইতে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্তের আশা করা বিড়ম্বন।” এই গ্ৰন্থখানি গ্রন্থকার দুই ভাগে বিভক্ত করিয়াছেন। পূৰ্ব্বাদ্ধ-ভাগে তিনি বাল্যবিবাহ-সমর্থক শাস্ত্রবচনের বিচার ও উত্তর ভাগে বিবাহের মন্ত্র ও আদর্শের আলোচনা করিয়াছেন। প্রাচীনকালে শাস্ত্রাদির অঞ্জুশাসন প্রভৃতির জন্য স্মৃতিশক্তির উপরই সকলকে অধিকতর নির্ভর করিতে হইত।” সেরূপ ক্ষেত্রে প্রক্ষিপ্ত শ্লোকাদির অবতারণা একান্তই স্বাভাবিক বলিয়া মনে ভারতী মাঘ, ১৩২০ হয়। কিন্তু শুধু মনে করিয়াই গ্রন্থকার ক্ষান্ত হন নাই—তিনি দৃঢ় ও নিপুণ যুক্তি-তর্কে এই প্রক্ষিপ্ত শ্লোকাদি-নিৰ্দ্ধারণেও সক্ষম হইয়াছেন। গ্রন্থখানিত্তে বিচার-নিপুণতা, অনুশীলন ও গবেষণার পরিচয় আমরা সৰ্ব্বত্র পাইয়াছি। অথচ বিচারে গ্রন্থকার কোথাও সংযম হারান নাই—বেশ সশ্রদ্ধ গম্ভীরভাবেই মতাদির আলোচনা করিয়াছেন, ইহা বিচারকের পক্ষে খুবই সঙ্গত ও যোগ্য হইয়াছে । দুই-একখানি গ্রন্থ পড়িয়াই তিনি স্বমত খাড়া করেন নাই, সমস্ত সংহিতা গ্রন্থাদিরই পরিপূর্ণভাবে আলোচনা করিয়াছেন। কেমন করিয়া বাল্যবিবাহ হিন্দুসমাজে প্রচলিত হইল, তাহাও তিনি নির্ণয় করিয়াছেন। গ্রন্থের পুর্বদ্ধ ভাগ পাঠ করিয়া যৌনবিবাহের অনুকূল বচনগুলির আলোচনায় তিনি স্পষ্টই বুঝাইয়াছেন আর্ঘ্যের বাল্যবিবাহের সম্পূর্ণ বিরোধীই ছিলেন। শাস্ত্রাদি গ্রস্থে এমন একটি বচন পাওয়া যায় না, যদ্বার উনচতুৰ্ব্বিংশবর্ষীয় বয়স্ক পুবষের বিবাহের সমর্থন করা যায়। অথচ হিন্দুসমাজে ২৪ বৎসরের মধ্যেই বিবাহিত পুরুষের সংখ্যা সওয়া তিন কোটিরও অধিক । এই সওয়া তিনকোটি যুবক অকাল ভোগ-সুখের দুর্ভর বন্ধনে জড়িত ও শৃঙ্খলিত হওয়ায় তাহদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারময়—বিবাহের আমুসঙ্গিক দুর্ভর ভরে উত্তরোত্তর জড়িত হওয়ায় তাহদের মাথা তুলিয়া দঁাড়াইবার আশাও যে দূর-পরাহত, ইহা কি যথেষ্ট ভাবনার কথা নহে ? কন্যা সম্বন্ধেও শাস্ত্র স্পষ্টই বলিয়াছে, প্রাপ্তবয়স্ক কস্তাই বিবাহযোগ্য—বিবাহের মন্ত্রাদিও ইহাঁর সমর্থক। প্রাচীন সাহিত্যও এই মতের সমর্থন করে। ভারতের তাদর্শ নারী সাবিত্ৰী, গৌরী প্রভূতির প্রাপ্ত বয়সেই বিবাহ হইয়াছিল। বৈদিক বিধিই সৰ্ব্বত্র অনুসরণীয় । বেদে বাল্যবিবাহ-সমর্থক কোনও বিধির স্পষ্টত; উল্লেখ নাই, পরন্তু বৈদিক মন্ত্রাদিতে দৃষ্ট-বুজষ্কার বিবাহের প্রভূত নিদর্শন পাওয়া যায়। সুতরাং আমরা যেরূপ কঠিন জীবন-সমস্তার মধ্যে পড়িয়াছি, তাহতে এ বিষয়ে আমাদিগের-বিশেষরূপে অবহিত হওয়া প্রয়োজন, নহিলে অন্ধ আচারের গণ্ডীর মধ্যে পড়িয়া আমরা যে, অচিরে উৎসন্ন যাইব, সে