পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা যে প্রকাও জাহাজ খান ভেঙ্গে গ্যাছে আপনার বোধ হয় তার কোন খবরই শোনেন নি ?” অনাগ্রহ ভাবে যোদ্ধা পুরুষ উত্তর দিলেন “কিছুনা।” যুদ্ধ যাহাদের ব্যবসায়, বিপদ এবং মৃত্যু যাহাদের জন্ত প্রতি মুহূর্তে প্রস্তুত এ সব ছোট খাট সংবাদে র্তাহীদের চিত্তকে সহজে টলাইতে পারে না ! আমি পুনশ্চ কহিলাম “ঝড়ের শব্দে আপনার বোধ হয় জাহাজের সিগনালের জন্তে যে কামান ছোড়া হয়েছিল তার শব্দ শুনতে পান নি। ঝড়ের রাত্রে একখানা প্রকাণ্ড জাহাজ আমাদের উপসাগরে এসে চোরা পাহাড়ে ধ্বংস হয়ে গ্যাছে। ইণ্ডিয়া থেকে জাহাজখানা আসছিল”— "ইণ্ডিয়া থেকে !” একটা আশ্চৰ্য্য রকম চীৎকারের সঙ্গে জেনারল এইরূপ প্রতিধ্বনি করলেন । ' “ই—সৌভাগ্য ক্রমে তার যাত্রীগুলি সবই বেঁচে গ্যাছে । আর কাল সন্ধ্যার গাড়ীতে র্তাদের গ্লাসগোয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েচে ।” মৃতের ন্তায় বিবর্ণ মুখে সংশয়পূর্ণ স্বরে তিনি প্রশ্ন করিলেন “সবাইকে ? তাদের সবাইকে ওঠান হয়ে গ্যাছে ?” র্তাহার কণ্ঠে যে হতাশার স্বর ধ্বনিত হইল সে স্বর শুনিয়া আমার বক্তব্য বিষয় জানাইতে আমি যেন কেমন কুষ্ঠিত হইয়া পড়িলাম। কিন্তু এখন আর কথা ফেরান চলে না, যেন অপরাধীর মত সঙ্কুচিত বিস্ময়ের সহিতই আমি কহিলাম, কেবল তিন জন তিববতীয় বৌদ্ধ সন্ন্যাসী-ৰ্তারাই কেবল কিছু দিন এখানকার নির্জনতা ভোগ করবার জন্তে সৌধ-রহস্ত ১২১৫ রয়ে গেলেন ?” আমি বিশ্বয়ের সহিত দেখিলাম ঝটিকাহত বৃক্ষের মত জেনােরলের সুদীর্ঘ দেহ কম্পিত হইতেছে, হঠাৎ আবেগতাড়িত কণ্ঠে যেন তাহার অন্তঃস্থল ভেদ করিয়া আৰ্ত্তনাদের মত ধ্বনিত হইল “ও ঈশ্বর তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক— তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ গেক । পরক্ষণেই আকাশের দিকে দুই হাত উত্তোলিত করিয়া তেজামু হইয় প্রার্থনার ভঙ্গিতে বসিয়া পড়িলেন । বেড়ার ছিদ্র দিয়া দেখিতে পাইলাম করপোরলের কুৎসিৎ মুখখানার সমস্ত রক্তটা যেন মাথায় উঠিয়া গিয়া তাহাকে একেবারে হলদে করিয়া দিয়াছে। হেমন্ত কালের ঠাণ্ডাতেও তাহার ললাটে ঘাম ঝরিতেছিল তবুও সে সোজা হইয়া দঁাড়াইয়াছিল, জেনােরলের মত অভিভূত হইয়া পড়ে নষ্ট । হাতে হাতে ঘসিয়া অত্যন্ত সকরুণ বিলাপোক্তির মত করপোরল বলিতেছিল—“আমার কপাল ! সবই আমার কপাল! এতকালের কষ্টের পর যাই একটু আরামের জায়গা ও পেট ভরে খাবার পেয়েচি—অমনি— !” কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ়ের স্তায় বাহিরে দাড়াইয়৷ আমি এই আকস্মিক ব্যাপারের মৰ্ম্ম অনুভব করিবার চেষ্টা করিতেছিলাম। ধীরে ধীরে জেনারল উঠিয় দাড়াইলেন । গভীর নিশ্বাসটা সজোরে চাপিয়া ফেলিয়া একটু থামিয়া বলিলেন “ভয় পেওন বৎস, যাই হোক, বা আসে আমুক আমরা সাহসী সৈনিক, সৈনিকের মতই বিপদের সম্নে দাড়াব। তোমার কি চিলেনওয়ালার কথা মনে পড়ে ৪যখন তোমাকে কামান ছেড়ে আমাদের ব্যুহের মধ্যে