পাতা:ভারতী ১২৮৪.djvu/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| ভারতী পে। ১২৮) বঙ্গসাহিত্যT । 娜 অগ্রাহ করিতে পারি। রাজ্যদেশও বিপ্লবস্থ হয় নাই—কিন্তু এ সাগর মন্থন করিলে যে, আমরা পরিশ্রমের প্রচুর পুরস্কার লাভ করিব, তাহাতে আর সন্দেহু নাই । কতকগুলি সিদ্ধ সত্যের বাহুল্য আলোচনায় এখন আর আবশ্যক নাই । এ কথা সকলেই জানেন যে, সংস্কতের অপভ্রংশে প্রাকৃত, প্রাকৃতের অপভ্রংশে বাঙ্গালা ভাষা স্বস্ট হয়। এই ভাষার প্রথম-অবস্থায় ইহার সাহিত্যে হিন্দী ও ব্রজবুলি, পর অবস্থায় उ.ि-उ६अष्व দেশজ-শবদ ও বাক্য, এবং পরিশেষে সংস্কৃত ও ইংরাজি ধরণ ধারণের প্রাচুর্ঘ্য দেখিতে পাওয়া যায় ! কিন্তু যে সময় হইতে পাশ্চাত্য-আলোক অসিয়া বঙ্গদেশে বিকীর্ণ হইল, এবং ভাগারথীর বক্ষে টেম্সের তরঙ্গ উঠিতে লাগিল, সে সময়ের কথা আমরা এখন কিছুই তুলিব না । কারণ, একালের সাহিত্যের সঙ্গে পুরাকালের সাহিত্যের এত প্রভেদ,—কেবল শরীরগত নহে মৰ্ম্মগত এত প্রভেদ যে, সমগ্র বঙ্গ-সাহিত্যকে এক মনে সমালোচন করিতে গেলে আমরা ঘর প্রমাদে পতিত হইব ! সুতরাং আমরা বিদ্যাপতি ও চওঁীদাস হইতে আরম্ভ করিয়া মহাত্মা বিদ্যাসাগরের অভু্যদয়ের সময়েই পুরাকালের সাহিত্য-সমালোচনা শেষ করিব। স্বীকার করি যে, এই অভু্যদয়ের পুর্বেও পাশ্চাত্যআলোক আসিয়া মহানগরীর স্থানে স্থানে প্রতিফলিত হইয়াছিল,কিন্তু তাহ এত স্বল্প ও সঙ্কীর্ণ ছিল যে, তাহা আমরা সচ্ছন্দে পুরাকালের সমগ্র বঙ্গ-সাহিত্যের উপর দৃষ্টিনিক্ষেপ করিলে ইহার যে একটি বিশেষত্ব লক্ষিত হয়, তাহ অন্য কোন দেশের সাহিত্যে লক্ষিত হয় না। ধৰ্ম্মামুরাগেই পুরীকালের বঙ্গসাহিত্যের জন্ম, ধৰ্ম্মানুরাগেই তাছা পরিপুষ্ট এবং ধৰ্ম্মামু রাগেই তাহ পরিণত হইয় উঠে। বৈষ্ণবেরা তাহার জন্মদাতা ও প্রতিপালক, এবং শাক্তেরা তাহার চূড়ান্ত উৎকর্ষকারী। বিদ্যাপতি ও চওঁীদাস কৃষ্ণপ্রেমে অঙ্কুরক্ত হইয়া যে মধুর বংশীবাদন আরম্ভ করিয়াছিলেন, তাহ আবার জ্ঞানদাস ও গোবিন্দদাসের কণ্ঠে আসিয়া প্রতিধ্বনিত হইতে লাগিল, ক্রমে সেই স্বরলহরী বঙ্গাকাশে উচ্ছসিত হইয়া উঠিল। একশতাব্দী গত ন হইতে হইতেই সেই কৃষ্ণ-প্রেমামুরাগ নবদ্বীপে উন্মত্ততায় পরিণত হইল এবং চৈতন্য দেবের শিষ্য ও সহচরের সেই উন্মত্তত সৰ্ব্বত্র প্রচার করিবার আশয়ে ভূরি ভুরি গ্রন্থ রচনা করিতে লাগিলেন। বৈষ্ণবের ক্রমে মুমূর্ষ হইয়া পড়িল এবং আপনাদের দলের একটি কবিমাত্র সীহিত্য ক্ষেত্রে রাখিয়া শাক্ত-কবিদের হস্তেই তাহার সমস্ত ভার দিয়া আপনার নিরস্ত হইলেন। সেই দুএকটি বৈষ্ণব-কবির মধ্যে কাশীরামদাসই সৰ্ব্বপ্রধান ; কীৰ্ত্তিবাস ও কবিকঙ্কন, এবং তাহীদের পরবর্তী রামপ্রসাদ ও ভারতচন্দ্র প্রভৃতি শাক্ত-কবিরা সে ক্ষেত্রের যে কতদূর উর্বরতা ও শোভা সম্পাদন করিয়াছিলেন, তাই আর বলিতে পারা যায় না । * છે.