পাতা:ভারতী ১২৮৪.djvu/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতী ক্ষুদ্র কুটারে বাস করিলেন। সম্পদের | হুইয়া বিধবা অত্যন্ত কষ্ট পাইতেছেন। সন্ত্রম রক্ষা করিবার উপায় দূরে থাক জীবন রক্ষারও কোন সম্বল নাই, আদরিণী কন্যাটি কি করিয়৷ দারিদ্র্য-দুঃখ সহ করিবে ? } স্নেহময়ী মাতা ভিক্ষা করিয়াও কমলকে কোন মতে দারিদ্র্যের রৌদ্র ভোগ করিতে দেন নাই । অমরের সহিত কমলের শীঘ্রই বিবাহ হুইবে, বিবাহের আর দুই এক সপ্তাহ অবশিষ্ট আছে, অমর গ্রামের পথে বেড়াইতে বেড়াইতে কমলকে তাহার ভবিষ্যৎ জীবনের কত কি মুখের কাহিনী শুনাইত ; বড় হইলে দুইজনে ঐ শৈল-শিখরে কত খেলা খেলিবে, ঐ সরসীর জলে কত সাতার দিবে, ঐ বকুলের কুঞ্জে কত ফুল তুলিবে, চুপি চুপি গম্ভীর ভাবে তাহারি পরামর্শ করিত। বালিক অমরের মুঙ্গে তাহীদের ভবিষ্যৎ ক্রীড়ার গল্প শুনিয়া আনন্দে উৎফুল্প হইয়া বিহ্বল নেত্রে অমরের মুখের পানে চাহিয়! থাকিত। এইরূপে যখন এই দুইটি বালক বালিকা কম্পনার আস্ফুট জ্যোৎস্নাময় স্বর্গে খেলা করিতেছিল তখন I রাজধানী হইতে সংরাদ আসিল যে রাজ্যের E সীমায় যুদ্ধ বাধিয়াছে। সেনানায়ক অজিতসিংহ যুদ্ধে যাইবেন এবং যুদ্ধশিক্ষা দিবার জন্য র্তাহার পুত্র অমরসিংহকেও সঙ্গে } - সন্ধ্য হইয়ছে, শৈল-শিখরের রক্ষচ্ছ T डिझक्रिी । স্বখময় স্বৰ্গ হইতে দারুণ দারিদ্র্যে নিপতিত ७१.} য়ায় অমর ও কমল দাড়াইয়া আছে। অমর | সিংহ কহিতেছেন “কমল! আমিত চলিলাম, এখন রামায়ণ শুনিবি কার কাছে ?” বালিকা ছল ছল নেত্রে মুখের পানে চাহিয়া রহিল। 1 “দেখৃ কমল, এই অস্তমান সূৰ্য্য আবার } কাল উঠিবে কিন্তু তোর কুটার দ্বারে } আমি আর আঘাত দিতে যাইব না, তবে বল দেখি আর কাহার সহিত খেলা ! করিবি ?” কমল কিছুই কছিল না, নীরবে { চাহিয়া রহিল। অমর কহিল—”সখি ! { যদি তোর অমর যুদ্ধক্ষেত্রে মরিয়া যায়, তাহা হইলে”—কমল ক্ষুদ্র বাহু দুটিতে । অমরের বক্ষ জড়াইয়া ধরিয়৷ কঁাদিয়া উঠিল, কহিল “আমি যে তোমাকে ভাল বাসি : অমর, তুমি মরিবে কেন ?” অশ্রুসলিলে । বালকের নেত্ৰ ভরিয়া গেল, তাড়াতাড়ি, মুছিয়া ফেলিয়া কহিল “কমল, আয়, অন্ধকার হইয়া আসিতেছে, আজ এই শেষ বার তোকে কুটীরে পৌছাইয়া দিই।” দুইজনে হাত-ধরাধরি করিয়া কুটীরের অভিমুখে চলিল। গ্রামের বালিকার জল তুলিয়া গান গাইতে গাইতে গৃহে ফিরিয়া ! আদিতেছে, বনশ্রেণীর মধ্যে অলক্ষিত | ভাবে একটির পর আর একটি পাপিয়া গাহিয়া গাহিয়া সারা হইতেছে, আকাশময় । তারকা ফুটিয়া উঠিল। অমর কেন জুড়কে পরিত্যাগ করিয়া যাইবে এই অভিমানে ! কমল কুটারে গিয়া মাতার বক্ষে মুখ লুকা । ইয়া কাঁদিতে লাগিল। অমর অশ্রুসলিলে শেষ বিদায় গ্রহণ করিয়া ফিরিয়া আসিল। অমর পিতার সহিত সেই রাত্রেই গ্রাম!