পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SY “ভারত-প্ৰতিভা , । গৃহে একদিন পরমহংসদেবের শুভাগমন হয়। ধৰ্ম্মসঙ্গীত শ্ৰবণে পরমহংসদেব পরম গ্ৰীতিলাভ করিতেন। তাই নরেন্দ্রনাথকে গান গায়িবার জন্য সুরেন্দ্র বাবু নিমন্ত্ৰণ করিয়া আনেন। নরেন্দ্রনাথের মধুর সঙ্গীতে পরমহংসদেব সমাধিস্থ হন। তার পর নরেন্দ্রনাথের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া তিনি তঁহাকে দক্ষিণেশ্বরে লইয়া যাইবার জন্য শিষ্যবৃন্দকে বলিয়া যান। এফ-এ পরীক্ষার পর নরেন্দ্রনাথকে বিবাহের জন্য তঁহার পিতা পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন। ভাবী শ্বশুর জামাতাকে দশসহস্ৰ মুদ্রা যৌতুকস্বরূপ দিতে প্রতিশ্রুতও ছিলেন। কিন্তু বিবাহে স্মৃহাহীন, আঙ্গুল্মসন্ন্যাসী নরেন্দ্রনাথ দার-পরিগ্রহে ঘোরতর আপত্তি জানাইলেন । পুত্রের স্বাধীন ইচ্ছার বিরুদ্ধে পিতাও কোন কাজ করিতে সন্মত ছিলেন না। দূর-সম্পৰ্কীয় আত্মীয় ডাক্তার রামচন্দ্ৰ মহাশয়ের নিকট নরেন্দ্ৰ নিজের মনোগত অভিপ্ৰায় ব্যক্তি করেন। রামচন্দ্র পরমহংসদেবের অন্যতম শিষ্য। তিনি নরেন্দ্রনাথকে দক্ষিণেশ্বরে যাইবার উপদেশ দিলেন। তদনুসারে তিনি কয়েকজন বন্ধু সমভিব্যাঙ্কারে শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণদেবের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। নরেন্দ্রনাথকে দেখিবুমাত্র পরমহংসদেব চিরপরিচিতের ন্যায় তাহার সহিত আলাপ করিতে লাগিলেন। একান্তে ডাকিয়া লইয়া তিনি এমনই ভাবে কথা বলিতে লাগিলেন যে, তিনি যেন দীর্ঘকাল নরেন্দ্রের প্রতীক্ষায় কালব্যাপন করিতেছেন। তঁহার আনন্দাশ্রুপূর্ণ দৃষ্টি, সরল প্রাণের অভিব্যক্তি এবং ভগবদ্যুক্তি দর্শনে নরেন্দ্রনাথ চমৎকৃত ও অভিভূত হইলেন। কিন্তু তঁহার অসাধারণ সরলতা দর্শনে যুক্তিবাদী নরেন্দ্রনাথের মনে একটা সংশয়ের উদ্রেক হইল। তঁহার হাবভাব, চালচলন, কথাবাৰ্ত্তায় বিন্দুমাত্র প্ৰলাপের চিহ্ন নাই, অথচ তাহার সহিত নির্জনে যে ব্যবহার করিলেন, তাহাত তখনকার নরেন্দ্রনাথের নিকট ঠিক স্বাভাবিক, বলিয়া অনুমিত