80 ভারত-প্ৰতিভা কালে “এই যুবক ধৰ্ম্মপিপাসু নরনারীর আধ্যাত্মিক ক্ষুধা নিবারণ করিতে পরিবে । পাশ্চাত্য-সভ্যতা-বিমুগ্ধ, পথভ্রষ্ট দেশবাসীকে স্বদেশে স্বধৰ্ম্মে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করিতে সমর্থ হইবে। জগন্মাতার বিশেষ কাৰ্য্যসিদ্ধির জন্য নরেন্দ্রনাথ পৃথিবীতে আবিভূতি হইয়াছেন—এইরূপ ভাবের । কথা ঠাকুরের মুখে পুনঃ পুনঃ শ্ৰবণ করিয়াও নরেন্দ্রনাথ নিজে তাহা বিশ্বাস করিতেন না। একদিন ভাবসমাধি-লাভের পর ঠাকুর যখন বলিলেন, “কেশব যে শক্তিবলে প্ৰতিষ্ঠালাভ করেছে, ঐরূপ আঠারোটা শক্তি নরোন্দ্রের মধ্যে আছে,” তখন নরেন্দ্ৰনাথ ঠাকুরের ক্লথায় প্ৰতিবাদ করিয়া বলিলেন, “আপনি কি বলছেন, কোথায় বিশ্ববিখ্যাত কেশবচন্দ্র, আর কোথায় স্কুলের নগণ্য একটা ছোড়া-লোকে শুনলে আপনাকে পাগল বলবে যে ” পরমহংসদেব সে কথার উত্তরে হাসিয়া বলিয়াছিলেন, “তা কি কবুবে বল, মা যে দেখিয়ে দিলেন।” ঠাকুরের এই সকল অদ্ভুত-দর্শন প্রভৃতি সম্বন্ধে তখনও নরেন্দ্রনাথের বিশেষ শ্রদ্ধা জন্মে নাই। পাশ্চাত্য দার্শনিকগণের স্বাধীন চিন্তা-প্রসূত মতের সহিত পরিচয় লাভ করার ফলে তিনি পরমহংসদেবের অনন্তসাধারণ দর্শন প্রভৃতিকে মস্তিষ্কবিকার ও খেয়াল বলিয়া ভাবিতেন। ঐ সম্বন্ধে তিনি অন্যান্য ভক্তবৃন্দের সহিত ঘোরতর তর্ক করিতেন । তর্কে * কেহই নরেন্দ্রনাথকে আঁটিয়া উঠিতে পারিতেন না। এদিকে হিন্দু সমাজের বিশৃঙ্খলা ও অবনতি দর্শনে তাহার সংস্কার সাধন আবশ্যক বিবেচনা করিয়া নরেন্দ্রনাথ ব্ৰাহ্মসমাজের সভ্যরূপে সমবায়ুস্কাদিগের নিকট অগ্নিময়ী ‘বাণীর সাহায্যে সেই সংস্কার সম্বন্ধে বক্তৃতা করিতেন। দীর্ঘকালের সঞ্চিত আবর্জনা হিন্দুসমাজের বিরাট প্রাঙ্গণতলে পুঞ্জীভূত হইয়া আছে দেখিয়া, স্বদেশপ্রেমিক নরেন্দ্রনাথের