পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ। ' * S అని ধৰ্ম্মাচাৰ্য্যকে ঐ রূপ প্রশ্ন করিয়া কোনও সদুত্তর পান নাই। নরেন্দ্রনাথ পরমহংসদেবকে প্রশ্ন করিলেন, “আপনি কি ঈশ্বরের দর্শন পাইয়াছেন ?” অপূৰ্ব্বহস্যে মহাপুরুষের প্রশান্ত মুখমণ্ডল অনুরঞ্জিত হইয়া উঠিল। ঠাকুর অসঙ্কোচে বলিলেন, “হঁ বৎস, আমি ঈশ্বরকে দেখিয়াছি। তোমাকে যেমন দেখিতেছি, ইহা অপেক্ষাও স্পষ্টতরভাবে তেঁহাকে দর্শন করিয়াছি।” বিস্মিত, বিমুগ্ধ নরেন্দ্রনাথকে নিরক্ষর ব্রাহ্মণ বলিলেন, “তুমি দেখিতে চাও যদি, তোমাকেও দেখাইতে পারি, তবে আমি যেমন যেমন বলিব, সেইরূপ কাজ করিতে হইবে।” অতঃপর একদিন নরেন্দ্ৰনাথের সহিত নির্জনে আলাপ করিতে করিতে পরমহংসদেব দক্ষিণপদ দ্বারা তাহার স্কন্ধাদেশ স্পর্শ করেন । স্পর্শমাত্রেই নরেন্দ্রনাথ অনুভব করিলেন যে, নিখিল বিশ্বের সমুদয় পদার্থই ঘুরিতে ঘুরিতে মহাশূন্যে বিলীন হইয়া যাইতেছে, তাহার “আমিত্ব যেন বিলুপ্ত হইতে চলিল। নরেন্দ্রনাথ আতঙ্কে অভিভূত হইয়া আৰ্ত্তনাদ করিয়া বলিলেন, “ওগো, আমায় এ কি কবৃলে, আমার বাপ-মা যে আছেন।” তখন ঠাকুর মৃদুহাস্যে তঁহার বক্ষস্পর্শ করিতেই নরেন্দ্রনাথ প্রকৃতিস্থ হন। এই ব্যাপারে নরেন্দ্রের মনে প্রথমতঃ সন্দেহ জন্মিয়ছিল যে, হয় ত উহা সম্মোহন-বিদ্যার ফলমাত্র। আর একদিন ঠাকুর নরেন্দ্রনাথকে স্পর্শ মাত্রেই অভিভূত করিয়া ফেলিয়াছিলেন। এবার নরেন্দ্রনাথ বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করিয়াছিলেন; কিন্তু তথাপি * কোনমতেই তিনি পরমহংসদেবের স্পর্শের প্রভাব অতিক্ৰম করিতে পারেন নাই। তবে প্ৰথমবারের মত এ যাত্রা তিনি আতঙ্কে অভিভূত হন নাই; শুধু সংজ্ঞাশ্বন্ত হইয়াছিলেন। এই অবস্থায় প্রশ্নাদির দ্বারা নরেন্দ্রনাথের অতীত ও ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে । পরমহংসদেব সমস্ত বিষয় অবগত হইয়াছিলেন ।