পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ। ', :“ هه د “তুই নিজে যা, মার কাছে যা চাইবি, তাই পাবি।” তখন নরেন্দ্রনাথ মাতার মন্দিরে প্রবেশ করিলেন। r তিনি দেখিলেন, র্যাহাকে পাষাণময়ী বলিয়া এতদিন তাহার জ্ঞান ছিল, আজ যেন চৈতন্যরূপিণী, জীয়ন্ত দেবী ; অনন্ত সৌন্দৰ্য্যময়ী করুণাময়ী বিশ্বজননীর মধুৱহাস্যে ঘর যেন আনন্দে, আলোকে ভরিয়া উঠিয়াছে। ভক্তির সমূদ্র নরেন্দ্রনাথের হৃদয়ে আলোড়িত হইয়া উঠিল । বরাভয়দাত্রী, স্নেহময়ী জগজ্জননীর সম্মুখে লুটাইয়া পড়িয়া নরেন্দ্ৰনাথ বিবেক, জ্ঞান, বৈরাগ্য ও ভক্তি প্রার্থনা করিলেন। অর্থ, মান ও প্ৰতিপত্তির কথা তখন তঁহার মনে উদিতও হইল না । মাতৃদর্শন করিয়া নরেন্দ্ৰনাথ পরমহংসদেবের নিকট ফিরিয়া আসিলে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “কিরে, মার কাছে বলেছিস ত?” নরেন্দ্রনাথের চমক ভাঙ্গিল, তিনি স্বীকার করিলেন যে, দারিদ্র্য-দুঃখ অবসানের জন্য ধনরত্বের কথা তিনি । মার কাছে বলিতে পারেন নাই। পরমহংসদেব আবার তঁহাকে কালীমাতার মন্দিরে পাঠাইয়া দিলেন , কিন্তু প্রার্থনাকালে নরেন্দ্রনাথের ঐহিক কোনও বিষয়েরই কথা মনে পড়িল না। এইরূপে তিনবার তিনি পরমহংসদেবের দ্বারা "ভবতারিণীর মন্দিরে প্রেরিত হইলেন, কিন্তু একবারও সুখৈশ্বৰ্য্যের কথা তিনি মাতৃচরণে নিবেদন করিতে পারিলেন না। তখন ঠাকুর বলিলেন, “তুই যখন চাইতেই পাবুলি না, তখন তোর অদৃষ্ট সংসারের সুখ নেই, তবে মোটা ভাত-কাপড়ের কোন দিন তোদের অভাব হবে না৷ ” নরেন্দ্ৰ- , নাথ আশ্বস্ত হইলেন। এই সময় হইতে তিনি ব্রাহ্মসমাজের সহিত একপ্রকার সমুদয় সংস্রব ত্যাগ করেন। অধ্যয়ন পূর্ববৎ চলিতে লাগিল বটে, কিন্তু সংসারের দিকে তঁাহার আকর্ষণ হ্রাস পাইল। পিতায় জীবদ্দশায় তিনি।