७झिङ-2जि5उ5ा ܬܳܐ 9 9 শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণের চরণাশ্রয় করিয়াছিলেন, এখন হইতে সম্পূর্ণভাবে তাহার চরণে আত্মনিবেদন করিলেন। মাতা ভুবনেশ্বরী পূর্ব হইতেই পুত্রের সংসারবৈরাগ্য লক্ষ্য করিয়া আসিতেছিলেন, ক্রমে তাহার ধারণা জন্মিল যে, হয় ত পুত্ৰ একেবারেই সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী হইয়া যাইবে । এ সম্বন্ধে জননী। কোনরূপ প্রশ্ন করিলে নরেন্দ্রনাথ সে প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতেন না বটে, তবে মাতাকে তিনি দুঃখের কবলে নিক্ষেপ করিয়া শীঘ্ৰ কোথাও যাইবেন না, ইহা তাহার ব্যবহারে বেশ বুঝা যাইত। জননী তঁহাকে বিবাহের জন্য অনুরোধ করিলে নরেন্দ্রনাথ তাহার সে অনুরোধ রক্ষা করেন নাই। পিতার মৃত্যুর পর তিন বৎসর তিনি গৃহে বাস করিয়াছিলেন, তার পর তিনি ধীরে ধীরে সংসারের মোহপাশ হইতে আপনাকে বিচ্ছিন্ন করিয়া দক্ষিণেশ্বরে গিয়া কালব্যাপন করিতে লাগিলেন। পরমহংসদেবের গলায় ক্ষতরোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাশীপুরের বাগানে তাহাকে আনয়ন করা হইয়াছিল। নরেন্দ্রনাথ তখন হইতে বাড়ী ছাড়িয়া গুরুদেবের শুশ্রুষায় নিযুক্ত হইলেন। সংসার ত্যাগ করিলেও নরেন্দ্রনাথ একেবারে বাটীর সহিত সকল সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করিলেন না । মাঝে মাঝে তিনি গৃহে যাইতেন। জননীর পদধূলি-রঞ্জিত গৃহ-প্রাঙ্গণটি তঁহার নিকট পবিত্র তীর্থক্ষেত্ৰ বলিয়া অনুভূত হইত। মাকে তিনি প্ৰাণ ভরিয়া ভালবাসিতেন, ভক্তি করিতেন, শ্রদ্ধা করিতেন। প্রথম হইতেই নরেন্দ্রনাথ দার্শনিক ছিলেন ; ভক্তির দিক দিয়া ঈশ্বরকে বুঝিবার চেষ্টা করিতেন না। পরমহংসদেবের সংস্রবে। আসিয়া ক্ৰমে তিনি ভক্ত হইয়া পড়িলেন। ক্ৰমে ধীরে ধীরে জ্ঞােনরাজ্যের দ্বার মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বুঝিলেন, অদ্বৈততত্ত্বই পরম ও চরম সত্য। পরমহংসদেবকেই বেদান্তাদি শাস্ত্রের জীবন্ত ভাষ্যস্বরূপ তেঁাহার দৃঢ়প্ৰতীন্তি জন্মিল।