পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ। 3) কাশীপুরের উদ্যানে পরমহংসদেব সন্নিধানে অনবরত অবস্থানকালে এই জ্ঞান তঁহার মধ্যে পরিণতি লাভ করে। ক্রমে এমন হইয়াছিল, খোলকরতাল লইয়া তিনি সঙ্কীৰ্ত্তনে যোগ দিতেন এবং হাত ধরাধরি করিয়া । মৃত্য করিতেন। এই সময়ে সত্যলাভের জন্য তঁহার চিত্ত অধীর হইয়া। উঠিয়াছিল, অন্তরে তীব্র বৈরাগ্যের সঞ্চার হইয়াছিল। রজনীযোগে দক্ষিণেশ্বরের পঞ্চবটী-বনে বসিয়া ধূনি জালাইয়া তিনি সাধনা করিতে লাগিলেন। ঠাকুর নরেন্দ্রনাথের অবস্থা এবং সাধনানুরাগ দর্শনে আনন্দিত হইয়া একদিন তঁহাকে স্বোেপাজ্জিত অষ্টেশ্বৰ্য্যলাভের ফলদানে উদ্যত হইলেন ; বলিলেন, “সাধনকালে আমি পেয়েছিলুম, কোন দিন তা কাজে লাগে নি। তুই নে, তোর অনেক কাজে লাগতে পারে।” নরেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন, “ওতে ভগবানকে লাভ কবুবার কোন সুবিধে হবে কি ?” ঠাকুর যখন বুঝাইয়া দিলেন যে, “তাহার কোন সম্ভাবনা নাই ; তবে ইহার সাহায্যে ঐহিকের কোন বাসনাই অপূর্ণ থাকিবে না।” তখন ত্যাগধৰ্ম্মের অবতার নরেন্দ্ৰনাথ উহা ত্যাগ করিলেন । কাশীপুরের বাগানে অবস্থানকালে একদা নরেন্দ্রনাথ কাহাকেও কিছু না বলিয়া দুইজন গুরুভ্রাতা সহ বুদ্ধগয়ায় চলিয়া যান। পরদিবস তঁহাকে না দেখিয়া সকলেই চিন্তিত হইলেন , কিন্তু ঠাকুর রামকৃষ্ণ মধুর হাস্যে সকলকে উৎকণ্ঠিত হইতে নিষেধ করিলেন ; বলিলেন, “সে ফিরে এলো ব’লে, তার জন্যে কেউ চিন্তা করে না । এ জায়গা ছেড়ে তার থাকবার যে নাই।” । বুদ্ধগয়ায় গিয়া যেখানে বােধিসত্ব সমাধিস্থ হইয়া নির্বাণু লাভ করিয়াছিলেন, সেই বােধিক্ৰমমূলে বসিয়া নরেন্দ্রনাথ ধ্যানস্থ হন। ক্রমাগত তিন দিন কঠোর তপস্যায় যাপন করিয়া তিনি কাশীপুরে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন ।