পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R ভারত-প্রতিভা বুদ্ধগয়া হইতে ফিরিয়া আসিয়া তিনি বুঝিতে পারিলেন যে, যে ধৰ্ম্ম পিপাসা লইয়া তিনি অধীরভাবে ইতস্ততঃ ছুটাছুটি করিয়া বেড়াইতেছেন, সে পিপাসা নিবারণের সুশীতল বারি পরমহংসদেবের কৃপা ভিন্ন লাভের সম্ভাবনা নাই। তখন হইতে তিনি একান্তমনে গুরুদেবের শরণাপন্ন হইলেন। পরমহংসদেবও তাহাকে বিভিন্ন প্ৰকার সাধনা ও আধ্যাত্মিক অবস্থার মধ্য দিয়া ধৰ্ম্মজীবনের চরমাদর্শের অভিমুখে লইয়া যাইতে লাগিলেন। একদিন নরেন্দ্রনাথ অনুভব করিলেন যে, তিনি স্পর্শ মাত্রেই অন্যের ভােবরাজ্যের আমূল পরিবর্তন করিতে পারেন। পরীক্ষাচ্ছলে তিনি জনৈক গুরুভ্রাতাকে স্পর্শ করিতেই ধানমগ্ন সেই গুরুভ্রাতার মনোরাজ্যে পরিবর্তন ঘটিয়া গেল। পরমহংসদেব এই ব্যাপার জানিতে পারিয়া নরেন্দ্রনাথকে ঐ রূপ শক্তি প্রয়োগ করিতে নিষেধ করেন। পরে কি উপায়ে ঐ শক্তি প্ৰয়োগ করিতে হয়, তাহাও তেঁহাকে শিখাইয়া দেন । একদিন পরমহংসদেব কথাপ্রসঙ্গে নরেন্দ্রনাথকে বলেন, “কেউ কেউ আমায় ঈশ্বর বলে।” নরেন্দ্ৰ উত্তরে বলেন, “হাজার লোকে ঈশ্বর বুলিলেও আমার যতক্ষণ সত্য বলিয়া বোধ না হইবে, ততক্ষণ আমি কিছুই বলিব না।” কাশীপুবের বাগানে অবস্থানকালে নরেন্দ্রনাথ পুনঃ পুনঃ নিৰ্বিকল্প সমাধ্যলাভের ইচ্ছা প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। পরমহংসদেব তঁহাকে রলেন, “ছি ছি, তুই এত বড় আধার, তোর মুখে এই কথা ? বিশাল বটগাছের মত তুই লক্ষ লক্ষ জীবকে ছায়া দান কবি, না। শুধু তুই নিজের মুক্তি চাস?” ঠাকুরের ইঙ্গিত নরেন্দ্রের মৰ্ম্মস্থল স্পর্শ করিয়াছিল। একদিন তিনি । নিৰ্বিকল্প সমাধিও লাভ করিয়াছিলেন। সমাধি হইতে উত্থিত হইয়া তিনি