পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ । Sèd ক্ৰমে ক্ৰমে সকলে মহা পণ্ডিত হইয়া উঠিলেন। অনেক সময় সমস্ত রজনী ধ্যানেই অভিবাহিত হইত। ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৮৯২ খৃষ্টাব্দ পৰ্য্যন্ত মঠ বরাহনগরে ছিল। , এই মঠের ভাড়া ৬/সুরেন্দ্রনাথ মিত্ৰ দিতেন। তিনিই এই মঠের প্রাণস্বরূপ ছিলেন। মঠের ভ্রাতাদিগের অভাব তিনি সাধ্যানুসারে পূরণ করিতেন। বরাহনগর-মঠে অবস্থানকালে নবীন সন্ন্যাসীদিগের কষ্টেরও অবধি ছিল না । কোনও দিন ভাত জোটে ত লবণ নাই; কোন কোন দিন অনাহারেই কাটিত ; বাসনামাজা, জলতোলা, মাঝে মাঝে রন্ধনাদি পৰ্য্যন্ত নিজেদেরই করিতে হইত। কিন্তু এ সকল কষ্ট নবীন সন্ন্যাসীদিগের অতুল আনন্দকে বিন্দুমাত্র ক্ষুন্ন করিতে পারিত না । কৌপীনধারণ করিয়া সকলে কঠোর তপস্যায় রত থাকিতেন । প্ৰথমতঃ মঠের সন্ন্যাসীরা প্রচার-কাৰ্য্যের বিরোধী ছিলেন। অপরকে শিক্ষা দিবার পূর্বে নিজে উপযুক্ত হওয়া আবশ্যক, গুরুভ্রাতাদিগকে নরেন্দ্ৰনাথ এইরূপ শিক্ষা দিয়াছিলেন। সাধন ব্যতীত মঠে প্রত্যহ মন্ত্রপাঠের সহিত ধূপ-দীপ জ্বালাইয়া, শঙ্খ ঘণ্টার মধুর ধ্বনি সহকারে ঠাকুরের পূজা হইত। শত অভাব ও অনাটনের মধ্যেও ঠাকুরের নিত্যভোগের ব্যবস্থাও ছিল। নরেন্দ্রনাথই মঠে এইরূপ পূজা-পদ্ধতির প্ৰবৰ্ত্তন করেন । সন্ন্যাসীদিগের সকলেই তীৰ্থপৰ্যটনের জন্য বাগ্র হইয়া উঠিয়াছিলেন, নরেন্দ্রনাথের মনেও তীর্থভ্ৰমণস্পাহা বলবতী হইয়া উঠে; কিন্তু সকলের হৃদয়ে এই ইচ্ছা সংক্রামিত হইলে মঠটি ভাঙ্গিয়া যাইতে পারে, এই আশঙ্কা করিয়া নরেন্দ্ৰ মনের অভিপ্ৰায় প্ৰকাশ করিতেন না এবং কেহ ঐৰূপ অভিপ্ৰায় জানাইলে তাহাকে বুঝাইয়া নিরস্ত করিতেন; কিন্তু ক্রমেই তঁহার ভ্রমণ-পূহ দুৰ্দমনীয় হইয়া উঠিতে লাগিল। ১৮৮৭