পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ। ר צל কাশীধামে স্বৰ্গীয় ভূদেব মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের সহিত স্বামীজীর পরিচয় হয়। ত্রিকালজ্ঞ ত্রৈলঙ্গ স্বামীর দর্শন লাভও তিনি এইখানে পাইয়াছিলেন। ভাস্করানন্দ স্বামীর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া স্বামীজী তঁহার সহিত কাম-কাঞ্চন-ত্যাগ-সম্বন্ধে আলোচনা করেন। ভাস্করানন্দ স্বামী তাহাকে বলেন, কোনও ব্যক্তি সম্পূর্ণভাবে কাম-কাঞ্চন ত্যাগ করিতে পারে কি না, সন্দেহ । স্বামীজী তাহাতে বলেন, এমন মহাপুরুষকেও তিনি প্ৰত্যক্ষ করিয়াছেন। ভাস্করানন্দ তাহাতে বিশ্বাস করেন নাই ; তঁহাকে বালক বলিয়া উপেক্ষা করিয়াছিলেন। এই বিষয় লইয়া স্বামী বিবেকানন্দ তাহার সহিত ঘোরতর তর্ক করেন । বিবেকানন্দ তঁহার নিকট আত্মপরিচয় গোপন করিয়াছিলেন । উত্তরকালে বিশ্ববিখ্যাত বিবেকানন্দের সহিত সাক্ষাতের জন্য ভাস্করানন্দ আগ্রহ প্রকাশ করেন বটে, কিন্তু তিনি জানিতেন না, এক দিন যাহার সহিত ঘোরতর বাগযুদ্ধ হইয়াছিল, তিনিই বিবেকানন্দ স্বামী। নানাকারণ বশতঃ স্বামীজী তাহার সহিত আর দেখা করিবার অবসর পান নাই। : কাশীধাম হইতে ভিক্ষা করিতে করিতে স্বামীজী অযোধ্যার মধ্য দিয়া আগ্ৰায় গমন করেন। তথা হইতে বৃন্দাবনে উপস্থিত হন। বৃন্দাবনের নিকটে আসিয়া তিনি দেখিলেন, এক ব্যক্তি ধূমপান করিতেছে। স্বামীজীর ধূমপানেচ্ছা তখন অত্যন্ত বলবতী হইয়াছিল। কলিকাটি চাহিলে, সে যখন বুঝাইয়া দিল যে, সে মেথর, তখন স্বামীজী নৈরাশ্যভরে চলিয়া গেলেন ; কিন্তু সহসা তঁহার মনে হইল, আত্মার অভেদ তিনি আজীবন বিশ্বাস করিয়া আসিয়াছেন, এখন জাতিভেদের সংস্কার মনে আসিল কেন ? তখনই তিনি প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করিয়া সেই মেথরের দ্বারা তামাক সাজাইয়া ধূমপান করিলেন। ।