পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

dab" ভারত-প্ৰতিভা বিধবার বিবাহ হইবার কথা ছিল। পাত্র ও পাত্রী তখন বীরসিংহ গ্রামে উপস্থিত। পাত্ৰটি যে পরিবারের ভিক্ষাপুত্ৰ, তাহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়কে ধরিয়া বসিলেন, “এ বিবাহ ঘটলে সর্বনাশ হইবে, অতএব রক্ষা করুন, অভয় দিন।” বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাদিগকে আশ্বস্ত করিয়া বিদায় দেন ; কিন্তু এদিকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মধ্যম ভ্ৰাতা ও আরও কয়েকজন মিলিয়া রজনীযোগে বিবাহ কাৰ্য্য সম্পাদন করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় এ ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানিতে পারেন নাই। পরদিন প্ৰভাতে ধূমপানকালে অকস্মাৎ শঙ্খধ্বনি শুনিয়া তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করেন। পরে প্রকৃত ব্যাপার অবগত হইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় জন্মের মত বীরসিংহ গ্রাম পরিত্যাগ করেন । সত্যরক্ষায় অসমর্থ হইয়া তেজস্বী ব্ৰাহ্মণ বিদ্যাসাগর নিজের গ্রাম পৰ্য্যন্ত পরিত্যাগ করিলেন । ১২৭৭ সালে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুত্ৰ নারায়ণচন্দ্ৰ বিধবা বিবাহ করেন। এ বিবাহে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পত্নীর সম্পূর্ণ অমত ছিল মনে করিয়াই বিদ্যাসাগর মহাশয় বিবাহ কালে তঁহাকে সংবাদ দেন নাই। ত্ৰয়োদশবর্ষীয়া বালিকার সহিত নারায়ণ বাবুর পরিণয় ক্রিয়া সমাধা হয়। ፥ ፑ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জননী কাশীতেই পরলোক যাত্রা করেন। জননীর বিয়োগে ঈশ্বরচন্দ্ৰ এক বৎসর হবিষ্যান্নাহারী ছিলেন। এ সময়ে তাহার আদর্শ-জীবনে যে ঘুৎসামান্য ভোগ-বিলাস ছিল, তাহাও সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় পিতা ও মাতার তৈলচিত্র অঙ্কিত করিয়া রাখিয়াছিলেন। প্রত্যহ ভক্তিভরে চিত্রদ্ধয় কিছুক্ষণ করিয়া দর্শন করিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় কাশীধামে পিতৃদর্শনে গমন করিলে স্বহস্তে পিতার জন্য অন্ন ব্যঞ্জনাদি রন্ধন করিয়া দিতেন ।