পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাজি মহম্মদ মহসীন । & নাই। বরং বিপদে পড়িবার পর হইতে ভগবানের প্রতি বিশ্বাস আরও বৰ্দ্ধিত হইয়াছিল। Eካ মহসীন আরব ও পারস্যদেশে অবস্থানের পর তত্ৰত্য রীতিনীতি, আচার-ব্যবহারে পারদর্শী হইয়া তুরস্ক ও মিশরদেশ পৰ্যটনে গমন করেন। তুরস্ক ও মিশরের আচার-ব্যবহার, রীতি-নীতি, মনুষ্যচরিত্র প্রভৃতি বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিবার পর মহসীন মহাপণ্ডিত হইয়া ভারতবর্ষে প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করেন । ভারতবর্ষে আসিয়া তিনি দেশ পৰ্য্যটন করিয়া বিভিন্ন নগরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শন ও লোকচরিত্র সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা অর্জন করিবার সুযোগ পরিত্যাগ করিলেন না। হাজি মহম্মদ মহসীনের পাণ্ডিত্যের খ্যাতি তখন সৰ্ব্বত্র প্রচারিত হইয়া পড়িল। র্তাহার তুল্য পণ্ডিত সে সময়ে এদেশে মুসলমান সমাজের মধ্যে অতি অল্পই পরিলক্ষিত হইত। কোরাণের ব্যাখ্যা লইয়া কোনও বিচারের প্রয়োজন হইলে মৌলবীগণ র্তাহার কৃত ব্যাখ্যাই অবিসংবাদী সত্য বলিয়া গ্ৰহণ করিতেন । মহসীনের একটি ভগিনী ছিলেন। তাহার জননীর পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত কন্যা মানুজন অগাধ পিতৃসম্পত্তির অধিকারিণী হইয়াছিলেন। মানুজান কনিষ্ঠ ভ্রাতা মহসীনকে অপরিসীম স্নেহ করিতেন। তিনি পিতার অন্তিম আদেশানুসারে তাহার মাতুলপুত্র সলাউদ্দীনের পাণিগ্রহণ করেন ; কিন্তু বিবাহের অত্যািল্লকাল পরেই মন্ত্র জানকে বৈধব্যবেশ ধারণ করিতে হইয়াছিল। পুনরায় বিবাহে মন্ত্ৰ জানের স্পৃহা ছিল না। তিনি পিতৃপরিত্যক্ত অগাধ বিষয় সম্পত্তির অধিকারিণী হইয়া তাহারই পালন ও সংরক্ষণ করিতে লাগিলেন ; কিন্তু সংসারে স্পাহা না থাকায় মন্নজান সহোদর মহসীনকে দেশে ফিরাইয়া আনিবার জন্য ব্যাকুলা হইয়া উঠিলেন।